Opu Hasnat

আজ ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৪,

ফরিদপুরে অনুপ্রবেশকারী ও হাইব্রীডদের গ্রেফতারের দাবী ফরিদপুর

ফরিদপুরে অনুপ্রবেশকারী ও হাইব্রীডদের গ্রেফতারের দাবী

ফরিদপুরে স্বাভাবিক জীবনে আর চেতনার বাতি পুনঃরুজ্জীবিত করে আবারও দলকে সুসংগঠিত করার স্বপ্ন দেখে আগাচ্ছে আওয়ামীলীগ। শুদ্ধি অভিযান আর দল থেকে হাইব্রীড ও অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করে দৃঢ় ব্যবস্থা গ্রহণের কারনে সাধারন নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্বস্তির সুবাতাস বইছে। ফরিদপুরে যারা দলকে কলঙ্কিত করেছে, লুটপাট করেছে, বঞ্চিত করেছে প্রকৃত ত্যাগী নেতাকর্মীদের। তাদের বিচার হওয়া উচিত হওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে।

ফরিদপুরের সর্বত্র সোচ্চার হচ্ছে অনুপ্রবেশকারী ও হাইব্রীডদের গ্রেফতারের দাবী। হাতুরি বাহিনী, হেলমেট বাহিনীর তান্ডবে বিধ্বস্ত ফরিদপুর ভয় কাটিয়ে আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। গুটি কয়েক হাইব্রীড নেতা লুটপাটের অর্থ দেশের বাইরে পাচার করেছে। আত্মীয়-স্বজন ও দোষরদের গরু মোটাতাজাকরণের মতো হীরক রাজার দেশে ধন-সম্পদ প্রাচুর্যে বনে গেছে। আর সেই সাথে ত্যাগী নেতাকর্মীদের দ্বিধা-বিভক্তির ষড়যন্ত্রে রাজনীতি ছাড়া করেছে। দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের দায়ে রুবেল-বরকত গ্রেফতার হয়ে এখন বিচারের সম্মুখীন। আর তাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গ্রেফতার হয়েছেন লেভী, ফারহান, দাতাল বিল্লাল সহ ১৬ জন। তবে ফরিদপুরের সবচেয়ে ভংয়কর কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক এপিএস ফুয়াদ ও খন্দকার বাবর সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক হাইব্রীড অনুপ্রবেশকারী এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। তারা গা ঢাকা দিয়েছেন তাদের কাছেও রুবেল-বরকতের শতশত কোটি টাকা ছাড়াও নামে-বেনামে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। সেইসব সম্পদ বাজেয়াপ্তসহ তাদের গ্রেফতারের দাবী সোচ্চার হয়ে উঠেছে ফরিদপুরে। 

সরকারী দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে এই শুদ্ধি অভিযান শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ফরিদপুর আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। 

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক বিশেষ সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন গ্রেফতারকৃত নেতা এবং যাদের নাম দুর্নীতির তালিকায় এসেছে তাদের দায় দল নিবেনা বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় দলীয় ত্যাগী নেতারা দীর্ঘকাল পর সমাবেত হয়েছিলেন। সভায় বলা হয় আইন অনুযায়ী দুর্নীতিবাজদের যে বিচার হবে তাকে স্বাগত জানানো হবে। সভায় দুর্নীতি বিরোধী শুদ্ধি অভিযানের জন্য দলীয় সভানেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাধুবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে বক্তারা অনুপ্রবেশকারীদের দল থেকে দ্রæত বহিস্কারের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। 

আরো জানাযায়, ফরিদপুর আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড নেতা নাসিম পূর্বে ছাত্র শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিল এবং বর্তমানে ওর আপন মেঝ ভাই শামিম ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত আছে। উল্লেখ্য যে, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হাতকাটা শাহিন ক্রস ফায়ারে মৃত্যুবরণকারী নাসিমের আপন বড় ভাই। হেলমেট বাহিনীর প্রধান নাসিম, ফুয়াদের নির্দেশে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। 

জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মোল্যা বর্তমানে স্বঘোষিত শহর আওয়ামী লীগের সদস্য। আব্দুর রহমান ঝনক একসময়ে বিএনপি’র সক্রিয় কর্মী। বর্তমানে থানা যুবলীগের দাপুটে নেতা। খন্দকার শাহিন আহম্মেদ বর্তমান শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, পূর্বের রাজনৈতিক দল বিএনপি। আকবর হোসেন বর্তমানে শহর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, পূর্বের রাজনৈতিক দল বিএনপি। কাইয়ুম মিয়া বর্তমানে শহর আওয়ামী লীগের সদস্য, পূর্বের রাজনৈতিক দল বিএনপি। গোলাম নবী আজাদ বর্তমানে শহর আওয়ামী লীগের সদস্য, পূর্বের রাজনৈতিক দল বিএনপি। আব্দুল হালিম মিয়া বর্তমানে শহর আওয়ামী লীগের সদস্য, পূর্বের রাজনৈতিক দল বিএনপি। ফরিদপুর আওয়ামী লীগ-কে সময়ে, অসময়ে দ্বিধাবিভক্তির মাত্রায় নিয়ে গেছেন যারা তারা আওয়ামী লীগের বন্ধু নয়। ফরিদপুরে বর্তমানে দুর্নীতিবিরোধী যে অভিযান চলছে দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত অভিবাদন ও ধন্যবাদ জানিয়েছে সফল রাষ্ট্র নায়ক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। 

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান আওয়ামী লীগের ঘারে ভর করে যারা বিভিন্ন দল থেকে এসে দলের সুনাম নষ্ট করেছে তাদের বহিস্কার এখন সময়ের দাবী। শুধু দল থেকে বহিস্কারই নয় দুর্নীতি ও এপিএস ফুয়াদ, সিদ্দিক সহ যারা যারা সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত যাদের নাম এসেছে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। 

ফরিদপুরের জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা বিপুল ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরিদপুরের বিভিন্ন উন্নয়নে যেসকল কর্মকান্ড অনুমোদন করেছেন তার সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, এই লুটপাটে বরকত-রুবেলকে ব্যবহার করেছেন স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং তাঁর ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর ও তার এপিএস ফুয়াদ। এখন তাদের আটক করে সবার সম্পদের হিসাব নিলেই মূল খবর বেরিয়ে আসবে।