সিলেটে বানভাসি মানুষ উদ্ধারে সেনাবাহিনী জাতীয় / 
সিলেটে বানভাসি মানুষকে উদ্ধার কাজে যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় সেনাবাহিনী নামানো হচ্ছে। শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন আন্তরিকভাবে কাজ করছে। যাঁদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে, তাঁদের আশ্রয়কেন্দ্রে নতুবা নিরাপদ স্থানে চলে আসতে বলা হচ্ছে। খাদ্যসংকট দূর করতে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ সহায়তা। সেনাবাহিনী দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু করবে।
জানা গেছে, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি সিলেটবাসী। মাত্র দুইদিনের ব্যবধানেই সিলেটের ১১টি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলের কারণে হুহু করে পানি বাড়ছে সিলেটে নগরীসহ সবকটি উপজেলায়। বেশির ভাগ এলাকার রাস্তাঘাট বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। দ্রুতগতিতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন সিলেটের বানভাসি মানুষ।
স্থানীয়দের মতে, গত বন্যায় ২০০৪ সালের সালের বন্যাকে অতিক্রম করেছে। আর এবারের বন্যা ১৯৮৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। অবস্থা এতই বেগতিক যে, মানুষ এখন আশ্রয়ও পাচ্ছেন না, বলে জানা গেছে। এছাড়া এসএসসি পরীক্ষার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আশ্রয় কেন্দ্র করা নিয়ে দোলাচলে রয়েছে প্রশাসন। ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন বানবাসীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় সিলেট নগরীর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আশ্রয় নিতে আসা অনেক লোকজন জড়ো হয়েছেন। তবে এসএসসি পরীক্ষার জন্য কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত থাকায় স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে স্কুলের সামনের বারান্দায়, ভ্যানগাড়িতে অবস্থান করছেন মানুষ।
এদিকে, চলমান ভয়াবহ বন্যার পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রবেশ করায় পুরো সিলেট অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নগরীর কুমারগাঁও ও বরইকান্দিতে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ করেছে। কুমারগাঁওয়ে জাতীয় গ্রিডের উপকেন্দ্রের মাধ্যমে পুরো সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ইতোমধ্যে কুমারগাঁওয়ের ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্রের সুইচ ইয়ার্ডে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বর্তমান ধারায় পানি বৃদ্ধি হতে থাকলে অচিরেই কন্ট্রোল রুমের ভেতরে পানি প্রবেশ করবে। তখন পুরো সিলেটের বিশাল অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী জানান, আগামী তিন-চার দিন অবিরত বর্ষণ অব্যাহত থাকবে। এভাবে টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটতে পারে।