Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

জামালগঞ্জ ইউএনও’র কাছে ৩৫ গ্রামবাসীর অভিযোগ, হাওরের কৃষকরা সংক্ষুব্ধ সুনামগঞ্জ

জামালগঞ্জ ইউএনও’র কাছে ৩৫ গ্রামবাসীর অভিযোগ, হাওরের কৃষকরা সংক্ষুব্ধ

সুনামগঞ্জে জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা চৌধুরী বাড়ির মাঠে ও হাওরে গজারিয়া বাজারে মাস ব্যাপী যাত্রাপালা ও সার্কাসের নামে অনৈসলামিক কাজ বন্ধের দাবীতে ৩৫ গ্রামের ১২৬ জন বিশিষ্ট মানুষের স্বাক্ষরীত লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত রবিবার জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা’র নিকট ইসলামী সমাজ কল্যান সংঘ’র সভাপতি মাওঃ এখলাছুর রহমানসহ উপজেলার ৩৫টি গ্রামের ১২৬ জন স্বাক্ষরিত এ লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাচনা চৌধুরী বাড়ির মাঠে সার্কাসের নামে অনৈসলামিক কার্যকলাপসহ বিভিন্ন ধরনের নৈতিকতা বিরোধী কাজরে জন্য বিশাল সামীয়ানার প্যান্ডল প্রস্তুতের কাজ প্রায় সম্পন্ন করছেন আয়োজকেরা। এতে এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষের বিশ্বাস ও অনুভুতিতে মারাত্মক আঘাত আনবে। যুব সমাজের নৈতিক চরিত্র ধ্বংসের প্রভাব, ছাত্রদের লেখাপড়ার অন্তরায়সহ মদ-জোয়ার আড্ডা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ অনেক অপকর্মের সৃষ্টি হবে। দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসরত এক ফসলী বোরো এলাকার কৃষকদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে। 

অভিযোগে আরো উল্লেখ, এ সব অবৈধ কাজ বন্ধ না হলে এলাকার মানুষ ফুঁসে উঠবে ও চরম উত্তেজনা সৃষ্টিসহ দাঙ্গা-হাঙ্গামার প্রবল আংশকা করা হচ্ছে। এতে পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতির দিকে যাবে আর এর জন্য আযোজকরাই দায়ী থাকবেন বলেও উল্ল্যেখ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইকবাল আল-আজাদ জামালগঞ্জ প্রতিবন্ধী সমিতি কে সহায়তার লক্ষে বিনোদন মুলক সার্কাস প্রদর্শন ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর ক্রয় বিক্রয় এরজন্য মাসব্যাপী সময় চেয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাববরে আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে ইকবাল তার সহযোগীদের নিয়ে সাচনা চৌধুরী বাড়ির মাঠে প্যান্ডেল নির্মান কাজ চালান দ্রæগতিতে। প্যান্ডাল নির্মানের খবর পেয়েই এলাকার লোকজন ফুঁসে উঠে সার্কস বন্ধের দাবীতে ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। 

প্রতিবন্ধী সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, অনৈসলামিক বা জোয়ার আড্ডা হলে আমাদের সহযোগীতার কোন প্রয়োজন নেই। আয়োজক কমিটির অন্যতম ইকবাল আল-আজাদ বলেন, আমরা প্রতিবন্দিদের সহায়তার জন্য স্বল্প শুভেচ্ছা মূল্যের টিকেটের বিনিময়ে একটা বিনোদন, শিশুদের নাগরদোলাসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী প্রদর্শনী ও বিক্রির আয়োজনের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবরে আবেদন করেছি। এর লভ্যাংশের অংশ টুকুই প্রতিবন্দিদের প্রদান করা হবে। কোন অবৈধ বা অনৈসলামিক কাজ করার যুক্তিকতা নেই। 

অপর দিকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতার নামে উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকায় মাস ব্যাপী যাত্রা প্রদর্শনের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রসাশকের অনুমতির জন্য আরেক টি আবেদন করেছে কিশোরগঞ্জ জেলার “নরসুন্দা অপেরা”র মালিক আনোয়ার হোসেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে হাওরের কৃষকরা সংক্ষব্ধ হয়ে পড়েন। 

জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার নামে অনুমতি চাইলেও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারসহ কেহ এ ব্যাপারে কিছুই জানেননা। এ ব্যাপরে উপজেলা মুক্তি যুদ্ধা সংসদ কমান্ডার এডঃ আসাদ উল্লাহ্ সরকার বলেন, আমাদের এক ফসলী এলাকা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বার বার ফসল হানীর কারনে কৃষকরা দিশেহারা। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার মওসুমে যাত্রপালা চল্লে এলাকার শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাগণ অসামাজিক কাজের উপার্যিত অর্থ আশা করিনা। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের যে সহযোগীতা করছেন এতেই আমরা বর্তান সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যা আলহাজ্জ্ব শামছুল আলম তালুকদার, ভাইস চেয়ারম্যান ও চার ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট যাত্রা ও মেলা বন্ধের জন্য জোর দাবী জানান। 

জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দিতে জেলা পুলিশ সুপার স্যারের একটি পত্র পেয়েছি। একই সাথে সার্কাসের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগের কপিও পেয়েছি। অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও যাচাই-বাচাই করে লিখিত একটি প্রতিবেদ পাঠাবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা বলেন, এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করতে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জকে দাযীত্ব দিয়েছি। তদন্তের পর আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে প্রতিবেদন পাঠাবো।     

এই বিভাগের অন্যান্য খবর