‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটি নির্দ্বিধায় আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট : রণজয় ভট্টাচার্য বিনোদন /  সাক্ষাৎকার / 
ভারতীয় বিখ্যাত গীতিকার ও সুরকার রণজয় ভট্টাচার্য। সম্প্রতি তিনি মুখোমুখি হয়েছেন বাংলাদেশের পাঠকপ্রিয় ও তথ্যসমৃদ্ধ অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘টাইমটাচ নিউজ’ এর সঙ্গে। বাংলাদেশ থেকে তার কথা জানাচ্ছেন ফয়সাল হাবিব সানি।
টাইমটাচ নিউজ: বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও তথ্যসমৃদ্ধ অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘টাইমটাচ নিউজ’ এর পক্ষ থেকে আপনায় স্বাগত ও আপনার প্রতি ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি। কেমন আছেন?
রণজয় ভট্টাচার্য: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, ‘টাইমটাচ নিউজ’ এর সকল পাঠককে এবং আপামর বাংলাদেশবাসীকে। আমার অকৃত্রিম ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আপনারা এভাবেই আমার সাথে থাকুন, আমাকে এভাবেই ভালোবাসতে থাকুন৷ অনেক অনেক ধন্যবাদ।
টাইমটাচ নিউজ: ‘প্রেমে পড়া বরণ’ গানের মতো কালজয়ী গানের রচয়িতা এবং সুরকারও আপনি। আর আপনার ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটি ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পাবার পরপরই তো ভারত ও বাংলাদেশে তুমুল হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল। এমন কালোত্তীর্ণ গান কীভাবে লেখেন এবং সুর করেন?
রণজয় ভট্টাচার্য: ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটি লেখার গল্পটা খুবই মজার এবং অদ্ভুতও বটে! আমি একটা শুটিংয়ে কলকাতায় ছিলাম, একটি গান শুট করতে এসেছিলাম মুম্বাই থেকে। তখন ওই শুটিং স্পটের কাজ সেরে আমি বাড়ি ফিরছিলাম এবং ফিরতি পথে আমি গাড়িতে ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটির প্রথম চারটি লাইন লিখি (‘প্রেমে পড়া বারণ/ কারণে অকারণ/ আঙ্গুলে আঙ্গুল রাখলেও/ হাত ধরা বারণ’)। এমনকি, আমি এই চারটি লাইনের গুণগুণ করে সুরও করি এবং ভয়েস নোটে আমি সুরটা রেকর্ড করে রাখি। এই সুরটা ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানের বর্তমান সুরের থেকে সম্পূর্ণই আলাদা ছিল। পরবর্তী সময় আমি দু’মাস পর আমার পুরোনো ভয়েস নোটগুলো দেখতে দেখতে ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটির ওই সুরটা খুঁজে পেলাম, কিন্তু সুরটা আমার একদমই পছন্দ হলো না। তখন এই লাইনগুলোর উপর ভিত্তি করে আমি নতুন একটা সুর সংযোজন করলাম এবং প্রথম চার লাইনের পর সম্পূর্ণ গানটাই আমি লিখে ফেললাম। নতুন সুরে সম্পূর্ণ গানটি আমার কাছে তখন বেশ ভালোই লাগল। কিন্তু তখনও আমি জানতাম না, গানটি কোনো সিনেমায় কী আদৌ মুক্তি পাবে, সিঙ্গেল কোনো শিল্পীর কণ্ঠে শোভা পাবে নাকি গানটি এভাবেই আড়ালে থেকে যাবে! লগ্নজিতা চক্রবর্তী আমার বাড়ির পাশেই থাকত এবং মাঝেমধ্যেই আমাদের আড্ডা হত। তো লগ্নজিতা আমার এই গানটি শুনলেন এবং বললেন, ‘গানটি তো বেশ ভালো লাগছে’। আমিও লগ্নজিতাকে তখন বললাম, তার কণ্ঠে গানটি বেশ ভালোই মানাবে। এমতাবস্থায়, বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হবার পর একদিন ‘সোয়েটার’ সিনেমার পরিচালক শিলাদিত্য দা (শিলাদিত্য মৌলিক) আমার বাড়িতে আসেন এবং ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটি তার ভীষণ পছন্দ হয়ে যায়। তখন তিনি তার ‘সোয়েটার’ সিনেমার জন্য গানটিকে নির্বাচিত করেন এবং এভাবেই ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটি দর্শকশ্রোতাদের মাঝে বিস্তৃততরভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
টাইমটাচ নিউজ: ‘প্রেমে পড়া বারণ' গানটিকে কি আপনার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট মনে করেন?
রণজয় ভট্টাচার্য: হ্যাঁ, ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটি তো নির্দ্বিধায় আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। এর পূর্বে আমি মুম্বাইতে কাজ করতাম। মুম্বাইতে ওই সময় আমি অনুরাগ বসুর সঙ্গে কাজ করেছি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে যখন আমার লেখা এবং সুরে ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটি ‘সোয়েটার’ সিনেমায় মুক্তি পায়, তখন চারিদিকে আলোড়ন সৃষ্টি করার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ভারতবর্ষ ছাপিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছ থেকে আমি প্রশংসা ও ভালোবাসা পেয়েছি; এমনকি অবাঙালিদের কাছ থেকেও কুড়িয়েছি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। গানটির মাধ্যমে আমি অনেক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কৃত হয়েছি, অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি, সম্মাননা লাভ করেছি। তবে ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটির সাফল্যের ক্ষেত্রেও আমার একার কৃতিত্বের কথা আমি বলব না। গানটির গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী, গানটির এডিট, কালার, ভিডিওগ্রাফির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই এবং ‘সোয়েটার' সিনেমার পরিচালক শিলাদিত্য দা (শিলাদিত্য মৌলিক) সকলের কৃতিত্বের কথা-ই একবাক্যে আমাকে স্বীকার করতেই হবে। তারা সকলে আমার পাশে ছিলেন এবং আমার প্রতিভাকে মূল্যায়ন করেছিলেন বলেই হয়তো আজও সমানভাবে চতুর্দিকে ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটির জয়জয়কার। সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে তাই বলতে হয়, ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটি আমার সংগীত ক্যারিয়ারের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট হয়ে আছে এবং থাকবেও।
টাইমটাচ নিউজ: অন্যদিকে, বারিষের কথায় ‘জিয়া তুই ছাড়া’ জনপ্রিয় গানটিতেও সুর দিয়েছেন আপনি। এই গানটি প্রকাশের পরও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। অপরপক্ষে, এরই মধ্যে বারিষের কথায়, শাওনি মজুমদারের কণ্ঠে, শাওনি মজুমদার ও শ্রীতমা বৈদ্য’র অভিনয়ে এবং আপনার সুরে ‘মুষলধারায়’ গানটিও তো ভীষণভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। আপনার গান লেখার পেছনের গল্প এবং সুরকার হবার গল্প যদি ‘টাইমটাচ নিউজ’ এর পাঠকদের জন্য সংক্ষেপে বলতেন?
