Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

রাজবাড়ীতে বটম ক্লীন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষ, গোয়ালন্দে এগ্রি ট্যুরিজম কৃষি সংবাদরাজবাড়ী

রাজবাড়ীতে বটম ক্লীন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষ, গোয়ালন্দে এগ্রি ট্যুরিজম

মাছের চাহিদা যোগান দিতে ও অল্প জমিতে বেশি উৎপাদনের লক্ষ নিয়ে রাজবাড়ীতে বটম ক্লীন রেসওয়ে পদ্ধতিতে করা হচ্ছে মাছ চাষ। এতে উৎপাদন হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে চারগুন বেশি। বেশি লাভ হওয়ায় দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বটম ক্লী রেসওয়ে পদ্ধতি। প্রতিদিন দুর দুরান্ত থেকে পরামর্শ নিতে আসছেন নতুন নতুন উদ্যেক্তা। 

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র শেখ মোঃ নিজাম, রিয়াজউদ্দিন পাড়া এলাকায় ২৫০ বিঘা জমিতে তৈরি করেছেন গোয়ালন্দ হ্যাচারি এন্ড ফিসারিচ। এতদিন পুরাতন পদ্ধতিতে এখানে মাছ চাষ করেছেন তিনি। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে এক বন্ধুর পরামর্শ নিয়ে এখানে সংযোজন করেন মাছ চাষের আধুনিক ও নতুন এক পদ্ধতি। যার নাম বটম ক্লীন রেসওয়ে পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে পুকুরের তলদেশে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার হবে। আবার রেসওয়ে মাধ্যমে তৈরি হবে অক্সিজেন। যা মাছকে দ্রুত সময়ে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে। পরিক্ষামূলকভাবে একটি পুকুরে চাষ করে লাভবান হওয়ায় আরো তিনটি পুকুরে এই পদ্ধতিতে শুরু করেছেন মাছ চাষ। 

সোমবার সকালে গোয়ালন্দ উপজেলার রিয়াজউদ্দিন পাড়া এলাকায়  গিয়ে দেখাযায়, সেখানে চলছে এক বিশাল কর্মযোগ্য। আলাদা আলাদাভাবে শ্রমিকে আলাদা আলাদা পুকুরের যত্ন নিচ্ছেন। কেউ খাবার দিচ্ছেন আবার কেউ রেসওয়ে মেশিন পরিচালনা করছেন। 

এ সময় গোয়ালন্দ ফিসারিচ ও হ্যাচারিচের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, পুরাতন পদ্ধতিতে লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তুু আধুনিক এই পদ্ধতিতে লাভের সম্ভাবনা শতভাগ। বর্তমানে কার্প জাতীয় মাছের পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির, টেংরা, শিং, বাইম ও পাবদা মাছের চাষ করা হচ্ছে এখানে। আর মাছের রোগ বালাই নিধনে রয়েছে সার্বক্ষনিক নজরদারি। তিনি জানান, এখানে প্রতিটি পুকুরের জন্য আলাদা আলাদাভাবে শ্রমিক নিয়োগ করা আছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন একশত শ্রমিক কাজ করছে এখানে। 

এদিকে গোয়ালন্দ ফিসারিচ এন্ড গোয়ালন্দ হ্যাচারিচকে গোয়ালন্দ এগ্রিট্যুরিজম হিসেবে রুপ দিতে চলমান রয়েছে কাজ। এ কাজের দায়িত্বে থাকা সাংবাদিক কুদ্দুস আলম জানান, গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়রের ইচ্ছা শুরু ব্যবসা নয়। এর পাশাপাশি এলাকার মানুষকে বিনোদন দেওয়া। মানুষ যাতে একটু ভালো পরিবেশে হাটাচলা করতে পারে দুর থেকে মানুষ এসে একটু বিনোদন উপভোগ করতে পারে সেজন্যই গোয়ালন্দ ফিসারিচকে গোয়ালন্দ এগ্রি ট্যুরিজম হিসেবে রুপ দেওয়ার কাজ চলছে। এছাড়াও গোয়ালন্দ ফিসারিচে নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করায় এলাকার শতাধীক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে। নতুন এই পদ্ধতি সম্পর্কে ধারনা নিতে প্রতি দিনই দুর দুরান্ত থেকে আসছে দর্শনার্থী।

গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র ও গোয়ালন্দ ফিসারিচ এন্ড হ্যাচারিচের মালিক শেখ মোঃ নিজাম বলেন, রিয়াজউদ্দিন পাড়া এলাকার ২৫০ বিঘা জমিতে আমাদের হ্যাচারিচ ও পাশাপাশি ফিসারিচের ব্যবসা চলে আসছিলো। ফিসারিচ সেক্টরের পরিবর্তন আনতে আমি প্রথমে ১০০ শতাংশের একটি পুকুরে বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করি। পুকুর তৈরিতে একটু বেশি খরচ হলেও সেটি করতে হয় একবারই। তবে এই পদ্ধতিতে লাভ হওয়ার সম্ভবনা শতভাগ। সফলতা পাওয়ায় আমি এখন চারটি পুকুরে এই পদ্ধতি অবলম্বন করছি। এতে মেশিনের সাহায্যে পুকুরের তলদেশের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করছি। আবার পানির উপরে রেসওয়ে পদ্ধতির কারনে প্রতিনিয়ত অক্সিজেন তৈরি হচ্ছে যে কারনে তারাতারি মাছের বৃদ্ধি হচ্ছে। 

তিনি আরো বলেন, গোয়ালন্দ ফিসারিচকে আমি এগ্রি ট্যুরিজম সেন্টারে রুপ দিবো। সেইজন্য এখানে সাড়ে চারকিলোমিটার এলাকায় রাবার বট গাছ লাগানো হয়েছে। এখানে সড়কের দুই পাশে থাকবে দৃষ্টি নন্দন ফুলের গাছ। প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে বয়স্করা হাটার সুযোগ পাবে। থাকবে বসার ব্যাবস্থা ও ক্যান্টিন সিস্টেমও। এতে বয়স্করা একটু নির্মল বাতাস পাবে।