Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

পদ্মা সেতুতে বসল ৩৫তম স্প্যান, দৃশ্যমান পাঁচ হাজার ২৫০ মিটার মুন্সিগঞ্জ

পদ্মা সেতুতে বসল ৩৫তম স্প্যান, দৃশ্যমান পাঁচ হাজার ২৫০ মিটার

শনিবার (৩১ অক্টোবর) পদ্মা সেতুতে বসল ৩৫ তম স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হল মূল সেতুর পাঁচ হাজার ২৫০ মিটার অংশ। 

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, কারিগরি জটিলতা না থাকায় ও আবহাওয়াসহ খুটিনাটি সবকিছু  অনুকুলে থাকায় এদিন দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে স্প্যানটি বসানোর কাজ শেষ করা হয়।

এর আগে শনিবার সকাল সারে ৯টার মধ্যে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানবাহী ভাসমান ক্রেন 'তিয়ান-ই' এর মাধ্যমে নির্ধারিত পিলার ৮ ও ৯ এর অভিমুখে রওনা হয়।

কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে পিলার দুটির দূরত্ব ৯০০ মিটারের কিছু বেশি।

কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে পিলারের কাছে ক্রেন পৌঁছাতে ৩০ মিনিটের মতো সময় লেগেছে।

পরে ভাসমান ক্রেন 'তিয়ান-ই' পদ্মা সেতুর ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের নোঙর করে।

পরে পজিশনিং করে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে স্প্যানটিকে তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। রাখা হয় দুই পিলারের বেয়ারিং এর ওপর। স্প্যান বসানোর জন্য উপযোগী সময় থাকায় এবং সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রকৌশলীরা অল্প সময়ের মধ্যেই স্প্যান বসাতে সক্ষম হয়। খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আগে থেকেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়।

তিনি আরো জানান, প্রমত্তা পদ্মা নদীতে নাব্য সংকটের কারণে শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) স্প্যানটি বসানো সম্ভব হয়নি । শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত দিনভর ড্রেজিং করে নাব্য সমস্যা সমাধানে জমে থাকা পলি মাটি অপসারন- নিরসন করে শনিবার ৩৫ তম স্প্যানটি বসানো সম্পন্ন করা হয়েছে।

৩৫ তম স্প্যান বসানোর পর এখন পদ্মা সেতুতে বাকি থাকল ছয়টি স্প্যান।

যা মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে বসানো হবে। ইতিমধ্যেই জাজিরা প্রান্তে সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এখন আগামী ৪ নভেম্বর সেতুর ২ ও ৩ নম্বর পিলারে ৩৬তম স্প্যান ‘১-বি’, ১১ নভেম্বর ৯ ও ১০নং পিয়ারে ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’, ১৬ নভেম্বর ১ ও ২নং পিয়ারে ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’, ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১নং পিয়ারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২নং পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

এছাড়া, সেতুর দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ৪১টির বেশি রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে। আর দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ৫০০টির বেশি।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৫টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫ হাজার ২৫০ মিটার অংশ।

৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।

৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী ২০২১সালে খুলে দেয়ার কথা রয়েছে।