Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

বিশ্বব্যাপী পানিতে ডোবা প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ : পরিকল্পনামন্ত্রী জাতীয়

বিশ্বব্যাপী পানিতে ডোবা প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ : পরিকল্পনামন্ত্রী

“বাংলাদেশ পানিতে ডুবা প্রতিরোধে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিষয়টি আমাদের গর্বিত করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা মা ও শিশু মৃত্যুর হার যেভাবে কমিয়ে এনেছি, আশা করি একইভাবে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার শূন্যে নামিয়ে আনতে পারবো। সরকার এ জন্য সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।”

বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি একথা বলেন। বেসরকারি সংগঠন গণস্বাক্ষরতা অভিযান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতা সংস্থা গ্লোবাল হেল্থ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এম এ মান্নান এমপি বলেন, “সরকার ইতোমধ্যে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর বিষয়টি একটি বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে অধিকতর গুরুত্বারোপ করেছে। শিশু সুরক্ষার জন্য দেশব্যাপী এসব কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ইতোমধ্যেই একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে”।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আরমা দত্ত এমপি বলেন, “নারী ও শিশু কল্যাণে কাজ করার জন্য আমাদের সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৫ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৫ নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই শিশুমৃত্যু নিয়ে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জনে প্রতিরোধযোগ্য এ মৃত্যু কমানো জরুরি।”

সভায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ডা. এ. ই. মহিউদ্দিন ওসমানি বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশের ১৬টি জেলার ৪৫টি উপজেলায় ২০০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় দুই লক্ষ শিশুকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা হবে।

সভাপাতির বক্তব্যে গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, “এনজিওদের সম্পৃক্ত করে প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হলে একদিকে যেমন স্থানীয় কমিউনিটির অংশগ্রহণ বাড়বে, তেমনি কম সময়ের মধ্যে পুরো দেশে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে। আমরা আশা করছি দ্রুততর সময়ের মধ্যে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে প্রকল্প কার্যক্রম শুরু হবে।” সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবু বকর সিদ্দিক এবং গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর এর দক্ষিণ এশিয়া কর্মসূচির আঞ্চলিক পরিচালক বন্দনা শাহ্। অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর এর বাংলাদেশ এর কান্ট্রি লিড রূহুল কুদ্দুস।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, পানিতে ডুবে মৃত্যু সারা বিশ্বে আঘাতজনিত কারণে শিশুমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর তিন লাখ ৫৯ হাজার ৪০০ জন ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা যান। এদের ২০ শতাংশের বয়স পাঁচ বছরের কম। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হারে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম। বাংলাদেশে ১ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের মোট মৃত্যুর ৪৩ শতাংশের জন্য দায়ী পানিতে ডুবে যাওয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দেশে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এদের মধ্যে ৩২ জনই চার বছরের কম বয়সী। বছরে এ সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১২ হাজারে। এছাড়া পানিতে ডোবার কারণে আরো ১৩ হাজার শিশু স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করে। এক লাখ শিশু পানিতে ডোবার কারণে বিভিন্নভাবে আহত হয়।