রাজবাড়ীতে গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহে পাট চাষিরা বিপাকে
খড়ার কারনে পাটক্ষেতে বিছা ও ছটকা পোকার আক্রমন কৃষি সংবাদ /  রাজবাড়ী / 
গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহে রাজবাড়ীর পাট চাষিরা পরেছেন বিপাকে। খড়ার কারনে বেরে উঠছে না পাট। এর উপর পাটক্ষেতে দেখা দিয়েছে বিছা ও ছটকা পোকার আক্রমন। পাট চাষিরা বলছেন এ বছর বৃষ্টি না থাকায় মেশিন দিয়ে পানি দিতে গিয়ে খরচ হচ্ছে কয়েকগুন এর উপর পোকার আক্রমন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন তারা।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রাজবাড়ীর মাটি পাট চাষ উপযোগি হওয়ায় গত বছর জেলায় ৪৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হলেও এ বছর রাজবাড়ী জেলায় ৪৭ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। বেরেছে ৩০ হেক্টর জমির আবাদ।
মঙ্গলবার সকালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ভাটি সুলতানপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মাঠের পর মাঠ পাট আবাদ হয়েছে। কিন্তুু বৃষ্টি না থাকার কারনে পাটক্ষেতে মেশিন দিয়ে পানি দিচ্ছেন কৃষকেরা।
এ সময় সুলতানপুর ইউনিয়নের ভাটি সুলতানপুর এলাকার কৃষক নিতাই চন্দ্র রায় বলেন, আশা ছিলো এ বছরের পাট বিক্রির টাকায় ঘুরবে আমার ভাগ্য। কিন্তুু পাট নিয়ে চিন্তায় এখন রাতে ঘুমই আশে না। স্বাভাবিকভাবে এই সময়ে ক্ষেতের প্রতিটি পাট অন্তত ৩ ফুট লম্বা হওয়ার কথা থাকলেও পাট হামাগুরি খাচ্ছে মাটিতেই। প্রচন্ড খড়ার কারনে মেশিন দিয়ে পানি দিয়েও হচ্ছে না কোন লাভ উল্টো পাট ক্ষেতে আঘাত হেনেছে বিছা ও ছটকা পোকা।
শুভ কুমার বৈদ্য নামে অপর কৃষক জানান, মেশিনে সেচ দিয়ে পাট চাষ করতে গিয়ে বিঘা প্রতি অন্তত ২ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। যে কারনে লোকসানের আশঙ্কা করছে তারা। তাছাড়া পোকার আক্রমনের কারনে লাভ তো দুরের কথা আসল উঠানোই কষ্ট হয়ে দারাবে। এ ব্যপারে পরামর্শ দেওয়ার জন্য কোন কৃষি কর্মকর্তাকে খুজে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কৃষক ইব্রাহিম মোল্লা জানান, এক বিঘা জমির পাট আবাদ করতে প্রতি বছর ১২ হাজার টাকা খরচ হলেও এ বছর চারবার বাড়তি সেচ দিতে হয়েছে যে কারনে খরচ হয়েছে বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা। এর উপর বাজারে ভালো দাম নেই যে কারনে কৃষক এবার মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এ ব্যাপারে রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ বাহাউদ্দিন সেক বলেন, বৃষ্টি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে পাটের ক্ষতি হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই পাট বেরে যাবে। আর পোকার আক্রমনরোধে প্রয়োজনে কিটনাশক ব্যাবহারের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে উপ সহকারী কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকের খোজ নিচ্ছেন বলে দাবী করেন তিনি।