Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

টাইগারদের সিরিজ জয় খেলাধুলা

টাইগারদের সিরিজ জয়

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টানা দুই ম্যাচে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিলো টিম টাইগারস। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টাইগারদের এটি টানা তৃতীয় সিরিজ জয়।  

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উইন্ডিজকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১৪৮ রান করতেই অলআউট হয়ে যায় উইন্ডিজ। জবাবে ৩ উইকেট হারিয়ে এবং ১০০ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।

এই নিয়ে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টানা তৃতীয় সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে উইন্ডিজকে তাদের ঘরের মাটিতেই ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে আসে মাশরাফিবাহিনী। এরপর একই বছর ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে এসে একই ব্যবধানে হারে ক্যারিবীয়রা। আর এবারের সিরিজে এখন পর্যন্ত ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে সিরিজ জিতে নিয়েছে ডমিঙ্গোর শিষ্যরা।

এই নিয়ে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে নিজেদের শুরুটা দারুণ হলো বাংলাদেশের। টানা দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ হলো ২০ পয়েন্ট। ফলে সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে এলো বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচে ২ জয় আর ১ হার নিয়ে চারে নেমে গেল পাকিস্তান। ৬ ম্যাচে ৪ জয় ও ২ হারে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে অস্ট্রেলিয়া।  

উইন্ডিজের ছুড়ে দেওয়া ছোট লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। কিন্তু সেট হয়েও ২২ রানের ইনিংস খেলে ক্যারিবীয় স্পিনার আকিল হোসেনের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন লিটন। এরপর জেসন মোহাম্মদের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন শান্ত। তিনে নেমে টানা দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হলেন এই বাঁহাতি। আগের ম্যাচে করেছিলেন ১ রান, এবার বিদায় নিলেন ১৭ রান করে।

লিটন-শান্ত বিদায় নিলেও রানের চাকা সচল রাখেন সাকিব ও তামিম। আগের ম্যাচে অল্পের জন্য ফিফটি মিস করা তামিম এই ম্যাচে ৪৮তম ফিফটির দেখা পেয়ে যান। কিন্তু ঠিক এরপরই ক্যারিবীয় পেসার রেইফারের বলে লুজ শট খেলে উইকেটরক্ষক জশুয়া সিলভার হাতে ক্যাচ তুলে দেন টাইগার অধিনায়ক। বিদায়ের আগে বাঁহাতি ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ৭৬ বলে ৫০ রান। ৩ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো এই ইনিংস।

তামিম বিদায় নিলেও মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে সহজেই বাকি পথ পাড়ি দেন সাকিব। এই বাঁহাতি অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৪৩ রান। ইনিংসটি খেলার পথে মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৫০০ রান এবং ১০০ উইকেটের অনন্য কীর্তি গড়েন সাকিব। এক ভেন্যুতে এমন রেকর্ড সত্যিই অবিশ্বাস্য। অন্যদিকে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক।

এর আগে সাকিব-মিরাজের ঘূর্ণিতে দিশেহারা উইন্ডিজ অলআউট হয় মাত্র ১৪৮ রানে। মোস্তাফিজুর রহমান ও হাসান মাহমুদও রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ পর্যন্ত দলীয় তিন অঙ্ক পেরোনো রান পেয়েছে লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কল্যাণে। নয়ত শুরু থেকে বাংলাদেশের দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান যেভাবে ছোবল দেওয়া শুরু করেছিলেন তাতে শ’য়ের ঘরে পৌঁছানোর আগে গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল ক্যারিবিয়ানদের।

মাত্র ৮৮ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারিয়ে বসেছিল উইন্ডিজ। সেখান থেকে দলকে তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছে দেন দুই লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান রভমেন পাওয়েল (৪১) ও আলঝেরি জোসেফের (১৭) দলীয় সর্বোচ্চ ৩২ রানের জুটি। তবে শেষ পর্যন্ত উইন্ডিজ থামে ৪৩.৪ ওভারে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে টানা দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষকে দেড়শ’র নিচে অলআউট করল টাইগাররা।  

এই ম্যাচে প্রথম বাংলাদেশি উইকেটরক্ষক হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪০০তম ডিসমিসালের মালিক হয়েছেন মুশফিক।

৯.৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে দলীয় সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। যা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং ফিগার। ২টি করে উইকেট ভাগাভাগি করেছেন সাকিব ও মোস্তাফিজ। বাকি উইকেট হাসান মাহমুদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফল : ৭ উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস : ১৪৮/৩ (৪৩.৪ ওভার)

(আমব্রিস ৬, ওটলি ২৪, জশুয়া ৫, ম্যাকার্থি ৩, মোহাম্মদ ১১, মায়ার্স ০, বোনার ২০, পাওয়েল ৪১, রেইফার ২, আলজারি ১৭, আকিল ১২*; মোস্তাফিজ ২/১৫, রুবেল ০/২৩, হাসান মাহমুদ ১/৫৪, মিরাজ ৪/২৫, সাকিব ২/৩০)।

বাংলাদেশ ইনিংস : ১৪৯/৩ (৩৩.২ ওভার)

(লিটন ২২, তামিম ৫০, শান্ত ১৭, সাকিব ৪৩*, মুশফিক ৯*; আলজারি ০/৪২, মায়ার্স ০/১৫, আকিল ১/৪৫, মোহাম্মদ ১/২৯, রেইফার ১/১৮)।