Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

সংবাদ সম্মেলনে জেলা মৎস্যজীবীলীগ আহবায়ক কাজী আব্দুস সোবহান

'কোন রকম অর্থ বিনিময় ছাড়াই পদ পেয়েছি' ফরিদপুর

'কোন রকম অর্থ বিনিময় ছাড়াই পদ পেয়েছি'

টাকার বিনিময়ে হাইব্রিডদের পদ প্রদান ও দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ফরিদপুর জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহবায়ক কাজী আব্দুস সোবহান। তিনি এ সময় লিখিত বক্তব্যে বলেন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের এই পথটি আমার পূর্বের রেকর্ড দেখে, বিভিন্ন সিকিউরিটি এজেন্সি তদন্ত করে রিপোর্ট এর উপর ভিত্তি করে কোন প্রকার অর্থের বিনিময় ছাড়া আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারনীগন দিয়েছেন।

শনিবার সকাল ১১ টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চিঠিতে কাজী আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে দলের মধ্যে বিমৃঙ্খলা সৃষ্টি ও পদ ভাঙিয়ে অনিয়মের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। 

এসময় তিনি দাবি করেন, ফরিদপুরের বিভিন্ন থানায় আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের বিভিন্ন কমিটি গঠন করায় একটি কুচক্রিমহল আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। তিনি বলেন, আমরা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি করছি। অমরা কোন অপরাজনীতি করছিনা। সেনাবাহিনী থেকে তার চাকরি চলে যাবার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। নিজেকে সেনাবাহিনীর এনসিও (নন কমিশন অফিসার) উল্লেখ করে কাজী আব্দুস সোবহান জানান, তিনি নিজে স্বেচ্ছাতেই সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন গ্রুপ অব কোম্পানী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত বলে জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সইস্বাক্ষর জাল করে বন্দর থেকে পণ্য খালাস করতে গিয়ে সাজা খাটার যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটিও সত্য নয়। তিনি বলেন, এসব অভিযোগ তদন্ত হচ্ছে। তারা আমার ইন্টারভিউও নিয়েছে।

তার বিরুদ্ধে নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের অভিযোগ দাখিলের ব্যাপারে তিনি বলেন, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন আমাকে তেমনভাবে চিনেননা। তিনি কিভাবে আমার সম্পর্কে জানবেন। নিজ এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আপনাকে চিনেনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি তেমন একটা সময় এলাকায় থাকিনা তাই তারা আমাকে সেভাবে চিনে উঠতে পারেননি।

প্রসঙ্গত, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুস সোবহান ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মিয়া এবং সালথার সভাপতি দেলওয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান ফকির গত ২৯ মে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে কাজী আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে তারা অভিযোগ করেন, নানা অপকর্মের কারণে কাজী আব্দুস সোবহান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হন। চাকরিচ্যুতির পরও তিনি বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে শতকোটি টাকার বিদেশি পণ্য বিনা শুল্কে খালাস করেন। পরে স্বাক্ষর জালিয়াতি ধরা পড়ায় তিনি এক বছর কারাবরণ করেন। জাল ডলার ব্যবসা, চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার নামে। তিনি সম্প্রতি অর্থের বিনিময়ে জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহবায়ক পদটি বাগিয়েছেন। পদ পেয়ে ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি করার নামে সুসংগঠিত দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

এদিকে সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, কাজী আব্দুস সোবহান কখনোই ফরিদপুর বা নগরকান্দায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেননি। তিনি হঠাৎ করেই ঢাকা থেকে ফরিদপুর মতো একটি জেলাতে তিনি মৎস্য লীগের সভাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি নিজ দলের নেতাকর্মীদেরকে চেনেন না। তারা কেন্দ্রের কাছে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, কীভাবে তিনি আওয়ামী লীগ হলেন আর এত তাড়াতাড়ি ফরিদপুর জেলার মতো একটি জেলাতে জেলা মৎস্য লীগের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেলেন তা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে।