দু’পক্ষের বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র থানায় জমা
ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আবারও সংঘর্ষ : নিহত ১, বাড়ি-ঘর ভাংচুর ফরিদপুর / 
ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রে করে ফের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য আলম মোল্লা ও সাবেক ইউপি সদস্য বাবর আলীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। বুধবার বিকেলে আছরের নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরার পথে অতর্কিত হামলায় দুলাল শিকদার (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা যায় বলে দাবি করেন নিহতের স্বজনেরা। নিহতের বাড়ি মুনসুরাবাদ গ্রামের মৃত্যু লালমিয়ার পুত্র বলে জানা যায়। তবে ভাঙ্গা হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎক ডাঃ মঙ্গনউদ্দিন সেতু জানান, হাসপাতালে আনার আগেই সে মারা গেছে, তার শরীলে কোন আঘাতের চিহ্ন নাই।
পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে ঐ এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষে দুই পক্ষের ৩০ জন লোক আহত হয়। এদের মধ্যে ১৬ জন ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। পরদিন বুধবার সকালে পুলিশের তৎপরতায় ও এলাকার চেয়ারম্যান সহ গন্যমান্য ব্যাক্তির প্রচেষ্টায় শান্তির লক্ষে উভয় পক্ষ বিপুল পরিমান ডাল, সুরকি, টেটা, কালি সহ দেশীয় অস্ত্র ভাঙ্গা থানায় জমা দেয়। বিকেলে ফের হামলার ঘটনায় দুলাল শিকদার মারা যাওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। পুলিশ এলাকা শান্ত করার চেষ্টা করছে।
নিহতের ছোট ভাই অহিদুল জানায়, আমার বড়ভাই আছরের নমাজ পড়তে মসজিদে যায়। নামাজ পড়ে ফিরার পথে বর্তমান মেম্বার আলম মোল্লার লোকজন আমার ভাইকে কিল, ঘুসি ও লাথি মারে, পরে সেখানে সে মারা যায়। মেজভাই ভাই সহিদুল ইসলাম জানায়, সরোয়ার মাতুব্বারের পুত্র, এমদাদ, এমরান, একরাম সহ আরো ১০/১৫ জন লোক আমার ভাইকে মারধর করলে সে মারা যায়।
উল্লেখ্য, গত ২৮ নভেম্বর ভাঙ্গায় ইউনিয়ন পরিষদ অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে হামিরদী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে আলম মোল্লা নির্বাচিত হন সাবেক ইউপি সদস্য বাবর আলী মেম্বারের সাথে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি আলম মোল্লার পক্ষের কয়েকজন লোক বাবর আলীর পক্ষে যোগ দেয়। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে গত কয়েকদিন যাবৎ উত্তেজনা ছিল। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে দিকে দুপক্ষ ঢাল, সড়কি, ইট ও লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বুধবার সকালে শান্ত থাকলেও বিকেলে আবারও উত্তপ্ত হয়ে হামলা চালায়, এতে একজন ঘটনাস্থলে মারা যাওয়ার সংবাদ ছাড়য়ে পড়লে বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুঠপাট করে। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছেন।
মঙ্গলবার সংঘর্ষে গুরুত্বর আহতরা হল- আলমগীর মোল্লা (৪১), হাসি বেগম (২৭), মজিবর রহমান (৫৫), ইদ্রিস মিয়া (৫৬), সাগর মোল্লা (৩০), শেখ নান্নু (৫০), চুন্নু ফকির (৬০), ফারুক মাতুব্বর (২৩), ইয়াছিন মাতুব্বর (৪২), একলাস মিয়া (৩২), শেখ মওদুদ আহমেদ (২২), মোঃ সোহেল (২৪), ইব্রাহীম মাতুব্বর (৩৮), আবু বক্কর (৬৫), লালন মাতুব্বর (২১), সরফুদ্দিন শেখ (৩৭) আহত অবস্থায় ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ওসি মোঃ সেলিম রেজা জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মঙ্গলবার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর বুধবার সকালে উভয় পক্ষ বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র ভাঙ্গা থানায় জমা দেয়। তখন পরিস্থিতি শান্ত ছিল কিন্ত বিকেলে আবার সংঘর্ষ বেধে যায়। তবে একজন মারা গেছে শুনেছি। কিভাবে মারা গেল ময়না তদন্তের পর বলা যাবে আসল রহস্য। এখন কোন অভিযোগ পাই নাই।