Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই হত্যা করা হয় ত্রিপুরা গৃহবধূকে : পুলিশ সুপার খাগড়াছড়ি

ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই হত্যা করা হয় ত্রিপুরা গৃহবধূকে : পুলিশ সুপার

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা মাটিরাঙ্গা উপজেলায় পাহাড়ি ত্রিপুরা নারীর লাশ উদ্ধারের ধর্ষণ ঘটনা ধামাচাপা দিতে গৃহবধূ সবিতাকে হত্যা করা হয়। জেলার মাটিরাঙ্গায় সবিতা ত্রিপুরা নামে এক গৃহবধূকে ধর্ষনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলার আসামি মোহন ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মো: আব্দুল আজিজ।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ জানান, আসামি মোহন ত্রিপুরা দীর্ঘদিন ধরে নিহত গৃহবধূ সবিতা ত্রিপুরাকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিচ্ছিল। সবিতা কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত মঙ্গলবার দুপুরে বসতবাড়ির অদূরে মোহন ত্রিপুরা তাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে শ্বাসরোধ ও ঝিরির পানিতে চুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ পাশের আরেকটি ঝিরিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা ধন রঞ্জন ত্রিপুরা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করলেও পুলিশ প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গতকাল মাটিরাঙ্গার গোমতি ইউনিয়নের মরাটিলা এলাকা থেকে মোহন ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করে। আসামি আদালতে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশ সুত্রে জানা যায়, সবিতা ত্রিপুরা মাটিরাঙ্গার গোমতি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বেহাদস্ত কার্বারীপাড়ার বাসিন্দা কবিসা ত্রিপুরা স্ত্রী। সে উর্মি নামে দেড় বছরের এক কন্যা সন্তানের জননী।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩ আগষ্ট) দুপুরের দিকে বাড়ির অদুরে সমাজয় ত্রিপুরার বাড়ি নীচে দুই পাহাড়ের গভীর খাদে সৃষ্ট লেকে পানি আনতে যায়। দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও সে বাড়ি ফিরে না আসলে খোজাখুজির এক পর্যায়ে সমাজয় ত্রিপুরা বাড়ির পাশে দুই পাহাড়ের নীচে সৃষ্ট লেকে তার ভাসমান মরদেহ দেখতে পায়।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার মিলন ত্রিপুরা মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশকে খবর দিলে মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের একটি টীম সমাজয় ত্রিপুরা বাড়ির পাশে প্রায় ৪০০ফুট খাদে সৃষ্ট লেক থেকে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে।

মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আলী ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ৬/৭কিলোমিটার দুর্গম পাহাড়ি পথ পায়ে হেটে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকান্ড। পুলিশ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছিড় আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য মাটিরাঙ্গা উপজেলায় পাহাড়ের লেক থেকে পাহাড়ি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ে নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাটিরাঙায় দুই পাহাড়ের গভীর খাদে সৃষ্ট লেকের পানি থেকে সবিতা ত্রিপুরা(২০) নামে এক নারীর ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বুধবার (৪ আগষ্ট) সকালে মাটিরাঙ্গার গোমতি ইউনিয়নের দুর্গম বেহাদস্ত কার্বারী পাড়া থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ। কে বা কারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে পুলিশ তদন্ত স্বাপেক্ষে ক্ষতিয়ে দেখছে। এ অনাকাংখিত ঘটনায় এলাকার আত্মীয় স্বজনের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।