Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

খাগড়াছড়িতে আগ্রহ বেড়েছে করোনার টিকায়, ভ্যাকসিন নিতে উপচে পড়া ভীড় খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে আগ্রহ বেড়েছে করোনার টিকায়, ভ্যাকসিন নিতে উপচে পড়া ভীড়

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে কোভিট-১৯ প্রতিরোধ ভ্যাকসিন গ্রহনে করোনা টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। আর তাই চাই সমন্বিত উদ্যোগ। এমনটাই বলছেন সচেতন মহল। সরকার ৫ই জুলাই করোনার টিকা পেতে নিবন্ধনের বয়সসীমা ৩৫বছরে নামিয়ে আনে। সুযোগ পেয়েই নিবন্ধন করে ফেলেন সদরের বাসিন্দা সিকাতুল মুনিরা। তিনি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল কেন্দ্রে  টিকা নিতে গিয়েছিলেন। আধা ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।

সিকাতুল মুনিরা বলেন, তিনি টিকা আরও আগে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বয়সসীমার কারণে পারেননি। এবার টিকা নিতে পেরে তিনি অনেকটা স্বস্তি বোধ করছেন।

দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। একদিকে যেমন টিকার জন্য নিবন্ধন বাড়ছে, তেমনি কেন্দ্রে ভিড় বাড়ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষ টিকা নিচ্ছে। নতুন দিক হলো, পুরুষের পাশাপাশি নারীদের লাইনও আকার বড় হচ্ছে।

টিকাদান কেন্দ্র ঘুরে গতকাল দেখা যায়, টিকা নিতে গিয়ে মানুষকে কিছু ক্ষেত্রে সামান্য ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কিছু জায়গায় টিকা নেওয়ার পর বিশ্রামাগার না নিয়েই গ্রহীতা চলে যাচ্ছিলেন।

এদিকে বিধিনিষেধের মধ্যে যানবাহন না পেয়ে অনেকে টিকা নিতে যেতে ভোগান্তিতে পড়েন। রিকশা পেলেও ভাড়া দিতে হয় অনেকগুন বেশি। দেশে ৭ই ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান শুরু হয়। নারী ও পুরুষের লাইন প্রায় সমান। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকা নিচ্ছেন। আগে নারীর সংখ্যা কম দেখা যেত। এখন বাড়ছে। 

ঈদের ছুটির পর গত মংগলবার টিকা নিতে আসা মানুষের চাপ বেশি ছিল। বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা রাখা আছে। উপজেলাগুলোর মধ্যে কোথাও কোথাও টিকা নিতে মানুষের প্রচুর আগ্রহ দেখা গেছে। আবার কোথাও তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

একটি কেন্দ্রে করোনা টিকা নিতে যাওয়া মানুষের ভিড় দেখা যায়। তবে শৃঙ্খলা ছিল না। লাইনে দাঁড়ানোর অনুরোধ কেউ শুনছিলেন না। বসার চেয়ার না পেয়ে বয়স্কদের অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কেন্দ্রটিতে কোনো স্বেচ্ছাসেবী দেখা যায়নি।

আরতি রানী(৫৫) টিকা নেওয়া শেষে বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, টিকা নেওয়ার পর যে ৩০মিনিট বিশ্রাম নিতে হয়, তা তাঁর জানা নেই। কেউ তাঁকে জানায়নি।

এদিকে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ভ্যাকসিন গ্রহনে উপছে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) ললেন্দ্র লাল ত্রিপুরা জানান, মানুষের মাঝে কোভিট-১৯ প্রতিরোধ ভ্যাকসিন গ্রহনে ব্যাপক সাড়া পওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত কোভিট ভ্যাকসিন টিকা দেওয়া হচ্ছে। শনিবার (৩১ জুলাই ২০২১) ২৬৪জন লোক করোনা ভ্যাকসিন গ্রহন করেছেন। চলতি জুলাই মাসে মোট ১হাজার ৭শত ৫৬জন ভ্যাকসিন গ্রহন করেছেন।

হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, মহামারি করোনার ছোয়া পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (৩১ জুলাই ২০২১) ৭জনের করোনা টেষ্ট করা হয় তন্মধ্যে ৩জন করোনায় আক্রান্ত আছে। চলতি বছরের জুন ২০২১ জুলাই ২০২১পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগী ৯৩ জন পাওয়া গেছে। এদের মাঝে ৪৯জন রোগী সুস্থ্য হওয়ায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে বর্তমানে করোনা পজিটিভ ৪৪জন রোগী নিজ নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারান্টানে চিকিৎসাধীন আছেন। করোনায় সনাক্ত ১জন মৃত্যু বরন করেছেন। উপসর্গ নিয়ে আরো ৪জন মারা গেছেন।

পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মকর্তা ডা: অনুতোষ চাকমা জানান, এলাকার মানুষের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা এসেছে। এলাকাবাসীর সাগ্রহে টিকার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করে টিকা দিচ্ছেন। তবে দুর্গম এলাকার জনগন এখনো করোনা ভ্যাকসিনের সুবিধা নিতে পারছেনা।