Opu Hasnat

আজ ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৪,

খাগড়াছড়িতে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় যথাযথ ধর্মীয় গাম্ভীয্য ও মর্যাদায় জেলাসহ ৯টি উপজেলাব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করছেন। যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে শতবর্ষের ঐতিহ্যে বাহী প্রাচীনতম য়ংড বৌদ্ধ বিহারসহ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করেছেন। এ উপলক্ষে শনিবার (৩১ অক্টোবর) খাগড়াছড়ির প্রান কেন্দ্রে শত বর্ষের ঐতিহ্যবাহী য়ংড বৌদ্ধ বিহারসহ বিভিন্ন বিহার গুলোতে বুদ্ধমুর্তি দান, বুদ্ধমুর্তি স্নান, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, চুরাশি হাজার বাতি দান ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিন্ডদানসহ অন্যান্য দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। য়ংড বৌদ্ধ বিহারগেটে প্রধান ফটকে প্রশাসনে নিদ্দের্শনায় পুলিশ কড়া বেষ্টনী উপস্থিতি দেখা গেছে।

সকাল থেকে শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের য়ংড বৌদ্ধ বিহার, মং রাজ পাড়া ক্যপ্রু বৌদ্ধ বিহার, আলুটিলা আলোক নবগ্রহ ধাতুচৈত্র বৌদ্ধ বিহার, পেরাছড়া আর্য বন বিহার,  সিবলী বৌদ্ধ বিহার, রাজ্যমনি পাড়া বৌদ্ধ বিহারসহ সব বিহারে বুদ্ধপূজা, বুদ্ধমূর্তিদান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, অষ্টশীল ও পঞ্চশীল গ্রহণের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। শত শত বৌদ্ধ নর-নারী বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে জগতের সব প্রাণীর মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করেন। 

শুভ প্রবারণা পূর্ণিমায় সকাল থেকে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার চলে সমবেত প্রার্থনা, পঞ্চশীল গ্রহন, বুদ্ধ মূর্তিদান, অষ্ট পরস্কিার দান, সংঘদান, হাজার বাতি দান ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিন্ডদান। নানা বয়সী নর-নারী ও শিশুদের আগমনে উৎসবমুখর হয়ে উঠে বিহার প্রাঙ্গণ গুলো। বিভিন্ন প্রজাতি নানান ফুল ফল দিয়ে বুদ্ধ পূজার পাশাপাশি চলে শীল গ্রহণ।  

শুভ প্রবারণা পূর্ণিমার মাধ্যমে বৌদ্ধদের গুরুত্বপূর্ণ তিন মাস ব্যাপী বর্ষাবাস শেষ হয়। এরপর থেকে পরবর্তী এক মাস সময়ব্যাপী কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানাদি অনুষ্ঠিত হয়।

গৌতম বৌদ্ধধর্মের বিশেষ ত্রি-স্মৃতি বিজরিত ঘটনা কেন্দ্র করে এ দিনটি উদযাপিত হয়ে থাকে। সকল অশুভ শক্তি ও করোনা মহামারী দুরত্ব বজায় রেখে যেন পৃথিবী থেকে দূর হয়ে যায় সে প্রার্থনা ছিল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের। 

আজকের তিথিতে শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা পালিত হল পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িসহ বৌদ্ধবিহারগুলোতে। তবে এ তিথিতে পৃথিবীর অন্যান্য বৌদ্ধ রাষ্ট্রের সাথে সংহতি রেখে খাগড়াছড়ি সহ অপর দু’পার্বত্য জেলায় শনিবার ধর্মীয় ভাবগম্ভির্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে শুভ প্রবারণা। চন্দ্র গণনার কারণে প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর একদিন বাড়ায় এ বছর এ ভিন্নতা বলে জানিয়েছেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা।

উল্লেখ্য, ধর্মীয় গাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে জেলার ৯টি উপজেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করেছেন। সকালে বুদ্ধমূতি দান, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান ও ভিক্ষুদের পিন্ডদান করা হয়। দুপুরে বৌদ্ধ মুর্তি স্নান, বিকেলে ৮৪হাজার বাতি ও সন্ধ্যায় ফানুস উড়ানো হয়। 

আগামী ৩০শে অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমার মধ্য দিয়ে শেষ হবে ভিক্ষু সংঘের তিন মাস ব্যাপী ধ্যান তিথিক্ষা বর্ষাব্রত। এরপর থেকে চলবে মাসব্যাপী কঠিন চীবরদানোৎসব।