Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

কালকিনিতে যৌতুকের দাবিতে হতদরিদ্র গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ মাদারীপুর

কালকিনিতে যৌতুকের দাবিতে হতদরিদ্র গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ

মাদারীপুরের কালকিনিতে যৌতুকের দাবিতে নাছিমা বেগম(২৮) নামে এক হতদরিদ্র গৃহবধুকে অমানসিক নির্যাতন চালিয়েছে  মাদকাসক্ত স্বামী ও দেবর। এ নির্যাতন সইতে না পেরে ওই গৃহবধু তার দুই শিশু সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে এখন আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে যৌতুকলোভী স্বামীর বিচারের দাবিতে মানুষের দ্বারে-দ্বারে ঘুরে সঠিক বিচার পাচ্ছেনা নির্যাতিতা ওই গৃহবধু। শুক্রবার দুপুরে মামলা সুত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

মামলা ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার কাজীবাকাই এলাকার দক্ষিন মাইজপাড়া গ্রামের দিনমজুর আবুল হোসেনের মেয়ে নাছিমার সঙ্গে উত্তর ভাউতলী গ্রামের লতিফ হাওলাদারে মাদকাসক্ত ছেলে আলামীন হাওলাদারের প্রায় ৮বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে ৬ বছরের একটি কন্যা ও তিন বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু এরপরই আলামীন হঠাৎ করেই মাদকাসক্ত হয়ে বিপথে চলে যায়। তাকে মাদক সেবনে বাঁধা দিলে নাছিমাকে হতে হয় নির্যাতনের শিকার। এছাড়া বর্তমানে আলামীন ও তার পরিবারের লোকজন মিলে বিভিন্ন সময় দুই লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে নাছিমাকে চাঁপ প্রয়োগ করে আসছে। কিন্তু নাছিমার পরিবার হতদরিদ্র হওয়ায় এ যৌতুকের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়। এতে করে নাছিমার দুই হাত বেধে চুলের মুটকি চেপে ধরে বিবস্ত্র করে বেদম মারধর করে আলামীনও তার ভাই রুবেল হাওলাদার। এ নির্যাতন সইতে না পেরে দুই সন্তান নিয়ে স্বামীর বাড়ি ছেরে রাতের আধারে পালিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন নাছিমা বেগম। তবে ঘটনার পর থেকেই আলামীন গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ঘটনায় নির্যাতিতা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে মাদীপুর কোর্টে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করেন।

নির্যাতিতা গৃহবধু নাছিমা অভিযোগ করে বলেন, আমাকে মারধর করে যৌতুকের টাকা না পেয়ে আলামীন আবার গোপনে বিয়ে করেছে। আমি মামলা করেছি কিন্তু অর্থের অভাবে মামলা চালাতে পারছিনা। আর থানায় গেলে তারা কোন আমার অভিযোগ আমলে নেয় না। আমি এখন কোথায় গেলে সঠিক বিচার পাব।

নাছিমা বেগমের বাবা আবুল হোসেন কান্নাজরিত কন্ঠে বলেন, মেয়ের সুখের জন্য আমার একমাত্র সম্বল ৬শতাংশ জমি বিক্রি করে জামাইকে দিয়েছি। আমার এক চালা ঘরের উপর একটি সৌরবিদ্যু লাগানো ছিল সেটিও খুলে জামাইকে দিয়েছি। তারপরও মেয়ের সুখ হলোনা। আমি বৃদ্ধ মানুষ নিজেই না খেয়ে দিন পার করি, তারপর মেয়ে ও নাতিদের আমি কিভাবে খাওয়ে বাচাবো। ফের দুই লাখ টাকা আমি পাব কই।

এ বিষয় অভিযুক্ত স্বামী আলামীন হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোনের সুইচ বন্ধ পাওয়া যায়।

কাজীবাকাই ইউপি চেয়ারম্যান নুরমোহাম্মদ বলেন, আলামীন মাদকাসক্ত এবং সে একজন গাজাখোর।

এ ব্যাপারে উপজেলার ডাসার থানার ওসি হাসানুজ্জামান বলেন, এ বিষয় থানায় কোন অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে।