Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

নড়াইলে রেলওয়ের বালু সরবারহকারীদের স্বেচ্ছাচারিতায় ভয়াবহ ক্ষতির মধ্যে এলাকাবাসি নড়াইল

নড়াইলে রেলওয়ের বালু সরবারহকারীদের স্বেচ্ছাচারিতায় ভয়াবহ ক্ষতির মধ্যে এলাকাবাসি

নড়াইলে রেলওয়ের বালু সরবরারকারিদের স্বেচ্ছাচারিতায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারিরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। প্রকল্প এলাকার বাড়ি ও ভূমি মালিকদের জমির উপর দিয়ে বালুর পাইপ নেয়ার ক্ষেত্রেও কোন নিয়ম মানা হয়নি। তাদের সুযোগ সুবিধার কথা বিবেচনা না করে ঠিকাদার ও তাদের কর্মীদের সুবিধা মত পাইপ বসানো হয়েছে। এমনকি জনসাধারনের চলাচলের রাস্তার উপর দিয়ে ঝুকিপূর্ণ ভাবে বালু নেয়ার পাইপ বসানো হয়েছে। অনেকের ফসলি জমি নষ্ট করে বালুর পাইপ নেয়া হয়েছে। কারো কারো বাড়ির মধ্য ও পাশ দিয়ে বিপদজনক ভাবে বালুর পাইপ নেয়া হয়েছে। ভূমি মালিকদের কেউ কেউ আর্থিক ক্ষতি পূরন পেলেও অনেকেই কোন ক্ষতিপূরন পাচ্ছেন না। বরং ঠিকাদারের লোকজন ও পোষা সন্ত্রাসীরা জমির মালিকদের নানা ভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দিচ্ছেন। অনেকের জমির মধ্যে দিয়ে জোর করে পাইপ নেয়া হয়েছে। আবার বালু ব্যবসায়ীরা বালু রাখার জন্য তথা বালুর বেড করার জন্য সামান্য কিছু জমি লিজ নিয়ে ওই এলাকার অন্যের জমি জোরপূর্বক দখল করে বালু রাখছেন। কোন কিছু বলতে গেলে ঠিকাদার ও বালু ব্যবসায়ীদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা মারমুখি হয়ে তেড়ে যাচ্ছেন। হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। মারপিট করছেন। রেলওয়ের কাজের জন্য যত্রতত্র বালুর ডিপো করায় জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন সড়কের উপর দিয়ে এবং জোরপূর্বক অন্যের জমি ও বাড়ির মধ্য দিয়ে বালুর পাইপ নেয়ায় ছোট বড় দ্বন্দ্ব সংঘাত লেগেই আছে। শুধু তাই না, বালু উত্তোলনের সাথে উঠে আসা পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না করায় ওই এলাকায় কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের বাড়ি ঘরে পানি উঠে বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। 

সরজমিন নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের নাকসী, ঘোষপুর ও কমলাপুর এলাকা পরিদর্শন করে আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি হুমায়ুন কবীর রিন্টু জানান, চরম দুরাবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। তাদের দুঃখ দুর্দশার শেষ নেই।

ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, নাকসী গ্রামের চিহিৃত অপরাধি মন্নু মৃধা ও রাজন মৃধা সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ঠিকাদারের পক্ষে বালুর পাইপ টানার কাজ করছেন। কেউ বাঁধা দিতে গেলে তারা তার সাথে মারমুখি আচরন করছেন। মন্নু ও রাজন গোপালগঞ্জের ঠিকাদার লিটন এর পক্ষে এসব কাজ করছেন বলে জানান স্থানীয়রা।

নাকসী গ্রামের মনিরুজ্জামান জানান, তার কমলাপুর ফসলি মাঠের ধানের জমির ধানের মধ্য দিয়ে জোর পূর্বক বালু সরবারাহের পাইপ নেয়া হয়েছে। তার ফসলি জমি ও ধানের ব্যাপক ক্ষতি হলেও তাকে কোন ক্ষতি পূরন দেয়া হয়নি। বালু ব্যবসায়ীদের পাইপ বসাতে নিষেধ করায় তারা তার সাথে খারাপ আচরন করেছে। এ গ্রামের তবিবর রহমান জানান, একই ভাবে তার ধানের জমির মধ্যে দিয়ে জোর করে বালুর পাইপ নেয়া হয়েছে। বাঁধা দিতে গেলে তার সাথে চরম বাক বিতন্ডা হয়েছে। কমলাপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান তার জমির পাশের জমি লিজ নিয়ে বালুর বেড করা হয়েছে। তার সাথে কোন কথা না বলে তার জমি জড়িয়ে বালু রাখা হচ্ছে। তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে বালু ব্যবসায়ীর চামচারা তাকে কোন পাত্তা দেয়নি। ওই একই এলাকায় পাশাপাশি বালু সরবরাহ করছেন নারানগঞ্জের ঠিকাদার কাউছার আহমেদ মুন্না। তার পক্ষেও কাজ করছেন একদল ছিচকে সন্ত্রাসী। তাদের কাজে বাঁধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে মারাত্নক রক্তাক্ত জখম হন কমলাপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম। এ ঘটনায় নড়াইল সদর থানায় একটি মামলা হয়। 

ঘোষপুর গ্রামের টুটুল জানান তার ধানের জমি নষ্ট করে বালুর পাইপ নেয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরন তো দুরের কথা তার সাথে খুবই রূঢ় আচরণ করা হয়েছে। এ গ্রামের বখতিয়ার রহমান জানান তার ধানের জমির মধ্যে দিয়ে জোর করে বালুর পাইপ নেয়ায় তিনি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। সেই সাথে তার জমির পাশে বালুর বেড করে তার জমি জড়িয়ে বালু রাখায় ফসলের মারাত্নক ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থরা ও এলাকার সচেতন মহল অনাকাংখিত দূর্ঘটনা এড়াতে এবং বালু সরবারাহকারি ঠিকাদারের সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা রুখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।