Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

কথা সাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই শিল্প ও সাহিত্য

কথা সাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই

বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই। রোববার (৩ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় রাজধানীর বনানীর নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বড় ছেলে শিশু সাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর।

জানা গেছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি দুই পুত্র, দুই পুত্রবধু, দুই কন্যা ও দুই জামাতাসহ অসংখ্য নাতি-নাতনি রেখে গেছেন।

রাবেয়া খাতুনের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার বিক্রমপুরে তার মামার বাড়িতে। তার বাবার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর গ্রামে। ১৯৫২ সালের ২৩ জুলাই সম্পাদক ও চিত্রপরিচালক, বাংলাদেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘প্রেসিডেন্ট’-এর পরিচালক এটিএম ফজলুল হকের সঙ্গে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়।

মহৎপ্রাণ এ কথাসাহিত্যিকের চার সন্তান- ইমপ্রেস টেলিফিল্ম চ্যানেল আই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, রন্ধন বিশেষজ্ঞ কেকা ফেরদৌসি, স্থপতি ফরহাদুর রেজা প্রবাল ও ফারহানা কাকলী।

উল্লেখ্য, তিনি কথাসাহিত্যিক হিসেবে সমধিক পরিচিত হলেও একসময় শিক্ষকতা করেছেন। সাংবাদিকতার সঙ্গেও দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন। দৈনিক ইত্তেফাক, সিনেমা পত্রিকা ছাড়াও তার নিজস্ব সম্পাদনায় পঞ্চাশের দশকে বের হতো ‘অঙ্গনা’ নামের একটি মহিলা মাসিক পত্রিকা।

তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা একশ’রও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে উপন্যাস, গবেষণাধর্মী রচনা, ছোটগল্প, ধর্মীয় কাহিনি, ভ্রমণ কাহিনি, কিশোর উপন্যাস, স্মৃতিকথা ইত্যাদি।

রেডিও, টিভিতে প্রচারিত হয়েছে অসংখ্য নাটক, জীবন্তিকা ও সিরিজ নাটক। তার গল্পে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে কয়েকটি। রাবেয়া খাতুন উপন্যাস লিখেছেন পঞ্চাশটিরও বেশি, এ পর্যন্ত চার খণ্ডে সংকলিত ছোটগল্প সংখ্যায় চারশ’রও বেশি।

ছোটদের জন্য লেখা গল্প-উপন্যাসও সংখ্যায় কম নয়। প্রথম উপন্যাস মধুমতী (১৯৬৩) প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই শক্তিমান কথাসাহিত্যিক হিসেবে পরিচিতি পান। ক্ষয়িষ্ণু তাঁতি সমপ্রদায়ের জীবনসংকট ও নাগরিক উঠতি মধ্যবিত্ত জীবনের অস্তিত্ব জিজ্ঞাসার মধ্যে ব্যক্তিকে আবিষ্কার করেছিলেন রাবেয়া খাতুন এই উপন্যাসে।

রাবেয়া খাতুন বেশকিছু আত্মজৈবনিক স্মৃতিমূলক রচনা লিখেছেন। একাত্তরের নয় মাস (১৯৯০) বইয়ে লিখেছেন একাত্তরের শ্বাসরূদ্ধকর দিনগুলোর কথা।

সাহিত্যর্চ্চার জন্য পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক (১৯৯৩), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৩), নাসিরুদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৯৫), হুমায়ূন স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮৯), কমর মুশতারী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৪), বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৯৪), শেরেবাংলা স্বর্ণপদক (১৯৯৬) ইত্যাদি।