Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

নগরকান্দার পৌর নির্বাচনে সুক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ ৪ মেয়র প্রার্থীর ফরিদপুর

নগরকান্দার পৌর নির্বাচনে সুক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ ৪ মেয়র প্রার্থীর

ফরিদপুরের নগরকান্দার পৌর নির্বাচনে সুক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ এনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থী। উক্ত পৌরসভার পুনরায় নির্বাচন দাবীতে বুধবার ৪ জন মেয়র প্রার্থীর পক্ষে সাধারণ জনগণ, সমর্থক ও ভোটারদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারী তারিখে অনুষ্ঠিত হয় ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলাধীন পৌরসভার নির্বাচন। এই নির্বাচন প্রকাশ্যে সুষ্ঠ হয়েছে কিন্তু সুক্ষ্ম কারচুপিও করা হয়েছে এমন বহু অনিয়মের অভিযোগ এনে ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখান করে তদন্ত পুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে পুনরায় নির্বাচন দেওয়ার দাবি করছেন এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ৪ জন মেয়র প্রাথী। 

এরা হলেন, মোঃ মাসুুদুর রহমান মাসুদ (জগ প্রতিক), কামরুজ্জামান মিঠু (মোবাইল প্রতিক), আরিফ আহমেদ বিপ্লব (ইস্ত্রী প্রতিক), মনিরুজ্জামান তুহিন ( চামচ প্রতিক)। এই ৪ জন মেয়র প্রার্থী গত ২২ ফেব্রুয়ারী নগরকান্দা রিটার্নিং অফিসার বরাবর ৪ জনের স্বাক্ষরিত একটি টাইপ করা অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন নিয়ে ১৪ টি অভিযোগ এনে অভিযোগের কারণও তুলে ধরছেন। দাখিলকৃত অভিযোগে বলা হয়, ভোট গননাকালীন ফলাফল ও ঘোষিত ফলাফলের ব্যাপক অসামাঞ্জস্যতা হয়েছে। ভোট গণনা শেষে প্রতিটি কেন্দ্রের পোলিং এজেন্টের ফলাফল সরবরাহ করা হয়নি। রেজাল্ট শীটে পোলিং এজেন্টদের কোন স্বাক্ষর গ্রহন করা হয়নি। দু'একটি কেন্দ্রে ভোট শুরুর সাথে সাথেই পোলিং এজেন্টদের রেজাল্ট শীটে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে পছন্দ সই প্রার্থীর পক্ষে একশোর অধিক ব্যালট পেপারে শীল মেরে বাক্সে ঢোকানো হয়। ৩ নং কেন্দ্রে ভোট গ্রহনের সময় প্রিজাইডিং অফিসার দুটি ব্যালট বই সরবরাহ করেন, তাতে প্রতি বইতে ১৪/১৫ টি করে ব্যালট পেপার ছিলো বলে উল্লেখ করা হয়। ৪ নং কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার কোন বিশেষ প্রার্থীর পক্ষে প্রায় ৩ শত ব্যালট পেপার বাক্সে ঢুকিয়ে রাখার অভিযোগ করেন। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনার রেজাল্ট এর সাথে প্রিজাইডিং অফিসারের তৈরীকৃত রেজাল্ট শীটে কোন মিল না পেয়ে উপস্থিত পোলিং এজেন্টদের কোন অভিযোগও আপত্তি আমলে নেয়া হয়নি। তদরুপ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যে সুক্ষ কারচুপির কথা উল্লেখ করে বাস্তব কিছু কেন্দ্রের ভোটের তথ্য ও তুলে ধরা হয়। ৫ নং কেন্দ্রে মোট ভোট কাস্ট হয়েছে ৬১৪ টি ভোট। কিন্তু প্রিজাইডিং অফিসার রেজাল্ট শীটে দেখান ৭১৪ ভোট। পরে স্ব স্ব মেয়র প্রার্থীর এজেন্টরা সকল অনিয়মের প্রতিবাদ করলে এদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়। এমন কি তাদের রুমের মধ্যে আটকিয়ে রেখে পরে রেজাল্ট শীটে এজেন্টদের স্বাক্ষর না নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। ৮নং কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের সামনে যে ভোট গননা করা হয় এবং ঘোষণা করা ফলাফলে কম দেখানোরও অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগের ৯/ঝ ক্রমিকে উল্লেখ করা হয় যে সব ভোটারা মৃত এবং বিদেশে থাকেন তাদেরও ভোট গ্রহন দেখানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে উক্ত ৪ জন মেয়র প্রার্থী সকল ভোট কেন্দ্রে মৃত ভোটার ও প্রবাসী ভোটার নং দেখে তাদের সই ও টিপ যাছাই করার কথা উল্লেখ করা হয়। উল্লেখিত সকল অভিযোগ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালনকারী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানালেও অভিযোগকারী ৪ জন মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ আমলে নেননি বলে উল্লেখ করা হয়। 

সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচন শেষ হয়েছে ৭ দিনের অধিক সময় পার হয়েছে তারপরও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কোন রেজাল্ট শীট এখন পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়নি। এই নির্বাচন প্রত্যাখান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করে অভিযোগের কপি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঢাকা, জেলা প্রশাসক ফরিদপুর, পুলিশ সুপার ফরিদপুরগণকে অবগত করানো হয়েছে। 

উল্লেখ্য, নগরকান্দার পুনরায় সুষ্ঠু নির্বাচন দাবী করে বুধবার সকাল ১০ টায় উল্লেখিত ৪ জন মেয়র প্রার্থীর সমর্থক ও সাধারণ কর্মীরা নগরকান্দায় একটি মানববন্ধন করবে বলে জানা গেছে।