Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

মোরেলগঞ্জের ডাকবাংলো যেন জীর্নকুটির, যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা বাগেরহাট

মোরেলগঞ্জের ডাকবাংলো যেন জীর্নকুটির, যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা, দেশের বৃহত্তম উপজেলার একটি, বাংলাদেশের সর্বদক্ষিনে সুন্দরবনের কোলঘেষে পানগুছি নদীর পারে এই উপজেলার অবস্থান। ১৬ টি ইউনিয়ন ও ১ টি  পৌরসভা নিয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা গঠিত যার আয়তন ৪৩৮ বর্গকিলোমিটার। এই উপজেলা সদরে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে  অবস্থিত এই উপজেলায় একমাত্র বাগেরহাট জেলা পরিষদের ডাকবাংলোটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভবনের দেয়ালের অনেক স্থানে প্লাস্টার খসে পড়ছে। নেই কোন সাইনবোর্ড, বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এই জরাজীর্ণ ভবনটি কোন দপ্তরের । জেলা পরিষদের কেয়ারটেকার এই ভবনের একপাশে পরিবার নিয়ে বসবাস করে, এক কথায় আধুনিকতার এই সময়ে জেলা পরিষদের এই ডাকবাংলোটি এখন অনেকটা ব্যাবহারের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। 

জেলা পরিষদ অফিস সুত্রে জানা যায় মোরেলগঞ্জ সদরে ১৯৯৩ সালে এই ডাকবাংলো প্রথম স্থাপিত হয়।এরপর ২/১ বার কোনভাবে এটিকে সংস্কার করা হলেও গত কয়েক বছর এই ডাকবাংলোর আবাসিক কক্ষগুলো কোন সংস্কারের কাজ হয়নি।   

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেলো, ভবনের সামনে একটি সীমানা প্রাচীর রয়েছে তবে মূল ভবনটি জরাজীর্ণ। আর অযত্ন ও অবহেলায় ভবনের ভিতরে দেয়ালের মতই প্রাচীরের অবস্থা। কক্ষের ভিতরের আবাসিক বেডগুলো নড়বড়ে, বাথরুমের দরজা, কক্ষের জানালা ভাঙা। সংস্কারের অভাব ও বৃষ্টির পানিতে ভবনের দেয়াল ও প্রাচীর নষ্ট হয়ে গেছে। ভবনের সামনে পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা, তবে ডাকবাংলো প্রবেশের প্রধান গেইটটি বেশ মজবুত রয়েছে। উপজেলা গঠনের পর থেকে নির্মিত এ ডাকবাংলো ভবনটি ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে।  ডাকবাংলোর দায়িত্বে নিয়োজিত কেয়ারটেকার সাহেব আলী তরফদার ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনের পাশে কোনমতে বসবাস করছেন। এখানে আবাসিক কক্ষগুলোর বেহাল অবস্থা দেখে শহরাঞ্চল থেকে সরকারী, বেসরকারি কোন অতিথি আসলে তাদেরকে প্রাইভেট  হোটেলে থাকতে হচ্ছে। ফলে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, সংস্কারের অভাবে অযত্ন অবহেলায় অনেকটা  নাজুক অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দুর্ঘটনার আতঙ্কে ভবনে অতিথিরা কিংবা সরকারের কোনো কর্মকর্তা এসে থাকতে চান না।  অতিথিদের ব্যবহারের সোফা, বিছানাসহ পুরনো আসবাপত্রগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 

ডাকবাংলোর দায়িত্বে নিয়োজিত কেয়ারটেকার সাহেব আলী তরফদার বলেন, এই ভবনটি আমি ২৫ বছর ধরে দেখাশোনা করছি। এই বাংলোতে এখন আগের মতো অতিথিরাও থাকেন না। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোরেলগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত একজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, তিনি কিছুদিন আগে এই উপজেলায় যোগদান করেছেন,তার পরিবার বাড়িতে থাকে যার কারনে তাকে এখানে একা থাকতে হয়, পুর্বের কর্মস্হলে তিন ডাকবাংলোতে একটি কক্ষে ছিলেন, এখানে এসেও ডাকবাংলোতে থাকতে চেয়েছিলেন কারন এখানে থাকাটা নিরাপদ, কিন্তু ভবনের নাজুক অবস্থা দেখে তিনি বিব্রত, থাকার অনুপযোগী, তিনি বলেন এতো বড় একটি উপজেলায় ডাকবাংলোর চিত্র এমন কেন? তিনি ডাকবাংলোটি সংস্কার ও পুর্নঃনির্মানের দাবি জানান। 

এ ব্যাপারে বাগেরহাট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী ঝুমুর বালা বলেন ভবনটি সম্পুর্ন নতুনভাবে করা হবে, এই ভবন নির্মান ব্যায় বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, খুব শীগ্রই ভবনটি টেন্ডারের আওতায় আনা হবে।

ভবনটি সংস্কারের ব্যাপারে মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ  চেয়ারম্যান এ্যাডঃ শাহ-ই আলম বাচ্চু বলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে নতুন ভবন বরাদ্দের জন্য সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ ভবনটি স্থান অন্তর করে পুরানো উপজেলা পরিষদের সামনের দিকে একটা নতুন ভবন তৈরীর জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। 

এই বিভাগের অন্যান্য খবর