রণজয় ভট্টাচার্য: আমার নিজেরও খুব ভালো লাগে যখন মনে হয়, আমার লেখা গান বা আমার সুরে কোনো গান মানুষের মাঝে ভালোবাসার মধুর আবেশ ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমার সুরে ‘জিয়া তুই ছাড়া’ গানটিও ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছিল এবং গানটি ইউটিউবে মুক্তির আগেই গানটির কভার শুরু হয়ে গিয়েছিল এবং অনেকেই গানটি কভার করেছে গানটি মুক্তির আগেভাগেই। সত্যিই এইটা তো পরম ও চরম প্রাপ্তি বইকি! অপরদিকে, ‘মুষলধারায়’ গানটির সুর তো বেশ কঠিন এবং শাওনি নিজেও খুবই সুন্দরভাবে তার কণ্ঠের জাদুতে গানটি স্বতঃস্ফূর্তরূপে ফুটিয়ে তুলেছেন। আমরা ভাবছিলাম গানটি যেহেতু একটু ভিন্ন ধাঁচের, তাই হয়তোবা খুব বেশি মানুষের কাছে গানটি পৌঁছাবে না। কিন্তু আমাদের অবাক করে দিয়েই গানটি অগণিত মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছে। সত্যি বলতে, এই সাফল্যের পেছনে ‘জিয়া তুই ছাড়া’ ও ‘মুষলধারায়’ গানদ্বয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেরই ভূমিকা অপরিসীম বলে আমি মনে করি। আর আমার গান লেখার গল্প ও সুরকার হবার গল্পের কথা যদি বলতে চাই, তাহলে আমাকে শৈশবে ফিরে যেতে হবে। আমি খুবই কম বয়সে যখন সবেমাত্র আমি স্কুলের গণ্ডিতে পা রেখেছি, তখন থেকেই ছড়া লিখতাম এবং ছড়াগুলোতে নিজই সুর দেবার চেষ্টা করতাম৷ হয়তো গীতিকার বা সুরকার হবার প্রধান প্ল্যাটফর্মটি আমার স্কুলের ক্ষুদে বয়স থেকেই শুরু হয়ে যায়। আমার দিদিকে গান শেখাতে আসতেন শ্রীমতি চন্দনা ভট্টাচর্য এবং পরবর্তীকালে মূলত তার মাধ্যমেই আমার গান শেখার হাতেখড়ি। তার কাছ থেকেই গানের খুটিনাটি বিষয়াদি সম্বন্ধে আমি সম্যক জ্ঞান লাভ করতে সমর্থ হই। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারে তো পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই এবং মধ্যবিত্ত পরিবার চায়, তাদের পরিবারের সন্তানরা পড়াশোনা শেষ করে একটা যেকোনো চাকরি করবে; যাতে করে তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করার মাধ্যম তৈরি করতে পারে। আমার ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। একসময় আমিও জীবিকার প্রয়োজনে চাকরিতে যোগদান করি এবং দু'বছর কর্পোরেট চাকি করার পর আমার মনে হতে থাকল যে, চাকরি বিষয়টা বোধ হয় আমার জন্য নয়। আমি চাকরি করার কারণে আমার নিজস্ব সত্তা থেকে ক্রমান্বেয়ই দূরে সরে যেতে থাকছিলাম এবং পরবর্তীতে আমি চাকরি ছেড়ে দিয়ে সংগীতেই পরিপূর্ণভাবে মনোনিবেশ করি এবং মুম্বাইয়ে চলে যায়। মুম্বাইয়ে এসে আমি ভারতের নন্দিত পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার অনুরাগ বসুর সঙ্গে কাজ করতে থাকি এবং মুম্বাইয়ে তার সঙ্গে পরিচয়টাই আমার ক্যারিয়ারের জন্য বিশেষ গুরুত্ববহ ছিল। সবমিলিয়ে, আমার গান লেখার পেছনের গল্প এবং সুরকার হবার গল্পটা এমনই ছিল।
টাইমটাচ নিউজ: যদি গীতিকার ও সুরকার না হতেন, তবে জীবনে কী হতে চাইতেন?
রণজয় ভট্টাচার্য: যদি গীতিকার ও সুরকার না হতাম, তাহলে জীবনে আমি ক্রিকেটার হতে চাইতাম৷ আমি ক্রিকেট খেলতাম এবং ক্রিকেটের প্রতি দারুণ ঝোঁক ছিল আমার। আমার ছোটবেলায় অধিকাংশ সময় আমি ক্রিকেট খেলে মাঠে কাটিয়েছি। আমার বন্ধুদের ভাষ্য অনুযায়ী, আমি ভালো ক্রিকেটারও ছিলাম এবং আমি জেলা পর্যায়েও ক্রিকেট খেলেছি। সর্বোপরি বলতে পারি, গীতিকার ও সুরকার না হলে আমি এক জীবনে ক্রিকেটার হিসেবেই নিজেকে দেখতে চাইতাম৷
টাইমটাচ নিউজ: বর্তমানে আপনার ব্যস্ততা এবং পরবর্তী কাজ সম্পর্কে জানতে চাই?
