Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

আবাসন ব্যবসার হালচাল : মীর মোহাম্মদ ফারুক অর্থ-বাণিজ্য

আবাসন ব্যবসার হালচাল : মীর মোহাম্মদ ফারুক

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নাকি নাজুক হয়ে পড়েছে! আবাসন ব্যবসা নাকি মন্দা! এই খাতে ব্যাংক নাকি লোন দেয় না। করোনাকালে আবাসন খাতের অবস্থা আরো নাকি নাজুক হয়ে পড়েছে। এসব কথা শুনে শুনে কান যাদের ঝালাপালা, যারা ভাবছেন আবাসন ব্যবসার মন্দাভাবের সুযোগে কম টাকায় ফ্ল্যাট কিনে ফেলবেন,তাদের জন্য খবর হলো, আবাসন খাত নিয়ে প্রচারিত এসব কথাই ডাহা গুজব।আবাসন ব্যবসা আসলে এখন রমরমা।আর ক্রেতা ব্যাংক লোন গ্রহন করতে চাইলে ফ্ল্যাট বিক্রয় করা হয় না। 

গত দশটি বছর ধরে খুব নিবিড়ভাবে দেখেছি আবাসন খাতের রমরমা অবস্থা। করোনার অবসরে গত কয়েক মাসে রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউন এলাকায় নিজে সরেজমিনে ঘুরে দেখেছি এই খাতের হালচাল। পাঠকদের জন্য জানাচ্ছি আমার নিজের অভিজ্ঞতার কথা।

গত দশ বছরে উত্তরায় ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে বহুগুন।২০১১ সালে ২হাজার টাকা বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের দাম ছিলো ৬০/৬৫ লাখ টাকা, আর বর্তমানে একই মাপের ফ্ল্যাটের মূল্য পৌনে ২ কোটি থেকে ৩ কোটি টাকা পর্য্ন্ত।তাছাড়া রয়েছে ইউটিলিটি, জেনারেটর, পার্কিং এরিয়া, সবুজায়নসহ নানা অযুহাতে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্য্ন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে।

ডেভেলপার কোম্পানীর অনীহার কারনে ক্রেতারা ব্যাংক লোন সুবিধা গ্রহন করতে পারে না। ডেভেলপার চায় ক্রেতা আইডিএলসি, ডিবিএইচ, লঙ্কাবাংলার মত নন ব্যাংকিং লিজ ফিনান্সিং প্রতিষ্ঠানের লোন গ্রহন করুক। নন্দন কানন হাউজিং লি: নামে একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র এ্যসিষ্টেন্ট জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং) বলেন, ‘ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের হয়রানী করে। সেকারনে আমরা ব্যাংকের সাথে ট্রাই পার্টি (ত্রিমূখী চুক্তি) করি না। প্রয়োজেন আইডিএলসি, ডিবিএইচ থেকে লোন করিয়ে দেই।’ 

অপরদিকে, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, ডেভেলপার কোম্পানীগুলো ঘোষিত সময়ের মধ্যে ক্রেতাকে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়না, চুক্তি অনুসারে নির্মান সামগ্রীর মান বজায় রাখে না, তাছাড়া ডেভেলপার কোম্পানীগুলো ঘোষিত পরিমাপের চেয়ে কম পরিমাপের ফ্ল্যাট গছিয়ে দিয়ে প্রতারনা করে থাকে।ব্যাংকের সাথে ট্রাই পার্টি করা হলে ডেভেলপার ক্রেতাকে এধরনের প্রতারনা করার সুযোগ পায় না। ব্যাংক ক্রেতার স্বার্থ দেখে। এসব কারনে ডেভেলপার কোম্পানী ক্রেতাকে ব্যাংক লোন গ্রহনে নিরুৎসাহীত করে থাকে।

উত্তরা এলাকার ডেভেলপার কোম্পানীগুলো ভবনের নির্মান কাজ শুরু করার আগেই সব ফ্ল্যাট বিক্রয় করে থাকে। এস্যূর, এ্যাসুরেন্স, নন্দন কানন, কুমিল্লা, এবিসির মত ডেভেলপার কোম্পানীগুলোতে কথা বলে জানা গেছে, ফ্ল্যাট বিক্রয় হওয়ার পর নির্মান কাজ শুরু করা হয় এবং ফ্ল্যাট নির্মান করে ৩ থেকে ৪ বছর পর ফ্ল্যাট বুঝিযে দেওয়া হয়। এসব কারনে ক্রেতারা প্রতিনিয়তই প্রতারিত হয়ে থাকে। 

উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে নূরুল ইসলাম নামে একজন ক্রেতা বলেন, তার অভিজ্ঞতার কথা। তিনি সমুদয় অর্থ পরিশোধের পরও চার বছর ধরে ঘুরছেন ফ্ল্যাট বুঝে পাচ্ছেন না। তাছাড়া, নিম্নমানের টাইলস, বাথরুম ফিটিংস ব্যবহার করা হয়েছে তার ফ্লাটে। মুক্তিযোদ্ধা সারোয়ার হোসেনকে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে তার ফ্ল্যাট বুঝে নিতে বিশেষ ক্ষমতাশালী ব্যক্তির সহায়তার প্রয়োজন হয়েছে। 

এই বিভাগের অন্যান্য খবর