নড়াইলের বোড়ামারা গ্রাম পুরুষ শূণ্য! নড়াইল / 
নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের বোড়ামারা গ্রাম পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়েছে। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে ও আতংকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এ গ্রামের পুরুষেরা। কোন পুরুষ মানুষ বাড়ি না থাকায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বাড়িতে থাকা মহিলারা। অনেকে জীবন ও মালের নিরাপত্তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
নড়াইল সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, ১৩ জুলাই বিকালের দিকে বোড়ামারা এলাকায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি, আটক ও মারপিট সহ বেআইনী জোটবদ্ধ হয়ে সরকারি কাজে বাঁধাদান, সরকারি কর্মচারীর উপর বেআইনী বল প্রয়োগ ও সরকারি গাড়ী ভাংচুর করে ক্ষতিসাধন করার ঘটনায় ওই দিন রাতে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন- নড়াইল পৌরসভার দুর্গাপুর গ্রামের মারুফ হাসান (২৪) এবং ডুমুরতলার এনামুল হাসান (৩১), শফিকুল ইসলাম (৩২), কামাল (৩০), অলিপ (২৫), ফুরকান (২৪), নাজমুল হাসান মাহিম (২২), রঘুনাথপুরের বাদশা মিয়া (৪০), সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের বোড়ামারা গ্রামের সবুর ভুইয়া (৫০), জিসান (১৯), হাবিবার শিকদার (৩৫), শহর আলী (৪৫), শাজাহান (৫০), কামাল মোল্যা (৫০) সহ অজ্ঞাত ২০০/২৫০ জন।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সরজমিন বোড়ামারা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ওই এলাকার কোন পুরুষ মানুষ বাড়িতে নাই। এমনকি রাস্তার পাশের সকল দোকান বন্ধ। কোন দোকানের সামনেও কোন মানুষ নেই। মহিলা ও শিশুদের চোখে মুখে আতংকের ছাপ। তারা জানান, গত ১৩ জুলাই নড়াইল পৌরসভার দুর্গাপুর ও ডুমুরতলা এলাকার কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল যুবক বোড়ামারা গ্রামে এসে বিনা উস্কানিতে পথচারীদের মারপিট করে। এ নিয়ে এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া করে একজনকে আটকে মারপিট করে। আটক ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিতে দুর্গাপুর ডুমুরতলা এলাকা হতে আরোও কিছু যুবক সেখানে যায়। এরই মধ্যে ঘটনার সংবাদ পেয়ে আইনশৃংখলা রক্ষায় তাৎক্ষনিক পুলিশ টিম সেখানে পৌছালে অতি উৎসাহি কিছু লোক পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু করে। এক পর্যায়ে অনাকাংখিত ভাবে ধস্তাধস্তি হয়। এ ঘটনায় পুলিশ মামলা করলে গ্রেফতার আতংকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে বোড়ামারা গ্রামের পুরুষেরা। একেবারে বয়োবৃদ্ধ দু’একজন বাড়িতে আছেন। তবে তারা ভয়ে মুখ খুলতে চাননি। ঈদ সামনে রেখে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছেন বাড়ির মহিলা ও শিশুরা। অনেকেই এমন পরিস্থিতিতে চোর ডাকাত আতংকে ভুগছেন।
এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানার ওসি শওকত কবীর জানান, অহেতুক কাউকে হয়রানি করা হবে না। তবে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক আইনের কাঠগড়ায় দাড় করানো হবে।
এলাকার শান্তিপ্রিয় সচেতন জনগন প্রকৃত অপরাধিদের গ্রেফতার পূর্বক বিচারের আওতায় নেয়ার পাশাপাশি নিরীহ লোকজন যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে গ্রামে বসবাস করতে পারে সে জন্য পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।