Opu Hasnat

আজ ২৬ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

বাতিল হচ্ছে এবারের পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা শিক্ষা

বাতিল হচ্ছে এবারের পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা

করোনার সংক্রমণ এড়াতে দেশের সব থেকে বড় দুই পাবলিক পরীক্ষা-প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট  জেএসসি) পরীক্ষা বাতিল করেছে সরকার।

শুধুমাত্র এ বছরের জন্য পঞ্চম শ্রেণির ও ইবতেদায়ির শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) এবং অষ্টম শ্রেণির জেএসসি পরীক্ষা বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিতে সার-সংক্ষেপ পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।

মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বলেন, শুধু এ বছর পরীক্ষা দু’টি বাতিলের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য সামারি (সার-সংক্ষেপ) পাঠাচ্ছি। তবে দুই সমাপনী বাতিলের সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

করোনার কারণে শুধু এ বছরের জন্য দুই সমাপনী বাতিল করা হচ্ছে বলেও জানান সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন।

মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সঙ্গে ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বৈঠকে এ বছর করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দু’টি বাতিলের প্রাথমিক আলোচনা হয়।

প্রতিবছর নভেম্বরে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনীতে প্রায় ৩০ লাখ এবং অষ্টমের দুই সমাপনীতে আরও ২০ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সব মিলিয়ে দেশের বিশাল সংখ্যক পরীক্ষার্থী এ দুই পরীক্ষায় অংশ নেয়।

করোনার কারনে বন্ধ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চার মাস পেরিয়ে গেলেও কবে খুলবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম। তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে অনলাইন ক্লাস নিয়ে বেশ তোড়জোড় শুরু হলেও তা খুব একটা ফলপ্রসু হচ্ছে না। আর এই সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে স্থগিত হয়ে যাওয়া পাবলিক পরীক্ষাগুলো। কবে এসব পরীক্ষা নিতে পারবে সরকার তার কোন সীদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে সামনে যেসব পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছ এসব পরীক্ষা নিয়ে করণীয় ঠিক করতে ইতোমধ্যেই দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছে সংশ্লিষ্টরা।

যার অংশ হিসেবে চলতি বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে বাতিল করা হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (ইইসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা। গত সপ্তাহে এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জানা গেছে, সমাপনী পরীক্ষা না হলেও এই দুই স্তরের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে। এই ফলের ওপর ভিত্তি করে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে মেধাবৃত্তি দেয়ার চিন্তা করছে সরকার। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব হলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে।

আর ডিসেম্বরের মধ্যে তা সম্ভব না হলে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে ‘অটো-পাস’ দিয়ে তুলে দেয়া হবে। এই উভয় ক্ষেত্রেই পাঠ্যবই বা সিলেবাসের যে অংশটুকু পড়ানো সম্ভব হবে না তার অত্যাবশ্যকীয় পাঠ পরের শ্রেণিতে দেয়া হবে। এজন্য জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ‘কারিকুলাম ম্যাপিং’ করে দেবে। এ লক্ষ্যেই আগামীকাল বুধবার এনসিটিবিতে কারিকুলাম বিশেষজ্ঞদের বৈঠক শুরু হচ্ছে।

একাধিক বিকল্পের কথা জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষার সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের আমরা ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাই না। তাই সব স্বাভাবিক হলেই তারা স্কুলে যাবে। যেহেতু কবে প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে তা আমরা জানি না। তাই একাধিক বিকল্প হাতে রেখে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সামনে কোন মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে সে সংক্রান্ত একটা খসড়া প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। মতামতকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এ নিয়ে এনসিটিবি কাজ করবে।