Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

খাগড়াছড়িতে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ও আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালিত খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ও আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালিত

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা স্থানীয় জাবারাং কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ও আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালিত হয়েছে। জাবারাং কল্যাণ সমিতির সেতু-এমএলই প্রকল্পের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর ২০২০) একযোগে পানছড়ি উপজেলার বরকলক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পল্টনজয় পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণির শিশু ও তাদের মায়েদের সাথে উদযাপিত হলো বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ও আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস। 

একই দিনে এমন দুইটি দিবস পালনে জাবারাং কল্যাণ সমিতি তাই শিশু শিক্ষার্থী ও তাদের মায়েদের সাথে একত্রে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দিবস দুইটি উদযাপনের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ২০০৮সাল থেকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ১৫ই অক্টোবর দিনটিকে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ও আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। প্রতি বছর এই দিবস উপলক্ষে সুস্থ ও নিরাপদ থাকতে হাত ধোয়ার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। 

এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা ভাইরাসের হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে কয়েকটি পদক্ষেপের মধ্যে নিয়মিত সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার গুরুত্ব অনেক বেশি। হাত ধোয়া দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য “হ্যান্ড হাইজিন ফর অল”। সাধারণ মানুষকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার মাধ্যমে করোনা ভাইরাসসহ যে কোন রোগের বিস্তার রোধ করার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে মায়েদের সহযোগিতায় সস্তানদের সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার পদ্ধতি দেখিয়ে দেয়া হয়। সঠিক ধাপ অনুসরন করে ২০সেকেন্ড ধরে সাবান পানি দিয়ে দু’হাত পরিষ্কার রাখার মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ দেন উপস্থিত এনজিওকর্মী। এনজিওকর্মী আরও পরামর্শ দেন যে, সকলে যেন হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলেন। এসময় ঠান্ডা বা জ্বরের উপসর্গ আছে এমন লোকের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার ব্যপারেও অভিভাবকদের সচেতন করা হয়।

অপরদিকে “কৃষিতে নারী কৃষকের কাজের স্বীকৃতি চাই” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উপস্থিত অভিভাবকদের সাথে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। রাষ্ট্রে, পরিবারে ও সমাজে নারীর কাজকর্ম, ভূমিকা ও অবদানের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে এ দিবস পালনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে উল্লেখিত সভায় আলোচনা করা হয়।

রাইট টু ফুড এ্যান্ড নিউট্রিশন ওয়াচ ২০১৯এর তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী যে পরিমাণ সবজি উৎপাদিত হয় তার প্রায় ৮০ভাগই আসে গ্রামীণ নারীদের মাধ্যমে উৎপাদিত পারিবারিক কৃষি বা হোম গার্ডেন হতে যার সম্পূর্ণটাই জৈব বা বিষমুক্ত ও নিরাপদ।

আমাদের দেশের নারীরা গৃহস্থালির কাজ ছাড়াও শাক-সবজি চাষ, হাঁস-মুরগী পালন, গবাদি পশুপালন এবং মাঠে ফসল উৎপাদনের জন্য জমি তৈরি করা, জমিতে বীজ বপন, সেচ দেয়া, চারা রোপন, সার কীটনাশক ছিটানো, ফসল কেটে ঘরে তোলাসহ সকল কাজই করছেন। অনেক সময় নারীরা পুরুষের চেয়েও বেশি কাজ করে।

কর্মজীবী নারীর পরিসংখ্যান মতে, কৃষিখাতের ২০টি কাজের মধ্যে ১৭টি কাজে নারীর অংশগ্রহণ থাকলেও কৃষিতে নারীদের নেই কোন স্বীকৃতি। ফসলের বীজ সংরক্ষণ থেকে শুরু করে ফসল উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংগ্রহে গ্রামীণ নারীর পুরোপুরি অংশগ্রহণ থাকলেও কৃষক হিসেবে তাদের নেই কোন পরিসংখ্যান, স্বীকৃতি বা মূল্যায়ন। এমনকি গ্রামীণ নারীরা কৃষি ঋণসহ কৃষকদের জন্য দেয়া সকল সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। তাই টেকসই ও নিরাপদ কৃষির জন্য রাষ্টীয়, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে কৃষিতে নারীর কাজের যথাযথ মূল্যায়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে নারী কৃষকের কাজের স্বীকৃতির দাবি জানালো উপস্থিত মা দলের সদস্যবৃন্দরা।