Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী আর নেই বিনোদন

একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী আর নেই

একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকগানের শিল্পী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ইন্দ্রমোহন রাজবংশী আর নেই। বুধবার (৭ এপ্রিল) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক‌্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

এ তথ‌্য নিশ্চিত করে গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর বলেন, ‘সকাল ১১টায় রাজবংশী (ইন্দ্রমোহন রাজবংশী) মারা গেছেন। আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আমরা এক অমূল্য রত্মকে হারালাম।’

গত ১ এপ্রিল বুকে ব্যথা অনুভব হলে তাকে মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করানো হলে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এছাড়া তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে। এর পর তাকে রাজধানীর মালিবাগের প্রশান্তি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক‌্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানান ফকির আলমগীর।

ইন্দ্রমোহন রাজবংশী বাংলাদেশি লোকগানের শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, জারি, সারি, মুর্শিদি ইত্যাদি গান করতেন। ইন্দ্রমোহন রাজবংশী সংগীত কলেজে দীর্ঘদিন লোকসংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৬৭ সালে ‘চেনা অচেনা’ চলচ্চিত্রের গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন। চলচ্চিত্র, বেতার, টেলিভিশনে অনেক গান গেয়েছেন তিনি।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে ইন্দ্রমোহন রাজবংশী যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য মনস্থির করেন। কিন্তু পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়ায় সম্মুখ যুদ্ধে যেতে পারেননি তিনি। পাকিস্তানিরা সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করায় ইন্দ্রমোহন রাজবংশী নিজের নাম পরিচয় গোপন করে পাকিস্তানিদের দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন কিছুদিন। পরবর্তীতে সেখান থেকে চলে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গান গাওয়া শুরু করেন।

ইন্দ্রমোহন রাজবংশী গান গাওয়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকগান সংগ্রহ করতেন। এক হাজারের বেশি কবির লেখা কয়েক লাখ গান সংগ্রহ করেছেন। ইন্দ্রমোহন রাজবংশী সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন।

ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর স্ত্রীর নাম দীপ্তি রাজবংশী, পুত্র রবীন রাজবংশী ও মেয়ে প্রবাসী। তারা নিজেরাও লোকগানের সঙ্গে জড়িত।

ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর জন্ম ঢাকায়। তিনি সংগীত কলেজে লোকসংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। বাংলাদেশ লোকসংস্কৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। চলচ্চিত্র, বেতার ও টেলিভিশনে অনেক গান করেছেন ইন্দ্রমোহন রাজবংশী।