Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

নৌপথে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তির সুর, হর্ন বাজলেই জরো হাজারো যাত্রি রাজবাড়ী

নৌপথে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তির সুর, হর্ন বাজলেই জরো হাজারো যাত্রি

এবার নৌযান পারাপারে কঠোর হয়েছে প্রশাসন। নেওয়া হয়েছে ফেরি পারাপার বন্ধের সিদ্ধান্ত। শুধু মাত্র রাতের বেলায় পন্যবাহি ট্রাক পারাপারের জন্য চলবে ফেরি। এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর শনিবার সকাল থেকেই দক্ষিনাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামূখি যাত্রি ও যানবাহনের চাপে ঘাট এলাকায় উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। পারের অপেক্ষায় আটকে পরে প্রাইভেটকার রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স ও মোটর সাইকেলসহ শত শত যানবাহন। সাথে ঢাকা খুলনা মহাসড়কে পারের অপেক্ষায় থাকে অন্তত ৩ শত পন্যবাহি ট্রাক।

এর আগে শুক্রবার রাতে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে দিনের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ ও রাতের বেলায় পন্যবাহি ট্রাক পারাপারের সিদ্ধান্ত নেয় বিআইডবিøটিসি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে শনিবার সকাল ছয়টার পর থেকে বেলা বারার সাথে সাথে ঘাট এলাকায় বাড়তে থাকে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ। চাপ সামাল দিতে হিমসিম খায় ঘাট কর্তৃপক্ষ। সকাল সাড়ে দশটার সময় মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ২ টি মরদেহবাহি এ্যাম্বুলেন্স ও চারটি অন্যন্যরোগীবাহি এ্যাম্বুলেন্স পার করার সিদ্ধান্ত নেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ। এ সময় মাধবীলতা নামে ওই ফেরি অন্তত হাজার খানেক যাত্রি পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসে।

আবার বেলা এগারটার সময় দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে ফেরি রজনীগন্ধ্যা পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এই ফেরিটিতেও ছিলো অন্তত এক হাজার যাত্রি। কোথায় সামাজিক দুরত্ব মানছেন না কেউ। পরে বেলা বারোটা থেকে তিনটি ফেরি দিয়ে জরুরী এ্যাম্বুলেন্স পার করার সিদ্ধান্ত নেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ।

এ সময় ঢাকা থেকে আসা যাত্রি ইকবাল হোসেন বলেন, জীবনের এই প্রথম ঈদ করতে এমন ভোগান্তিতে পরেছি। ঢাকা থেকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে এসে ঘাটে ফেরি বন্ধ তারপর অনেক কষ্টে ছোট ফেরিতে পার হতে পেরেছি। এখন আবার মোটর সাইকেল ভারা করে যেতে হবে ঝিনাইদহ।

অপর যাত্রি হুমায়ন কবির বলেন, সরকার ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভালো। কিন্তুু সেটা দুই এক দিন আগে জানালে ভালো হতো। মানুষ ঘাটে এসে ভোগান্তিতে পরতো না। তাছারা অনেকে রোগী নিয়ে এসেছে তারা আছে সবচেয়ে বেশি কষ্টে। 

এদিকে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল শুরু হলেও ভোগান্তি এড়াতে দুর-দুরান্তের যাত্রীরা দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গাদাগাদি করে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মাহেন্দ্রা, অটোরিকসা, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে গন্তব্যে যাচ্ছেন। 

সরেজমিন বিকেলে দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, জেলার অভ্যন্তরে গনপরিবহন চলাচল শুরু হলেও তাতে যাত্রীদের তেমন কোন আগ্রহ নেই। ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা গুলো থেকে সাধারণ মানুষ প্রখর রোদে তীব্র গরমে নারী ও শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনে এসে ফেরি পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাট প্রান্তে পড়ছে চরম ভোগান্তিতে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ  বিভিন্ন যানবাহনে গাদাগাদি করে গন্তব্যস্থলের দিকে ছুটছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মাঝে মাঝে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা দেখা গেলেও থেমে নেই অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার চাপ।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের ব্যাবস্থাপক মোঃ ফিরোজ শেখ জানান, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে শনিবার সকাল ৬ টা থেকে ফেরি চলাচল সম্পুর্নরুপে বন্ধ রাখা হয়। তবে জরুরী মরদেহ বহনকারী গাড়ি ও এ্যাম্বুলেন্স পারাপার করার জন্য ৩ টি ফেরি চলাচল করছে। আর আটকে থাকা পন্যবাহি ট্রাকগুলোকে রাতের বেলায় পারাপার করা হবে।