পাইকগাছায় ইউপি চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম তুলে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ! খুলনা / 
পাইকগাছায় চাঁদখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাজাদা মোঃ আবু ইলিয়াসের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ন ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে ইউপি সদস্য ফাতিমা তুজ জোহুরা রুপা গত ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রী, স্হানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে উপজেলার চাদখালী ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য ফাতিমা তুজ জোহুরা রুপা উল্লেখ করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাদা মোঃ আবু ইলিয়াস আমেরিকা প্রবাসী। তিনি নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন এবং নৌকা প্রতিক পোড়ানো মামলার চার্জশিট ভুক্ত আসামী (যার নং-জিআর ২৫০/২১) ।আর প্রতি তিন মাস পর পর তিনি ছুটি নিয়ে আমেরিকা যান। শাহাজাদা আবু ইলিয়াস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা অনিয়ম, অনাচার ও স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন। কোনো কাজই তিনি অনিয়ম ছাড়া করেন না। তিনি ওয়ার্ড সদস্যদের মূল্যায়ন না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। পরিষদের নির্ধারিত বাজেটের চিঠিপত্র দেখান না। প্রতি মাসে মাসিক মিটিং করার কথা থাকলে ও তিনি তা না করে ৩/৪ মাস পরে হঠাৎ করে সদস্যদের ডেকে মাসিক সভা করে সদস্যদের কাছ থেকে সহি স্বাক্ষর করে নেন।এতে কখন কি পরিমাণ বরাদ্দ আসে তা সদস্যদের জানানো হয় না। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি শেখ বাড়ির সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, কেউ তার কিছু করতে পারবে না আর তার কথামত সহি না করলে তিনি পরিষদে আসা বন্ধ করে দেবেন।যে কারনে অন্যান্য ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যান প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলতে বা করতে সাহস পাচ্ছে না। আর এমন ভাবে চলতে থাকলে পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের মান অক্ষুন্ন রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।তিনি স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পরিষদের সদস্যদের মধ্যে তার মনোনীত ৭নং ও ৯নং ইউপি সদস্য আর ইউপি সচিব কে সম্পৃক্ত করে নিজের ইচ্ছামাফিক বিভিন্ন কার্যক্রম করে থাকেন।তিনি ইউপি সদস্যদের সাথে অশালীন ব্যবহার করেন এবং তার মনোনীত ইউপি সদস্য ছাড়া অন্য কোন সদস্য কে উপজেলা পরিষদের কোন অফিসে যেতে দেন না।কারন বশতঃ কোন সদস্য উপজেলা পরিষদে গেলে তিনি জানা মাত্রই তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
ইউপি সদস্যদের পরিষদ থেকে ভাতার টাকা দেওয়ার কথা, তাও তিনি দেন না।প্রায় ২ বছর ধরে চেয়ারম্যান শাহাজাদা আবু ইলিয়াস স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ৪৭এর উপধারা (৩) নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও থোক সহ অন্যান্য সকল প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ বণ্টন এবং পরিষদের সিংহ ভাগ কাজ একক সিদ্ধান্তে বাস্তবায়ন করে আসছেন। ইউপি সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করে ইচ্ছেমত প্রকল্পের অর্থ বণ্টন করেন।ফলে সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য হয়েও রেশিও অনুযায়ী নির্ধারিত বরাদ্দ না পাওয়ায় জনগনের কোন প্রকার খেদমত করতে পারছি না। তাছাড়া তিনি ৭ ও ৯ নং ইউপি সদস্য আর সচিব কে দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে একক ভাবে পরিষদের সকল কিছু নিজের নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন এবং নির্ধারিত বাজেটের কোন বরাদ্দ কখন আসে তা আমাদের জানায় না, তবে বাজেটের বরাদ্দের কিছু অংশ যে সমস্ত ইউপি সদস্য তাকে তোষামোদ করে চলে তাদের সামান্য পরিমানে দেন। আমি নির্বাচিত হওয়ার প্রায় দুই বছরের শেষের দিকে অনেক কাকুতি মিনতির পর চেয়ারম্যানের নিজস্ব মাটি কাটার মেশিন ভেকু দিয়ে কাজের শর্তে আমাকে একটি কাজ দিলে ও সম্পূর্নটাই রেখেছেন তার নিজের নিয়ন্ত্রনে। এমনকি কাজের টাকা তুলে দিতে হয়েছে ইউপি সচিবের হাতে।
এছাড়া স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী সংরক্ষিত ইউপি সদস্য হিসেবে রেশিও অনুযায়ী আমার ভাগের স্লিপের মাল, রেশন কার্ড, গর্ভকালিন ভাতা, বিধবা ভাতা বয়স্ক ভাতা, ভিজিডি কার্ড, ভিজিএফ কার্ড সহ অন্যান্য সরকারি সকল বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করে তার গড়ে তোলা নিজস্ব বাহিনী ও একান্ত লোকদের দেওয়ার কারনে আমার নির্বাচনী এলাকাধীন জনগন তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।আর তিনি ৭ ও ৯ নং ইউপি সদস্য আর সচিব কে দিয়ে অফিস মেইনটেইন করেন এবং রেশন কার্ড, ভিজিডি কার্ড, ভিজিএফ কার্ড, গর্তকালিন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা ও পানির ট্যাংকির জন্য টাকা নেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগমের অফিসে গেলে তিনি খুলনা থাকায় সি এ হাবিবুর রহমান বলেন ,ডাক যোগে অভিযোগ পেয়েছি, স্যারের ডাক ফাইলে আছে।
চেয়ারম্যান শাহজাহান মোঃ আবু ইলিয়াস জানান, নিয়োম মোতাবেক সরকারী সকল সুযোগ-সুবিধা তাকে দেয়া হয়, তিনি পরিষদে আসেন না, আমি তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছি।