Opu Hasnat

আজ ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার ২০২৪,

নিষ্ক্রিয় প্রতিদ্বন্দিতায় রয়েছেন ৩ আ’লীগ নেতা

ছাতক পৌরসভায় নির্বাচনী আমেজ নেই রাজনীতিসুনামগঞ্জ

ছাতক পৌরসভায় নির্বাচনী আমেজ নেই

সুনামগঞ্জের ছাতক পৌরসভা নির্বাচনে কোন ধরনের উৎসাহ উদ্দীপনা ও নির্বাচনী আমেজ ভোটারদের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এবার দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন হলেও একমাত্র ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ছাড়া আর অন্য দলে প্রার্থী সংকট থাকায় নির্বাচনী আমেজ নেই বলে ভোটারদের ধারনা। 

এখানে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান, সাবেক জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মুনসিফ আলী সহ ৩টি বলয় থাকলেও বিএনপি হতে কোন দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করার মত প্রার্থী লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আসন্ন ছাতক পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী সংকট ও নির্বাচনী আমেজ না থাকায় এবারও ভাল অবস্থানে রয়েছেন বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম চৌধুরী। গত ১০ বছরে প্রথম শ্রেণীর এ পৌরসভায় চোখে পড়ার মত কোন উন্নয়ন কাজ না করলেও দুটি মেয়াদে পৌর মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে আসছেন তিনি। ভোটারদের ধারনা বিগত দিনে মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর কিছু আলোচিত সমালোচিত ঘটনার মধ্য যেমন ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর পৌর শহরে আ’লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে যুবলীগ নেতা মাসুদুর রহমান তালুকদার নিহত হওয়ায় নিজ মহল­ার বাসিন্দা সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন কে আসামী করায়, গত ২০ জুন গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টে মেয়রের গাড়ীতে হামলার দায়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুলের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে পৌর শহরে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে আবার নিজ উদ্যোগে ঘোষনা তুলে নেয়ায় এবং পারিবারিক বিরোধের জের থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে একটি সংবাদ মাধ্যমে আপন বড় ভাই শাহজাহান চৌধুরী আসন্ন পৌর নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রকাশ করায় কিছুটা তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়লেও হেভিওয়েট কোন প্রার্থী তার সাথে প্রতিদ্বন্দিতা না করায় আবারও তার বিজয় নিশ্চিত বলে ধারনা করছেন ভোটারা। 

মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী জানান, জন কল্যানে যেসব কাজ করেছি তার বিবেচনায় আমাকে আবারও পৌর নাগরিকরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে এবং দলীয় প্রতীক পাওয়ার বিষয়ে আমি আশাবাদী। প্রথম পৌর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও পৌরসভার তহবিল হতে পৌর ভবনের জন্য ভূমি ক্রয় করে দু’তলা ভবন নির্মান সহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করে ভোটারদের আস্থা অর্জন করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহিদ মজনু। এবারও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করতে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। নিজস্ব ভোট ব্যাংক আর পরিবর্তনের সুর থাকায় এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের সম্মতি জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের আশ্বাসে নৌকা প্রতীক বরাদ্দের নিশ্চয়তা পাওয়ায় আসন্ন পৌর নির্বাচনে বিজয় সুনিশ্চিত বলে ধারনা করছেন তার কর্মী ও ভোটাররা। 

আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহিদ মজনু জানান, আমি নির্বাচিত হলে আবারও ছাতক পৌরসভা কে একটি মডেল পৌরসভায় রূপান্তরিত করব। দলীয় প্রতীক নৌকা পাওয়ার বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী। জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা ঐসব প্রার্থীদের হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দিবেন না যারা কখনও নৌকায় ভোট দেয়নি। সংসদ সহ সব নির্বাচনে যারা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে ভোট দেয় তাদের হাতে নৌকা প্রতীক নিরাপদ নয়। গত পৌর নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্ধিতার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও এবার মেয়র পদে নির্বাচনী মাঠে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান চৌধুরী খোকন কে নির্বাচনী প্রচারনায় উৎসাহ না থাকলেও তিনি জানান আমি পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচনী লড়াই চালিয়ে যাব। 

সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ১ম সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন জানান, দলীয় প্রার্থী দেয়ার বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশনার আলোকে পৌর নির্বাচনে প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ পর্যন্ত উপজেলা ও পৌর বিএনপির দুটি বৈঠক হয়েছে কেন্দ্রের নির্দেশনা আসলে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী ও কাউন্সিলর পদে দলীয় সমর্থন দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। ছাতক পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ২৫,১৮৭ ভোটারদের মধ্যে ৪ জন প্রার্থীর মেয়র পদে নির্বাচনী লড়াইয়ে সর্বশেষ বর্তমান মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী ও আলহাজ আব্দুল ওয়াহিদ মজুনর মধ্যে তুমুল প্রতিদন্দিতা হতে পারে বলে ভোটারদের ধারনা। 

উলে­খ্য, গত ২০ নভেম্বর জাতীয় দৈনিক মানব জমিন পত্রিকায় এক প্রতিবেদনে পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর বড় ভাই শাহজাহান চৌধুরী আসন্ন পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীতা প্রকাশ করলে বিষয়টি পৌরসভার ভোটারদের মধ্যে টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়।