পিতা, অমরতার লাল পদ্ম শোভিত তুমি // কামাল বারি শিল্প ও সাহিত্য / 
স্বপ্নই তোমাকে জাগিয়েছে
স্বপ্নই দিয়েছে অমরতা;
স্বপ্নের সুপুষ্ট বীজ
বুনে দিয়েছো তুমি
অহল্যা বাংলার বুকে...
আহা, বাঙালির চির-আরাধ্য
মুক্তির স্বপন কুসুম বিকশিত
মুক্ত প্রাণে প্রাণে...!
মধুমতির আশ্চর্য পলিমাটি থেকে
উঠে আসা অনন্য সন্তান তুমি...
সমগ্র বাংলাদেশ ব্যেপে
গেয়েছো মুক্তির গান...
প্রমত্তা পদ্মার পলিশোভিত স্রোতধারা
আরও শত নদীর প্রাণে জাগরণে
ফুলে ওঠা ঢেউয়ের তীব্র গর্জন-
তোমার প্রেরণা...
সমগ্র বাংলা ভূমেই তো তোমার
একান্ত আপন বাস!
তোমার মুক্তকণ্ঠের গান শুনেছে
বাংলার জোছনা ধোয়া আকাশ নদী
দুরন্ত বাতাসের মান্দাস...
সাড়া দিয়েছে বাংলার তাবৎ বৃক্ষ
পাখি প্রজাপতি ফুল-
শোভন বাগান- সমৃদ্ধ শস্যখেত...
তোমার আজন্মলালিত স্বাধিকারের স্বপ্ন
পরিব্যাপ্ত বাংলার আকাশে তারায় তারায়
জমিনে সবুজ শস্যখেতে ফুলে ফুলে...
সমগ্র বাংলাদেশ সেদিন এক-কণ্ঠস্বরে একত্রিত ’৭১
৭ই মার্চের মুক্তির উদ্যানে তুমি সুতীব্র ভালোবাসার
কাব্যগাথায় জাগিয়ে দিয়ে
কাক্সিক্ষত জাগরণী শুনিয়ে দিলে
তোমার প্রাণের বাঙালির কানে কানে...
তাবৎ বাঙালি সেদিন উত্তাল মহাসমুদ্রবৎ
আহা, জ্বলন্ত ঢেউয়ে ঢেউয়ে স্বাধীনতাকামী
তেজি বাঙালির মুখ জ্বলে...!
...রক্তের সিঁড়ি বেয়ে স্বাধীনতা আসে-
রক্তের সিঁড়ি বেয়ে মুক্তি!
...স্বাধীনতা! সে-তো সামান্য দামে কেনা
সম্পদ নয় কোনও!
স্বাধীনতা! সে নয় তো সহজসাধ্য কিছু!
বাঙালির সুদীর্ঘ রক্তসাধন- স্বাধীনতা!
তাই তো আজও বাংলার সাগর নদী
শহিদের রক্ত স্মারক- সুনিবিড় ঢেউ বয়ে যায়...!
আজও মেঠোপথ রাজপথ
বাংলার তাবৎ জমিন
স্বজনহারার চোখের জলে ভেজা...!
পিতা স্বপ্ন পূরণের আনন্দে সেদিন
কেঁদেছেন মুক্তির উদ্যানে...
আহা, সমগ্র পৃথিবীর মুক্তিকামীরা
বিস্মিত বাঙালির উত্থানে!
পিতা, অমরতার লাল পদ্ম শোভিত তুমি!
চিরজাগ্রত তোমার অর্জিত স্বাধীন ভূমি।