রণজয় ভট্টাচার্য: বর্তমানে খুবই ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমি। একদিকে বাংলা সিনেমার কাজ চলছে, অন্যদিকে কিছু এক্সপেরিমেন্টাল কাজ চলছে। তবে আমি আমার এই ব্যস্ততাকে উপভোগ করছি, সংগীত নিয়ে ব্যস্ততার থেকে ভালো কোনো ব্যস্ততা হয়তো আমার জীবনে বর্তমানে আর কিছু হতে পারে না। তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও আমি আমার সময়গুলোকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে উপভোগ্য করে তুলতে সমর্থ হচ্ছি।
টাইমটাচ নিউজ: আপনার অজান্তেই বাংলাদেশের অনেক মানুষ আপনার লেখা গান এবং গানে আপনার সুরের জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকে। কাঁটাতারের বেড়াজালের সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
রণজয় ভট্টাচার্য: পৃথিবীর বাংলা ভাষায় কথা বলা সকল মানুষের সঙ্গেই যেন আমার আত্মার অদ্ভুত যোগসূত্র রয়েছে। আর বাংলাদেশের মানুষ তো আমার মায়ের ভাষাতেই কথা বলে থাকেন। হয়তোবা আমাদের এপার-ওপার বাংলার মধ্যে কাঁটাতারের ফারাক রয়েছে। কিন্তু আমরা বাঙালি, এইটাই আমাদের মুখ্য পরিচয় হওয়া শ্রেয়। সত্যিই আমি এতটাই আপ্লুত হয়ে যায় বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা পেলে, যা হয়তো এখানে কয়েক বাক্য বলে শেষ করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসাকে আমি আমার হৃদয়ের সবটুকু দিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করি এবং মূল্যায়ন করতে সচেষ্ট হই। আমি আমৃত্যুই বাংলাদেশের মানুষের কাছে ভালোবাসায় নত থাকব, যারা আমার কাজকে ভালোবাসা দিয়ে সবসময়-ই আমার পাশে ছায়ার মতো মায়া হয়ে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছেন।
টাইমটাচ নিউজ: নিজেকে কতটা সফল ভাবেন এবং জীবনের এই পথচলায় সবথেকে বড়ো সাফল্যের কথা যদি জিজ্ঞেস করা হয়, তাহলে কোন সাফল্যের কথা বলবেন?
রণজয় ভট্টাচার্য: প্রকৃত অর্থে, সাফল্যের কোনো নির্দিষ্ট মাপকাঠি হয় না; তো নিজেকে কতটা সফল ভাবি এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। সাফল্যের সংজ্ঞা তো বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত। আমার কাছে সাফল্যের অর্থটাই হচ্ছে ‘মানুষের ভালোবাসা'; যেই ভালোবাসার জন্য আমি প্রতিটা মুহূর্তে প্রতিনিয়ত আমার হৃদয়টা পেতে ভালোবাসার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকি। যেদিন মানুষের থেকে আর ভালোবাসা পাব না, সেদিন আমার মনে হবে আমার সাফল্য ফুরিয়ে গেছে। আমার গান শুনে মানুষ হাসছে, মানুষ কাঁদছে, মানুষ প্রেমে পড়ছে, বিরহ-বিচ্ছেদের অনুভবে নিজেদের ব্যক্তিগত অনুভূতি উপলব্ধি করতে সমর্থ হচ্ছে। এই যে গান লিখে ও গান সুর করে আমি এত মানুষের আত্মার সঙ্গে নিজের মেলবন্ধন ঘটাতে পারছি, তা আমার কাছে সর্বোত্তম প্রাপ্তি মনে হয়। এই মানুষগুলোই আমার সাফল্য, এই মানুষগুলো থেকে উৎসারিত ভালোবাসাটুকুই আমার পথচলার মহোত্তম শক্তি, মনোবল ও সাহস।
টাইমটাচ নিউজ: কতটা পথ আর পাড়ি দিতে চান কিংবা নিজেকে অদূর ভবিষ্যতে কোন অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে চান?
