Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

কেমন আছেন একসময়ের তুখোড় যুবনেতা মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু সাক্ষাৎকার

কেমন আছেন একসময়ের তুখোড় যুবনেতা মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু

যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের একসময়ের তুখোড় যুব নেতা মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু। তার এলাকা এবং জাতীয় রাজনীতিতেও রয়েছে তার অবদান। রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামের কঠোর পরিশ্রম, কারাবাস, তৎকালীন সরকারের নির্যাতন-নিপীড়ন, বয়স, হতাশা ও নানা কারণে এখন তার শরীর ভেঙে পড়েছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছু দিন ধরে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। সাম্প্রতিক সন্ত্রাস ও জঙ্গি সমস্যা, সন্ত্রাস-জঙ্গি দমনে সরকারের সাফল্য, বন্যাদুর্গতদের সহায়তা ইত্যাদি, নিজের দলের কথাসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে তার সঙ্গে টাইমটাচ নিউজ ডটকম এর আলাপ হয়। আলাপচারিতার চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্যে পরিবেশিত হলো...

 

টাইমটাচনিউজ : আপনার বর্তমান রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা কিছু বলুন-
মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু :
শারীরিক অবস্থা একটু খারাপ যাচ্ছে- তারপরও কাজ করে যাচ্ছি। পার্টি অফিসে যাচ্ছি। যেসব কর্মসূচি আসছে সেগুলো করছি। আমি এখন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগে কাজ করছি। কমিটির অনুমোদন দেবেন নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা)। জমা দেওয়া হয়েছে।

টাইমটাচনিউজ : জঙ্গি দমনে তো এ সরকার সফল বলা চলে- অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবেই ভয়াবহ এই অপতৎপরতাকে কঠোর হাতে দমন করা হয়েছে...
মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু :
হ্যাঁ, আমাদের আওয়ামী লীগ সরকারের এটি একটি নজীরবিহীন সাফল্য বলে আমি মনে করি। পৃথিবীর বড় বড় শক্তি যেখানে এই সমস্যা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে আমাদের বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এজন্য আমি পুলিশ বিভাগকে ধন্যবাদ দিবো। তারা জীবন দিয়ে জঙ্গি প্রতিরোধে কাজ করেছে- করছে। গোয়েন্দা বাহিনী, র্যাবসহ প্রশাসনের সবাই ধন্যবাদ পাবে এ সাফল্যের জন্যে। আরেকটি ব্যাপার- ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রবক্তা জননেত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সারা বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে সাড়া দিয়েছে- তা জাতীয় ঐক্যের বহিঃপ্র্রকাশ বলে আমি মনে করি। নেত্রী পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি গঠনের আহ্বান জানান। এটি বড় কাজে দিয়েছে।

টাইমটাচনিউজ : বন্যাদুর্গতদের সাহায্যের ব্যাপারেও এ সরকারের সাফল্য রয়েছে... এ ব্যাপারে কিছু বলবেন কি?
মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু :
হ্যাঁ, অবশ্যই। শুধু বন্যা কেন যত রকমের সমস্যা সংকট এসে হাজির হয় এ দেশটির ওপর বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে তা মোকাবেলা করতে সমর্থ হন। তাঁর আন্তরিকতা, বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা সর্বপরি দেশ পরিচালনায় দূরদৃষ্টি আজ দেশটিকে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে এসেছে। সবদিকে যেহেতু তাঁর দৃষ্টি রয়েছে- কাজেই বন্যাকবলিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি দুর্গত মানুষদের জন্য যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে মানুষ স্বস্তি পেয়েছে।

টাইমটাচনিউজ : অতি সম্প্রতি সরকারের ১০ টাকা কেজি দরে চাউল বিতরণের কর্মসূচি সম্পর্কে কিছু বলুন...
মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু :
আমাদের আওয়ামী লীগ সরকারের একটি দিক হচ্ছে- কিছু ভুলে যাবার নয়। আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিলো ১০ টাকা কেজি চাউল খাওয়ানোর। সেটি আমাদের নেত্রী বাস্তবায়ন করলেন। অত্যন্ত শৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে এ কাজটি প্রধানমন্ত্রী করলেন। অন্যান্য প্রজেক্টের মতো এটিও তিনি চালিয়ে যাবেন।

টাইমটাচনিউজ : কিন্তু দুর্নীতি দমনে তো সরকার তেমন পেরে উঠছে না বলে মনে হচ্ছে...!
মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু :
আসলে বর্তমান পৃথিবীর মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং অন্যান্য পর্যায়ের কারণে অন্যান্য দেশেও দুর্নীতির বাড়বাড়ন্ত লক্ষ করা যায়। আমাদের দেশের কিছু সিস্টেম আমি বলবো দুর্নীতির জন্যে অনেকাংশে দায়ী। দেশ তো এগিয়ে যাচ্ছে-- উন্নয়নও হচ্ছে যথেষ্ট, বড় বড় কাজ হচ্ছে স্বদেশের অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে। তো যদি দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো আমি মনে করি, দেশ আরো দ্রুত উন্নতি লাভ করতো। তবে সরকারের যে ডিজিটাল আন্দোলন- এটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে দুর্নীতি অবশ্যই কমবে। এছাড়া দেশের মানুষের দেশাত্ববোধও আরো জাগ্রত করতে হবে।

টাইমটাচনিউজ : আপনার নিজের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে কিছু বলুন--
মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু :
আমার কথা আর কী বলবো..। আওয়ামী লীগের রাজনীতি তো আসলে ত্যাগের রাজনীতি। জীবনভর রাজনীতি করে মানুষের জন্যে কাজ করেছি-- করে যাচ্ছি সাধ্যমতো। চোখের সামনে কতজন রাজনীতি করে রাতারাতি অনেক কিছু করে নিয়েছে-- আখের গুছিয়ে নিয়েছে, নিচ্ছে। যেন বড় কোনো ব্যবসা এ রাজনীতি! রাজনীতি করলেই রাতারাতি বাড়ি গাড়ি বিত্ত বৈভবের অধিকারী হওয়া যাবে! তবে আমরা কখনো এই ভাবনায় রাজনীতি করিনি। এই রাজনীতি করে আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি, ব্যবসা হারিয়েছি, স্বাস্থ্য হারিয়েছি। পরিবারকে সময় দিতে পারিনি, নিজের জন্য কিছুই চাইনি কখনো। এই ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আসলে কী চাই? আমরা চাই একটু মূল্যায়ন। আজকাল তো অনেক নতুন নতুন মুখ দেখি- অনেক সুযোগ-সুবিধা বাগিয়ে নিচ্ছে। শেখ সেলিম ভাই, ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফ ভাই, কামরুল ইসলাম (মন্ত্রী) ভাই, হাজী সেলিম (এমপি) ভাইয়ের মতো বড় বড় নেতার সঙ্গে কাজ করেছি। পার্টি আসলে আমাদের কাছে কী চায়? আমরা জনগণের স্বার্থে কাজ করেছি। এখনের নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের কাছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর ঘাটতি চোখে পড়ে। পদ-পদোন্নতি দিতে হবে কাজ দেখে, সাংগঠনিক শক্তি ও সক্রিয়তা দেখে। তবে আমি বলবো, ত্যাগ স্বীকার আওয়ামী লীগের  মহিমা, এটি এ সংগঠনের সৌন্দর্য। 

টাইমটাচনিউজ : অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সময় দেবার জন্যে।
মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু :
আপনাকে এবং টাইমটাচ নিউজ ডটকমকেও অনেক ধন্যবাদ। 

লিখেছেন : আর কে রাজ