জামালগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে তিন সন্তানের বিষপানে মৃত্যু সুনামগঞ্জ / 
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে স্বামীর জুয়া খেলা নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির পর অভিমান করে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে মিষ্টির সাথে বিষ মিশিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টায় তিন সন্তান মারা যায়। রবিবার সকালে এ র্দূঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করেছে। গুরুতর আশংঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রীকে নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তিন সন্তানকে মৃত ঘোষনা করলেও স্ত্রীর অবস্থা আশংঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষপানে মৃত্যুবরণকারী শিশু সন্তানরা হলেন ছেলে তানজিদ হোসেন (১৫), মেয়ে সাকিরা আক্তার (১৩) ও ছোট ছেলে সাহেদ মিয়া (৬) এবং গুরুতর আশঙ্কাজনক স্ত্রী যমুনা বেগমের (৪০)। মৃত্যুবরণকারী সবাই জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলমের সন্তান।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের সাথে জুয়া খেলা নিয়ে স্ত্রী যমুনা বেগমের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। রবিবার সকাল ১০টায় স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বাড়িতে না থাকার সুবাদে স্ত্রী যমুনা বেগম তার ছেলেকে দিয়ে স্থানীয় বাজার থেকে মিষ্টি এনে মিষ্টির সাথে বিষ মিশিয়ে প্রথমে তার তিন সন্তানকে মিষ্টি খাওয়ানোর পর যমুন বেগম নিজে বিষ মিশ্রিত মিষ্টি খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদেরকে দ্রুত সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরন করেন। সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের আসার সময় রাস্তায় তিন সন্তানের মৃত্যু হয়। এ সময় জেলা সদর হাসপাতালে আসার পর কর্তব্যরত ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম তিন সন্তানকে মৃত ঘোষনা করলে ও যমুনা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সকাল প্রায় ১১টায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাপতালের মেডিকেল অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, তিনটি সন্তান মূলত বিষপানেই জেলা সদর হাসপাতালে আসার আগেই রাস্তায় সম্ভবত মারা যান। গুরুতর আহত যুমনা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিলেটে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফেনারবাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার তিন অবুঝ শিশুর মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, স্বামী একজন চিহিৃত জুয়ারী, প্রতিদিন জুয়াখেলায় মগ্ন থাকা নিয়ে প্রায়ই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি হতো। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে ধরে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীলিপ কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ও তিনি জানান।