Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

ঝালকাঠিতে ছাতার কারিগরদের বর্ষার কারণে ব্যস্ততা বেড়েছে ঝালকাঠিবিশেষ সংবাদ

ঝালকাঠিতে ছাতার কারিগরদের বর্ষার কারণে ব্যস্ততা বেড়েছে

‘নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহিরে, ওগো আজ  তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে’। হ্যাঁ, পঞ্জিকার পাতা অনুযায়ী এখন বর্ষাকাল। যদিও এখন রোদ আর বৃষ্টির লুকোচুরির খেলা চলছে। বছরের পুরো সময়টা বসে থাকলেও এই সময়টায় ছাতার কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। কার ছাতা কে আগে মেরামত করে  নেবে তার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বর্ষাকালে সবচেয়ে উপকারি বস্তুটির নাম ছাতা।

ঝালকাঠি জেলা শহর এবং উপজেলা সদরের বাজার গুলোতে ফুটপাথে ছাতার কারিগর রয়েছে প্রায় অর্ধশত। এরা অন্যের  দোকানের সামনে নামমাত্র ভাড়ায় বসে কাজ করেন এবং কাজ শেষে ঘরে ফিরেন। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ ছাতার কারিগররা গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে ছাতা মেরামত করে চলেছেন। এই ছাতা গ্রীষ্মেও  যেমন দরকার তেমনি বর্ষাতেও এর প্রয়োজন পড়ে। বর্ষাকালেই ঘরে তুলে রাখা ছাতা মেরামত করতে নিয়ে আসেন ব্যবহারকারীরা। 

শহরে রিকশা ভাড়া বেড়েছে। বৃষ্টি নামলে এই ভাড়া দ্বিগুনে গিয়ে ঠেঁকে। রোদেলা তাপ বৃষ্টির ধারা থেকে মুক্তির  ছোট্ট একটি বস্তর প্রয়োজন কতটা তা মৌসুমেই বলে দেয়। আগের আমলে কাঠের হাতলে ছাতা থাকলেও হাল আমলে ছাতার হাতল ও কাপড়ে বৈচিত্র্য এসেছে। ছোট্ট সাইজের ছাতা স্কুল ব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ কিংবা প্যান্টের পকেটেও রাখা যায়। যত বৈচিত্র্যময় হউক ছাতা উল্টে গেলে, কাপড় ছিঁড়লে বা সেলাই খুলে গেলে ছাতার কারিগর ছাড়া  কোনো উপায়  নেই। বর্ষা মৌসুমে  যেহেতু ছাতার ব্যবহার বাড়ে  তেমনি কারিগরদের কাজ এবং  রেটও বাড়ে। এখানকার  দোকানীরা বড় বড়  কোম্পানির ছাতা স্টীকার ও হলোগ্রাম প্রিন্ট করে নিয়ে বিক্রি করে থাকেন। ফলে  ক্রেতারা প্রতারণার শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ছাতার কারিগররা জানান, প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। ফলে ছাতার কাপড়, হাতল, স্প্রিং, কামান প্রভৃতি জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে চড়াদামে। এছাড়া সারাবছরই বসে থাকতে হয়, এই সময়টায় কিছু কাজ হয়। এরা  বেশিরভাগই পৈত্রিক সূত্রে এ  পেশায় জড়িয়েছেন। এসব কারিগরদের অধিকাংশই জেলার বাহির থেকে আসে। এরা বাসা ভাড়া নিয়ে এসব কাজ করে আসছেন।

এখানকার ছাতার কারিগররা প্রতিদিন গড়ে ৩শ’ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। এরা বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করেন কিন্ত ব্যবহারকারীদের ভিজতে দেয়না। ছাতার কারিগরদের  কেউ  কেউ টাইকর বলে থাকেন।  যে ভাষায় বলা হোক। এরা ছাতার অসুখ- বিসুখ সারিয়ে  তোলেন। আর বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে সংসার চালান।