ক্যাম্পস’র একুশে মেডিকেল ক্যাম্পে সহস্রাধীক রোগীর চিকিৎসা সেবা স্বাস্থ্যসেবা / 
প্রায় এক হাজারের অধিক চিকিৎসাবঞ্চিত রোগীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরামর্শ প্রদান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ঔষধ সরবরাহ করেছে স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীসংস্থা কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনটি, ক্যাম্পস, বিগত ১৬ বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরেও টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানার হাতিবান্ধা গ্রামের তালিমঘর প্রাঙ্গণে ‘ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প’ এর মাধ্যমে অসহায় রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে, টাঙ্গাইল ও এর পাশ্ববর্তী অঞ্চলের দরিদ্র গ্রামবাসীগণের রোগ নির্ণয়ের জন্য রক্ত, প্রস্রাবসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয় এবং ২১শে ফেব্রুয়ারির দিন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞসহ প্রায় ২০ জনের অধিক চিকিৎসক, দিনব্যাপী রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র প্রদানসহ বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান করা হয়। এছাড়াও দিনব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, “কিডনি সুস্থ রাখার উপায়” শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় কিডনি বিষয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাম্পস এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধানঅধ্যাপক ডাঃ এম এ সামাদ।
এবছরের বিশ^ কিডনি দিবসের প্রতিপাদ্যের আলোকে তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকশই করতে হলে, চিকিৎসা ব্যয় কমানো যায় সচেনতার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করে। আর সেই লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে সফল হতে হলে, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কিডনি রোগের প্রাদূর্ভাব নিয়ন্ত্রণে সরকারী, বেসরকারী এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সমূহকে সমন্বিত উদ্যোগ ও কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে এবং সরকারি তত্ত্বাবধানে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান যুগের সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগ হল ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ। ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ, নিরবে দেহের মধ্যে বাসাবেধে বিভিন্ন মরণঘাতী অসংক্রামক ব্যাধির জন্ম দেয়। আর এই ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ এবং আরো কিছু কারণে মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ৭০% নষ্ট হওয়ার আগে, কিডনি রোগের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়না। অপরদিকে এ রোগে আক্রান্ত ৯০ভাগ মানুষ বিনা চিকিৎসায় অকালে প্রাণ হারান, ব্যয়বহুল চিকিৎসার কারণে। আমাদের অসচেতনতা ও সুস্থ জীবনধারা মেনে না চলার জন্য দিনদিন এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। দেশের জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে জাতীয়ভাবে সমন্বিত সচেুনতার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। অধ্যাপকডাঃ এম এ সামাদ আরো উল্লেখ করেন,ভাষা শহীদদেও প্রতি শ্রদ্ধার্থেই ক্যাম্পসগত ১৬বছর ধরে গ্রামের হত-দরিদ্রদেও মাঝে এই স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের আয়োজন করে আসছে।
ক্যাম্পস এর প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি বিশিষ্ট লেখিকা জনাবা নাসরিন বেগম, স্বাস্থ্য সচেতনতা, সুষম খাবার ও সুস্থ জীবনধারা চর্চার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।
ক্যাম্পস, নির্বাহী পরিচালক, জনাব রেজওয়ান সালেহীন, ক্যাম্পস এর মানবিক কর্মকান্ডে সহযোগিতার নিমিত্তে, আয়োজনে অংশগ্রহণকারী সকল নিবেদিত প্রাণ চিকিৎসকদেও নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি কিডনি বিকল রোগীদেও পাশে দাঁড়িয়ে, মানবিক কাজে নিজেদের কর্মকান্ড নিরলসভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল হালিম, প্রিন্সিপাল, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জনাব ডাঃ এ কে এম ফজলুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর ইনজুরিপ্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ বাংলাদেশ, আমিন শরীফ সুপন, উপ-সচিব, এল.জি.আর.ডি মন্ত্রনালয়,জনাব আওলাদ হোসেন, আমদানী-রপ্তানী নিয়ন্ত্রক প্রমুখ। উপস্থিত সকলেই ক্যাম্পস আয়োজিতএই মানবিক কর্মকান্ডের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে সামাজিক সকল কাজে তাঁদের সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।