ছাতকে নির্বাচন পরবর্তি সহিংসতায় আহত অর্ধশতাধিক, আটক ২২ সুনামগঞ্জ / 
ছাতকে নিবাচন পরবর্তি সহিংসতায় দু’পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গুরুতর আহত অন্তত ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্র করতে ১০ রাউন্ড টিআরসেল এবং অন্তত ২০ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুঁড়েছে পুলিশ। সংঘর্ষে জড়িত থাকায় নব নির্বাচিত দু’ইউপি সদস্যসহ ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার সকালে উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের আমেরতল গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয় পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী বর্তমান চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ ও ৩য় স্থানে থাকা এড. মনির উদ্দিন একে অন্যের চাচাতো ভাই। এরা স্থানীয় এমপি মুহিবুর রহমান মানিকেরও চাচাতো ভাই বলে জানা গেছে। নির্বাচনে তাদের মধ্যে ছিল মর্যাদার লড়াই। এ হিসেবে দু’ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে গোষ্টির লোকজনও ছিল দু’ভাগে বিভক্ত। নির্বাচন চলাকালিন সময়ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিরাজ করছিল টান-টান উত্তেজনা। নির্বাচনী ফলাফল ঘোষনার পর থেকেই বিভিন্নভাবে একে-অন্যের বিরুদ্ধে কটুক্তি ও বিভ্রান্তকর বক্তব্য প্রচার করে আসছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও চলছিল পক্ষে বিপক্ষে উত্তপ্ত কথাবার্তা পোষ্ট করা। ফেইসবুকের এমনই এক স্ট্যাটাস নিয়ে রোববার রাতে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ বড় আকারে রূপ নেয়ার আগেই পুলিশ সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করে। রাতের ঘটনার জের ধরে সকালে লাঠি-সোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিল্লাল আহমদ ও মনির উদ্দিন পক্ষের লোকজন। দফায়-দফায় সংঘর্ষে ছাতক-জাউয়া সড়কের আমেরতল ও আশপাশের এলাকা পরিনত হয় রণক্ষেত্রে। সংঘর্ষে ব্যাপক ইট-পাটকেল, দা.বল্লম, লাঠি-সোটাসহ দেশীয় অস্ত্র ব্যবহৃত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে ১০ রাউন্ড টিআরসেল এবং ১৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। প্রায় দু’ঘন্টা দফায়-দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়।
গুরুতর আহত হায়দর আলী(৩৫), রুমান উদ্দিন(৩০), ছমরু মিয়া(৩৮), এবাদুর রহমান(২৮), নোমান আহমদ(২২), আক্তার হোসেন(২২), হানিফ আলী(৩৫), শরীয়ত আলী(৪৫), আমতর আলী(৩৫)সহ অন্তত ১৫ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িত থাকায় নব নির্বাচিত দু, ইউপি সদস্য সহ ঘটনাস্থল থেকে ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মোহাম্মদ আলী(৩৫), লায়েক(২৫), আনোয়ার(৩০), তারেক(২৫), শুকুর আলী(২৮), পয়ছল আহম(৪১), হোসাইন আহমদ, সমছু মিয়, দুলাল আহমদ, লোকমান, ফেলু মিয়া, ফরিদ উদ্দিন, শাওন, শফিকুর রহমান, এখলাছুর রহমান, সালেহ আহমদ সহ অন্যান্যদের ছাতক হাসপাতালে ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান আটকের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রন করতে ১০ রাউন্ড টিআরসেল ও ১৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।