মোরেলগঞ্জের সেই উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু বাগেরহাট / 
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি দপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মহিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে কৃষি যন্ত্রাংশ, খুচরা সার ডিলার নিয়োগের কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাপারে বিভিন্ন জাতীয় আঞ্চলিক পত্রিকায় একাধিক রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ায় মাঠে নেমেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, শুরু করেছে দুর্নীতির তদন্ত।
বুধবার সকাল ১০টা কৃষি অফিসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বাগেরহাট জেলা অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. আব্দুস ছামাদ ভূক্তভোগী অভিযোগকারিদের বক্তাব্য লিখিত আকারে গ্রহন করে উপ-সহকারি কর্মকর্তা মহিবুল ইসলামের তদন্তের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে। তিনি এ তদন্তের প্রতিবেদন উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দপ্তরে লিখিত ভাবে পাঠাবেন বলে এ কর্মকর্তা জানান। তবে, তদন্ত চলাকালিন সময়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম অনুপস্থিত ছিলেন।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ২০২১ সালে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা হিসেকে মোরেলগঞ্জে যোগদান করেন। ওই সময় তাকে বহরবুনিয়া ইউনিয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিছুদিন পরেই তিনি কাঠালতলা গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখের নিকট থেকে পাওয়ার টিলার দেওয়ার কথা বলে ১ লাখ ২০ হাজার, বিশারীঘাটা গ্রামের জামাল খানের নিকট থেকে পাওয়ার টিলার দেওয়ার কথা বলে ১ লাখ ৩০ হাজার, বারইখালী গ্রামের সবুজ কুমার ঢালীর নিকট থেকে খুচরা সার ডিলার তালিকায় অন্তভুক্ত করনের কথা বলে ব্যাংক জামানত ৩০ হাজার টাকা, পঞ্চকরণ গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য দেলোয়ার হাওলাদারের নিকট থেকে ৪৪ হাজার গ্রহন করে, মহিষচরনী গ্রামের তিমি সরকারের নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকা ব্যাংক জামানত ব্যাংকে জমা না দিয়ে অন্য নামে দেখিয়েছে জামানতের টাকা তাদেরকে দিয়েছে খুচরা সার বিক্রেতার ভুয়া আইডি কার্ড। এভাবে বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে কৃষি যন্ত্রপাতি ও সার-কীটনাশকের ডিলারশিপ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পকেটে তোলেন।
এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে পানির ট্যাংক দেবার কথা বলে জনপ্রতি ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ থেকে রেহাই পায়নি মসজিদের ইমাম, মসজিদের মোয়াজ্জিন, মুদি দোকানদার এবং সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি এই সকল ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী লোকগুলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও নির্বাহী কর্মকর্তার সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের তদন্ত শুরু হওয়ার পরেই মহিবুল ইসলাম গা ঢাকা দেন।
এদিকে নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী অফিসার এসএম তারেক সুলতান বলেন, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মহিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগটির উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৩ সদস্য তদন্ত টিম করা হয়েছে। ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মহিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে তার নিকট ২ বার কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।