রণজয় ভট্টাচার্য: অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়া বাকি এবং জীবনে এখনও অনেক কিছু করা বাকি আমার। আমার প্রফেশনটা বা এই ক্ষেত্রটা এমন একটা জায়গা, যেই জায়গাটার কোনো শেষ গন্তব্য নেই। এই ক্ষেত্রটার শুরু আছে ঠিকই, কিন্তু শেষ কোনো গন্তব্য আছে বলে আমার মনে হয় না৷ আমার কাজ দিয়ে হয়তো আরও অনেক মানুষের মনের কথা আমি বলে ফেলতে পারব এবং আরও অনেক মানুষের মনের গভীরে পৌঁছাতে পারব। তাই অদূর ভবিষ্যতের কথা যদি জিজ্ঞেস করেন, তাহলে বলব অদূর ভবিষ্যতে আমি আমার কর্ম দিয়ে মানুষের হৃদয়ের মজলিসেই আমার স্থায়ী আসন প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
টাইমটাচ নিউজ: অসংখ্য মানুষের ভালোবাসায় তো প্রতিদিনই প্রতিনিয়ত সিক্ত হচ্ছেন। আপনার ভক্ত সংখ্যাও তো নেহাৎ কম নয়। আপনার এমন কোনো পাগল ভক্তের কথা দু’এক বাক্যে জানতে চাই?
রণজয় ভট্টাচার্য: আমার ভক্তের কথা যদি বলি, তাহলে প্রতিদিনই আমার কাছে অসংখ্য মেসেজ আসে এবং তাদের থেকে আমি বিভিন্ন উপহার পাই, যা আমাকে দারুণভাবে উৎসাহিত করে ও ভীষণভাবে মানুষের ভালোবাসার কাছে ঋণী করে তোলে। এমন একটা ঘটনার কথা আমার মনে পড়ছে এই মুহূর্তে। এই ঘটনাটি আমাকে দারুণভাবে নাড়া দিয়েছিল। একটি মেয়ে খুবই খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করছিলেন এবং তিনি তার জীবনের বিনাশ সাধন করার জন্য উন্মত্ত ছিলেন। এমতাবস্থায়, ‘প্রেমে পড়া বারণ’ গানটি তার শ্রুত হয় এবং তিনি পরবর্তীতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। এই যে ভক্তদের এমন অদ্ভুত ভালোবাসা, নিঃসন্দেহে তা আমার চলার পথে সাফল্যের সোপান হয়েই থাকবে আজন্ম।
টাইমটাচ নিউজ: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মূল্যাবান সময় আমাদের সাথে অতিবাহিত করার জন্য। আপনার কাজ অব্যাহত রাখুন এবং নিজেকেও অতিক্রম করে যান আপনার স্বীয় মেধায়, কর্মে আর যোগ্যতায়। বাংলাদেশ থেকে আপনাকে সাধুবাদ।
রণজয় ভট্টাচার্য: আপনার প্রতিও অশেষ কৃতজ্ঞতা এবং ‘টাইমটাচ নিউজ’ এর সকল পাঠক, কলাকুশলী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আমার গহীন অন্তস্থল থেকে আমার ভালোবাসা নিবেদন করছি। আপনিও ভালো থাকবেন এবং আপনাদের বহুল পঠিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘টাইমটাচ নিউজ’ এর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করছি।