করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির মৃত্যু
খাগড়াছড়িতে ঢিলেঢালা লকডাউন, জনসচেতনতায় পানছড়ির ইউএনও-ওসি খাগড়াছড়ি / 
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে দ্বিতীয় ধাপে করোনার সংক্রমণের ঢেউ সামলাতে সরকার সারাদেশের সাথে সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে ৭দিনের লকডাউন দিলেও জেলা শহরে পালিত হচ্ছে ঢিলেঢালা ভাবে। আন্ত:প্রধান সড়কের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অলিগলির দোকানপাট খোলা রয়েছে আগের নিয়মে। সামাজিক ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে সাপ্তাহিক হাটবারকে ঘিরে বসতে দেখা গেছে হকারদের। তবে ম্যাজিষ্ট্রেট গাড়ি তহল অব্যাহত দেখা গেছে। ক্রেতাদের অনেকে মাস্ক পরলেও বিক্রেতারা এ ক্ষেত্রে উদাসীন। জেলায় এখনও পর্যন্ত সংক্রমণের হার কম থাকলেও এভাবে চলতে থাকলে ভয়াবহ হওয়ার শঙ্কা করছেন অনেকে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, স্বাস্থ্যবিধি না মানায় রোববার জেলার বিভিন্ন স্থানে ১২২জনকে অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। প্রতিদিনই চলছে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একইভাবে সরকার ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিনে জনসচেতনতায় কাজ করছে পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও ওসি মো: দুলাল হোসেন। সোমবার (৫ এপ্রিল) সকাল থেকেই পানছড়ি বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় তারা প্রচারণা চালিয়েছেন। পানছড়ি থানার পুলিশ সদস্যরা মাইক হাতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধোয়া ও মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে মাস্ক বিতরণ করেন। হাতে হাতে পৌঁছে দেয়া হয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার গুরুত্বপূর্ণ লিপলেট।
ওসি জানান, সরকারী নির্দেশনাগুলো প্রতিপালন করতেই মানবিকভাবে কাজ করছে পুলিশ।
ইউএনও জানান, লকডাউনের প্রথম দিনের সকাল থেকেই বাজার উন্নয়ন কমিটি নিয়ে প্রচারণা করা হয়েছে। এগার দফা নির্দেশনা পালনে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে কোথাও কোথাও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। নির্দেশনা মোতাবেক দফাগুলো শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির মৃত্যু হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মো: শাহাজ উদ্দিন। (ইন্না-রাজিউন)। তিনি রোববার রাত ১১:৫০মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে তেজগাঁও ইমপালস হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি ছিলেন। পরে তার করোনা নেগেটিভ আসে। তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাকে চাঁদপুরে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। মো: শাহাজ উদ্দিন সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৮৬-১৯৮৭সালে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। মো: শাহাজ উদ্দিন খাগড়াছড়ি জেলা জাতীয় পাটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন দীর্ঘদিন। বাঙালিদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনেও মো: শাহাজ উদ্দিনের ভূমিকা ছিল। তিনি ছিলেন, বাংগালীদের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম কৃষক-শ্রমিক-জনতা পরিষদ ও “পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন” সংগঠনের আহবায়ক। আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি কারাভোগও করেছেন।
মো: শাহাজ উদ্দিনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও মরহুমের শোকসন্তুুপ্ত পরিবারে প্রতি সমবেদনা সমবেদনা জানিয়েছে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের মুহাম্মদ, খাগড়াছড়ি রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সভাপতি চাইথোয়াই মারমা ও খাগড়াছড়ি টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এইচএম প্রফুল্ল।