Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

জবি গেইটের সামনে বাস কাউন্টার ও ফেরীওয়ালাদের রাজত্ব ! ক্যাম্পাস

জবি গেইটের সামনে বাস কাউন্টার ও ফেরীওয়ালাদের রাজত্ব !

এহসানুল হক এহসান, জবি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) তৃতীয় ফটকের পাশে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ জনগণের। এছাড়াও ফটকের দেয়াল ঘেঁষে বসে থাকে  বিভিন্ন দ্রব্যের ফেরীওয়ালা, যা দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দেয়।

করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও থেমে নেই জবির ফটকের সামনে ব্যবসায়ী ও বাস চালক-শ্রমিকদের ব্যস্ততা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট-৩ এর ফটকে বসেছে নানান পন্য আর খাবার বিক্রির অস্থায়ী দোকান। এখানে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে এখানে রয়েছে ঢাকা শহর কেন্দ্রীক বিভিন্ন রুটে চলা বাসগুলোর স্থায়ী স্ট্যান্ড। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ও সড়ক সংলগ্ন ফুটপাতে চলাচলকরা শিক্ষার্থীসহ নিয়মিত পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকের পর বাংলাদেশে ব্যাংকের পাশে দিয়েই জবির দেয়াল ঘেষে বসেছে মুচির দোকান। এছাড়াও ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের তৃতীয় ফটকের সামনে নেই কোন নিরাপত্তা কর্মী। তৃতীয় ফটকটির সামনের রাস্তায় বেশ কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির বাসস্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করায় ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ। এখানে প্রতিনিয়তই দাঁড়িয়ে থাকে সদরঘাট থেকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় যাত্রী বহনকারী ভিক্টর ক্লাসিক, সাভার পরিবহন, বিহঙ্গ, আজমেরী গ্লোরী, তানজিল, ৭ নাম্বার বাস। ফটকের সামনেই বিক্রেতারা সাজিয়েছে পান-সিগারেট, চানামুট, ঝালমুঁড়ি, মাস্ক-স্যানিটাইজার, খেজুর বিক্রয়ের ডালা। এছাড়াও ফেরীরা সেখানে ফেরী করে বিক্রি করে নানান জিনিসপত্র।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দেয়াল সংলগ্ন এ ফুটপাত দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী। এছাড়াও এটি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল যাওয়া ও আসার একমাত্র পথ হওয়ায় প্রতিদিন সকাল বিকাল নদীগামী অসংখ্য মানুষকে এই ফুটপাতটি ব্যবহার করতে হয়। এই ফুটপাতে বাস কাউন্টার আর হরেক রকম ফেরীওয়ালাদের ভীড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ সাধারণ মানুষের চলাচলে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। দৈনন্দিন জীবনে মানুষের এ সমস্যার ব্যাপারে পুলিশকেও নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে টনক নড়ছে না প্রশাসনেরও।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন বাস চালক বলেন, “আমাদের এইভাবেই চলতে হয়। মালিক যা বলে সেভাবেই আমরা চলি। এসবের জন্য অনেককে ১০০/৫০ এইভাবে নিয়মিত টাকাও  দিতে হয়”।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে একজন বিক্রেতাকে এখানে কেন বিক্রি করছেন এই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “এখানে মানুষের যাতায়াত বেশি তাই বিক্রি করলে বেশ কিছু পয়সা পাওয়া যায়। বাসের যাত্রীরা আর আশে পাশের মানুষেরা আসে।”

এছাড়াও নাম না প্রকাশের শর্তে একজন বলেন, “এখানে অনেকে চাঁদা তুলে নিয়ে যায় বিক্রেতাদের কাছ থেকে। বাস মালিকরাও এখানে চাঁদা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এদের একটা চক্র আছে বলেও জানান তিনি। এখানে ব্যবসায় লাভ বেশি আবার অন্যদের পয়সা দিতেও হয়।”

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাব্বি  বলেন, “আমাদের এই ফটকে অনেক ভীড় থাকে। যদি এসব ফেরীওয়ালাদের দোকান না থাকতো তাহলে আমাদের চলাফেরা করতে সুবিধা হতো। এ ব্যাপারে পুলিশ ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি”।

ফটকের সামনে বাস কাউন্টার আর ফেরীওয়ালাদের অবস্থানের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালকে অবহিত করা হলে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেষে বাস কাউন্টার কিংবা দোকান বসার কোনো নিয়ম নেই। গেইটের বাহিরের ফুটপাত দিয়ে যেনো আমাদের শিক্ষার্থী আর পথচারীরা ভালভাবে চলাচল করতে পারে সে ব্যাপারে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।