Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

নড়াইলে ভাইয়ের বিরুদ্ধে জমি আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন নড়াইল

নড়াইলে ভাইয়ের বিরুদ্ধে জমি আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

নড়াইলে আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে জাল দলিল সৃষ্টি করে জমি আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগে সংবাদিক সম্মেলন হয়েছে। শনিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে নড়াইল জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এ সংবাদিক সম্মেলন করেন নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ইশানগাতি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ তহিদুর রহমান শেখ। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তহিদুর বলেন, তিনি নড়াইল পৌরসভার দুর্গাপুর-ডুমুরতলা মৌজার ২৫৬৩ ও ২৫৮৪ দাগে ১৬ শতক জমি ক্রয় করে দীর্ঘ দিন যাবত ভোগ দখলে আছেন। সম্প্রতি তিনি কর্মস্থল ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে জানতে পারেন ছোট ভাই তুষার তার ওই জমির জাল দলিল তৈরী করিয়াছে। ছোট ভাই তুষারের নিকট জাল দলিল সৃষ্টির কারন জানতে গেলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তুষার জানিয়েছে ওই জমির সকল কাগজ তৈরি করা হয়ে গেছে। এরপর ক্ষতিগ্রস্থ তহিদুর নড়াইল সদর সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে তল্লাশি দিয়ে জানতে পারেন চলতি বছরের ৯ মার্চ তার জমির একটি হেবা ঘোষনা জাল দলিল করে নিয়েছে ছোট ভাই তুষার। যার দলিল নং ১৯১২। আর দলিল রেজিষ্ট্রীর মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে নড়াইল পৌর ভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মিলন তুষারের পক্ষে প্রতিবেদন দেয়ায় সদর এসি ল্যান্ড নামপত্তন করে নিয়েছেন। তিনি ওই দলিলের নকল তুলে দলিলের লেখক শরীফ রবিউল ইসলামকে খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারেন সদর সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে ওই নামে কোন দলিল লেখক নাই। এরপর তিনি সদর সাব-রেজিষ্টার মোঃ শাজাহান মোল্যার নিকট গিয়ে জানতে পারেন রেজিষ্ট্রী অফিসের ঝাড়ুদার জুয়েল এর মাধ্যমে তুষার ওই দলিলটি করে নিয়েছে। জমির প্রকৃত মালিকের টিপ সই না নিয়ে এবং তার অনুপস্থিতিতে প্রকৃত দলিল লেখক ছাড়া এতো বড় জালিয়াতি কেন করা হলো ? এমন প্রশ্নে ক্ষিপ্ত হয়ে সাব-রেজিষ্ট্রার তাকে অফিস থেকে বের করে দেন। এরপর তিনি নড়াইল পৌরভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) মোস্তাফিজুর রহমান মিলন এবং সদর এসি ল্যান্ড কৃষ্ণা রায় এর নিকট গিয়ে অবৈধ ভাবে এ জমির নাম পত্তন করে দেয়ার কারন জানতে চাইলে তারাও কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। নিরূপায় হয়ে তিনি ওই জালিয়াতি দলিল বাতিলের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা করার পর তুষার ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে ওই জমিতে ছোট একটি ঘর তুলে জমির মালিকানা হিসেবে একটি সাইনবোর্ড দিয়েছে। 

ক্ষতিগ্রস্থ তহিদুর কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার দীর্ঘ দিনের কষ্টার্জিত সম্পত্তি মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে তুষারের নামে করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ পাপ কাজের সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছেন সদর সাব-রেজিষ্টার মোঃ শাজাহান মোল্যা, সদর এসি ল্যান্ড কৃষ্ণা রায় ও নড়াইল পৌর ভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মিলন। তিনি ঘুষখোর জালিয়াত চক্রের হাত থেকে নিজের সম্পদ রক্ষার্থে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 

এ জাল দলিল সৃষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসের ঝাড়ুদার জুয়েল জানান তুষারের অনুরোধে তিনি সাব-রেজিষ্ট্রারকে দিয়ে এ দলিলটি সম্পাদন করিয়ে দেন। সদর সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ শাজাহান মোল্যা জানান, ভীড়ের কারনে অনেক সময় ভুল হয়ে যায়। জমির মালিক যেহেতু আদালতে মামলা করেছে, ওই দলিল বাতিল হয়ে যাবে। নামপত্তনের ব্যাপারে নড়াইল পৌরভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) মোস্তাফিজুর রহমান মিলন বলেন, তুষার যে তঞ্চকী দলিল দাখিল করেছে, তা প্রথমে বোঝা যায়নি, তাই তার পক্ষে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে অধিকতর তদন্তে প্রমানিত হয়েছে তুষারের দাখিলকৃত হেবা ঘোষনা দলিলটি তঞ্চকী। নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারি কমিশনার (ভূমি) কৃষ্ণা রায় বলেন, দলিল তঞ্চকী হলে অবশ্যই নামপত্তন বাতিল করা হবে।