Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন রোধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন মাদারীপুর

কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন রোধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাক্ষুসে  আড়িয়াল খাঁ নদের তীব্র ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। সোমবার সকালে উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের আন্ডারচর লঞ্চঘাট এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কয়েকশ' লোক অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত কয়েক বছরে উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের নতুন আন্ডারচর ও পুর্বসাহেবরামপুরসহ ছোট-বড় বেশ কয়েকটি গ্রাম আড়িয়াল খাঁ নদের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে কয়েকশ' লোক অসহায় জীবন কাটাচ্ছেন। এ বছর বর্ষার শুরু থেকে আবারও তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে অর্ধশত বসতভিটা, কয়েক'শ একর কৃষিজমি, একটি কলেজ, প্রাইমারী স্কুল, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা,এতিম খানা ও ৭টি মসজিদসহ বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্থাপনা আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মানবন্ধনে আন্ডারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, ‘চলতি বছরে আড়িয়াল খাঁ ভাঙনে আন্ডারচর লঞ্চঘাট এলাকায় ২৫টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। দুইশটি পরিবার এখন ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়াও স্কুল ও কলেজসহ বহু স্থাপনা ভাঙনের মুখে। এত স্থাপনা ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকার পরেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে তেমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সাদিকুর রহমান সাদিকসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘নদীতে বারো মাস ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তাদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে হামলার শিকার হতে হয়। বালু উত্তোলন বন্ধসহ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে নদীর পাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।

মানবন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন আন্ডারচর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক গাজীউর রহমান শিকদার, নবারুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বেল্লাল হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম আকন প্রমুখ।

সাহেবরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান সেলিম বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া হলে মানুষেরা আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। আমি বিষয়টি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

ভাঙন সম্পর্কে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, ‘কালকিনি আন্ডারচর লঞ্চঘাট এলাকায় নদীর ভাঙন ঠেকাতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে। আরও অনেক স্থানে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে। ভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্থানীয় বাঁধ নির্মাণও করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।