কালকিনিতে ১৮৩ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় বিপাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মাদারীপুর / 
আজ ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সারাদেশে ব্যাপী পালন করা হবে। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর অতিবাহিত হলেও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ১৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো নির্মাণ হয়নি কোনো শহীদ মিনার। এর ফলে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও ভাষা শহীদদের সম্পর্কে ধারণা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তরুন প্রজন্ম। আর যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে তাও আবার বছরের পর বছর পড়ে থাকে অযত্ন আর অবহেলায়।
আর যেসব প্রতিষ্ঠানে একবারেই নেই শহীদ মিনার সে সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা দিবস এলে কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে দায়িত্ব সারে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এতো বছরেও এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি বলে মনে করেন সুধী সমাজ।
সরেজমিন ও বিভিন্ন দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলায় ২০৭টি সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৬টি, কলেজ ৫টি ও মাদরাসা ২৬ টিসহ মোট ২৯৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি কলেজ, ৪০ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি মাদ্রাসা ও ৬৫টি সরকারি-বেসকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার থাকলেও বাকি ১৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ফলে ১৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয় শুধুমাত্র জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। অনেক শিক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরী করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি।
শিক্ষার্থী রাথিন হোসাইন ও আসিফসহ বেশ কয়েকজন জানায়, আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় আমরা কেউ একুশে ফেব্রুয়ারী ফুল দিতে পারিনা। আমরা চাই প্রত্যেক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান করা হোক।
এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন থেকে বঞ্চিত থাকে। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। আর যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে; তারমধ্যে কিছু শহীদ মিনার তা বছরের পর বছর পড়ে থাকে অযতœ আর অবহেলায়। এসব শহীদ মিনারে কখনও গবাদি পশুর বিচরণ আবার কখনও বখাটেদের আড্ডাস্থলে পরিণত হতে দেখা যায়।
কালকিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবদুল জলিল বলেন, স্বাধীনতার ৬৮ বছরেও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা সত্যিই দুঃখজনক। এ এলাকার কমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানতে এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা জরুরী।
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে শহীদ মিনার নির্মান করতে হবে। এবং অবহেলিত এলাকায় যে সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার করার জরুরীভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।