Opu Hasnat

আজ ১৭ এপ্রিল বুধবার ২০২৪,

সৈয়দপুরে শীতের সকালে খেঁজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা নীলফামারী

সৈয়দপুরে শীতের সকালে খেঁজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

ব্যস্ততার শেষ নেই গাছিদের। কেউ গাছ পরিস্কার করে লাগাচ্ছেন কলস, কেউবা হাঁড়ির রস নামিয়ে ছুটছেন বাজারে বিক্রির জন্য। ফলে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের গাছিরা। শীতের ভরা মৌসুমে রস সংগ্রহের জন্য শীতের সকালে খেঁজুর রস সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে গাছিরা।  গাছিরা হাতে দা ও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে চাছা-ছেলা করেন এবং ছেলা স্থানে নল বসান এলাকার প্রতিটি বাড়ির খেঁজুর গাছে । গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করা হয়।
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার জীবনবৈচিত্রের সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়নে সংশিষ্ট বন বিভাগ সংরক্ষণের উদাসীনতার কারণে এ অঞ্চলে দেশী খেজুর গাছ অনেকটা বিলুপ্তির পথে। খেঁজুর গাছ সংকটের কারণে প্রতি বছরের মতো এ বছরও চাহিদা অনুযায়ী রস পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা করেছেন সংগ্রহকারীরা। এছাড়া সৈয়দপুরের কোথাও বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত গুড় তৈরি করা হয়না। ফলে গাছিদের পুরো ব্যবসাটা নির্ভর খেজুরের রসের উপর।  

সৈয়দপুরে বোতলাগাড়ি, কামারপুকুর, কাশিরাম বেলুকুর ও খাতামধুপুর ইউনিয়নে সড়কের ধারে রয়েছে খেজুর গাছ। শীত মৌসুম এলে জয়পুরহাট, আক্কেলপুর, নওগাঁ প্রভৃতি অঞ্চল থেকে গাছিরা এসে ডেরা ফেলেন। তারা গাছ চুক্তিতে নিয়ে খেঁজুরের রস নামিয়ে থাকেন। শহরে এই খেজুর রস প্রতিটি গ্লাস ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খেজুরের রস অনেকটা খোলামেলাভাবে সংগ্রহ করায় অনেকে নিপাহ ভাইরাসের আশংকায় খেজুর রস পানে বিরত থাকছেন। 

সৈয়দপুরে সারি সারি খেজুর গাছে লাভবান হচ্ছেন গাছের মালিক ও গাছিরা। খেঁজুরের রস দিয়ে ঘরে ঘরে নানান রকম পিঠা তৈরি করা হয়। গ্রামের কোন কোন  বাড়িতে নতুন মেহমানদের ডেকে এনে খেঁজুর রসের তৈরি বিভিন্ন পিঠা দিয়ে আপ্যায়ন করে। খেঁজুর রস খেতে শীতের সকালে  ছুটে আসেন অনেকে। ফলে গ্রামীণ পরিবেশটা খেঁজুর রসে মধুর হয়ে উঠে। শীতের সকালে উঠানের রোদে বসে যেমন পিঠা খেতে শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সকলেরই ভালো লাগে। তেমনই শীতের সকালে গাছ থেকে পেড়ে আনা খেজুরের কাচা রস খেতেও অনেক মজা লাগে।