Opu Hasnat

আজ ২৪ এপ্রিল বুধবার ২০২৪,

জামালগঞ্জে আলোচিত কৃষক কাশেমের খুনীদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সুনামগঞ্জ

জামালগঞ্জে আলোচিত কৃষক কাশেমের খুনীদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

বাচ্চাদের ব্যাডমিন্টন  খেলা ও বিদ্যুৎ বিলের ৫০ টাকা পাওনা নিয়ে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের পলক (শান্তিপুর) গ্রামের নিরীহ কৃষক আবুল কাশেমকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা ও তার পরিবারের আরো ৭জনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ৫জনসহ বাকি আসামীদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১টায় উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নবাসীর আয়োজনে বিভিন্ন পেশার হাজারো লোকজনের উপস্থিতিতে সাচনা বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

স্থানীয় মুরুব্বী খুরশেদ আলমের সভাপতিত্বে ও মাওলানা আলী আকবরের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন, জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মো. শহীদ মিয়া, সাচনাবাজার উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রজব আলী, সাচনাবাজার ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান, ইউপি সদস্য মো. মানিক মিয়া, ক্রীড়া শিক্ষক মো. আক্তার হোসেন,আওয়ামীলীগ নেতা আর্শ্বাদ আল আজাদ,আবুল কামাল আজাদ, মাষ্টার মো. আব্দুল হান্নান, মোহাম্মদ আলী কালা মিয়া, সুলেমান মিয়া, সাবেক ইউপি সদস্য মো. সফর আলী, নিহতের সন্তান বিজিবির সদস্য মো. আল আমীন ও আসাদ উল্ল্যাহ প্রমুখ।  

বক্তারা বলেন গত ১৭ জানুয়ারী সকালে সাচনাবাজার ইউনিয়নের পলক (শান্তিপুর) গ্রামের মাঠে বাচ্চাদের ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে এবং পলক গ্রামের ইসরাইল মিয়ার ছেলে, সন্ত্রাসী শাহানুর মিয়া, তার ভাই লালসাদ, মৃত আজর আলীর ছেলে ইসরাইল মিয়া, আবনুর, ইসমাইল গংদের নিকট বিদ্যুৎ বিলের পাওনা ৫০ টাকা কৃষক আবুল কাশেম চাইলে কথা কাটাকাটি হয়। এই ঘটনায় ৩০/৪০জনের সন্ত্রাসীরা ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কৃষকের বাড়ির সামনের গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে কৃষক আবুল কাশেমকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং আরো ৬জনকে গুরুতর আহত করেন। তারা এই জামালগঞ্জ উপজেলায় এমন হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবী করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ৬জনকে গ্রেপ্তার করলেও বর্তমানে একজন জামিনে রয়েছেন। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক ফাঁসির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ সুপারের নিকট দাবী জানান। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল সাচনাবাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।

উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারী ২০২১ সালে সকালে সাচনাবাজার ইউনিয়নের পলক(শান্তিপুর) গ্রামের মাঠে বাচ্চাদের ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে এবং পলক গ্রামের ইসরাইল মিয়ার ছেলে, সন্ত্রাসী শাহানুর মিয়া, তার ভাই লালসাদ, মৃত আজর আলীর ছেলে ইসরাইল মিয়া, আবনুর, ইসমাইল গংদের নিকট বিদ্যুৎ বিলের পাওনা ৫০ টাকা কৃষক আবুল কাশেম চাইলে কথা কাটাকাটি হয়। ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়  পলক গ্রামের সন্ত্রাসী শাহানুর লালসাদ গংদের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন সন্ত্রাসীরা চাইনিজ কুড়াল, ছুড়া ও রামদা নিয়ে কৃষক আবুল কাশেমের পলক (শান্তিপুর) গ্রামের বাড়ির সামনের গ্রিল কেটে বসতঘরে প্রবেশ করে কৃষক আবুল কাশেমের পেঠে পিঠে ছুড়া ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে দেহটা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে গুরুতর আহত করে। এছাড়াও কৃষকের সহধর্মিনী মালেকা বেগম(৫০), ছেলে বিল্লাল(২২), হেলাল মিয়া(২৬), মেয়ের দিকের দুই নাতনী সাদিয়া(১৪) ও নাদিয়া(১৬) কুপিয়ে আহত করেন। তাৎক্ষনিক স্বজনরা তাদেরকে উদ্ধার করে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কৃষক আবুল কাশেমসহ ৪জনের অবস্থা আশংঙ্কাজনক হওয়ায় রাত ১০টায় তাদেরকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সিলেটে দীর্ঘ ২২দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে গত ২৩ জানুয়ারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাছাড়া নিহতের ন্ত্রী মালেকা বেগম, ছেলে বিল্লাল মিয়া ও হেলাল মিয়া সলেটে চিকিৎসাধীন থাকলে ও তারা পঙ্গু হয়ে যাবেন বলে স্বজনরা জানান। 

ঘামলার ঘটনায় পরের দিন গত ১৮ জানুয়ারী নিহতের ভাতিজা মোবারক হোসেন বাদি হয়ে পুলকগ্রামের হামলাকারী শাহানুর, তার ভাই লালসাদ, পিতা ইসরাইল, চাচা ইসমাইল, আবনুরসহ ৭জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা সহ মোট ১৮জনকে আসামী করে জামালগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের পর ৬জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এরমধ্যে একজন জামিনে থাকলেও বাকি আসামীরা এখনো পলাতক রয়েছেন। 

এই বিভাগের অন্যান্য খবর