উচ্চাদালতের রায় সত্ত্বেও
নড়াইলে এলজিইডি বিভাগের ২৯ কর্মচারির চাকরি স্থায়ীকরণ হয়নি নড়াইল / 
নড়াইলে এলজিইডি বিভাগে কর্মরত ২৯ জন কর্মচারির চাকরি দীর্ঘ সময়েও রাজস্ব খাতে নেয়া হয়নি। দীর্ঘ ১০ থেকে ২২ বছর চাকরি করে আসছেন এসব কর্মচারি। উচ্চাদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও তাদের চাকুরী সরকারি করন করা হয়নি।
জানাগেছে, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট তাদের চাকুরি রাজস্বখাতে দেয়ার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এসব কর্মচারির চাকরি এখনও স্থায়ীকরণ না হওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে নাজুক অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,নড়াইল সহ দেশের বিভিন্ন জেলার এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে) বিভাগে মাষ্টার রোলে কর্মরত ৮৩৪ জন কর্মচারি চাকুরি স্থায়ীকরণের দাবিতে হাইকোর্টে একটি মামলা করেন। ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর কর্মচারিদের পক্ষ থেকে এ মামলা হয়। যার নম্বর ৯৮১২/১০। হাইকোর্ট ২০১২ সালের ১ অক্টোবর এ মামলার রায় প্রদান করেন। রায়ে শূন্যপদ ও চাকুরিতে সিনিয়রিটি অনুসরণ করে তাদেরকে রাজস্ব খাতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বলা হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে তৎকালীণ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুর রহমান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে একটি আপিল করেন। পরে ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি সুপ্রীম কোর্ট হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে রায় প্রদান করেন। আদালতের রায়ের পর যাদের চাকরির বয়স ২ থেকে ৫ বছর ছিল তাদের অনেকের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয়। কিন্তুু যাদের চাকরির বয়স ১০ থেকে ২২ বছর হয়েছে তাদের এখনও রাজস্ব খাতে নেয়া হয়নি।
নড়াইল এলজিইডি বিভাগের কম্পিউটর অপারেটর শেখ মোস্তাক আহম্মেদ জানান, সুপ্রীম কোর্টের রায়ে শূন্যপদে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমতি থাকলেও তা করা হচ্ছে না। তিনি আরোও জানান, দৈনিক মজুরি পান মাত্র ২৮৮ টাকা। বছরে তিনবার কিস্তিতে এ অর্থ পরিশোধ করা হয়। গত রমজান ও কোরবানী ঈদে কোনো টাকা পাননি। মা-বাবা, স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। অফিস সহকারি মুর্শিদা বেগম জানান, তিনি ১৪ বছর ধরে মাষ্টার রোলে চাকরি করছেন। মাসিক বেতন পান মাত্র ৪ হাজার ৯শত ৪৫ পয়সা। স্বামী সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে তার দিন কাটে। অফিস সহকারি কাজী সাইদুর রহমান বলেন, তিনি প্রতিদিন ১৮১ টাকা করে মজুরি পান । বন্ধের দিন কিছু পান না। প্রায় ১৭ বছর ধরে তিনি অভাব অনটনের সাথে যুদ্ধ করে চলেছেন। অফিস সহকারি জাকির হোসেন বলেন, ১৫ বছর ধরে মাষ্টার রোলে চাকরি করছেন। যে বেতন পান দিয়ে একজন মানুষের পকেট খরচও চলে না।
নড়াইল এলজিইডি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোতালেব বিশ্বাস জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিলে তা বাস্তবায়ন করা হবে। তবে দেশের বিভিন্ন জেলায় এলজিইডি বিভাগে পোষ্ট খালি হলে এসব কর্মচারিদের সিনিয়রিটি অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হতে পারে।