Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

মুন্সীগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙ্গন, ফুঁসে উঠেছে ধলেশ্বরী মুন্সিগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙ্গন, ফুঁসে উঠেছে ধলেশ্বরী

ধলেশ্বরী নদীতে পানি বেড়ে স্রোতের তীব্রতায় মুন্সীগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের মালিরপাথর এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মুক্তারপুর সেতু সংলগ্ন এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া স্থানে বাঁশও বালুর বস্তা দিয়ে শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু বৃহস্পতিবার (৬ আগষ্ট) ও শুক্রবার (৭ আগষ্ট) ধলেশ্বরী নদী ভাঙ্গনে রক্ষা বাঁধের বিশাল এলাকায় ধলেশ্বরীতে বিলীন হয়ে গেছে।

শুক্রবার (৭ আগষ্ট) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস ভাঙ্গন কবলিত শহর রক্ষা বাঁধের মালিরপাথর এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসিরা জানিয়েছেন, ব্লক সেটিং খুলে গেলেও সংস্কার না করায় চলতি বর্ষা মৌসুমে শহর রক্ষা বাঁধের মুক্তারপুর অংশে বড় ধরণের ফাটল দেখা দেয়। আর ধলেশ্বরীতে পানি বৃদ্ধিতে ভেঙ্গে থাকা স্থান দিয়ে পানি প্রবেশে মারাত্বক ঝুঁকিতে থাকা বাঁধটি বৃহস্পতিবার থেকে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় নির্মিত শহর রক্ষা বাঁধটি দীর্ঘ বছর ধরে সংস্কার না করায় জেলা শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ, নয়াগাঁও, মিরেশ্বর, বাগবাড়ী, মুক্তারপুর সেতু এলাকা, মালিরপাথর ও বিনোদপুর পর্যন্ত একাধিক স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়। বাধেঁর ব্লক সেটিং বিনষ্ট এবং গত বছর (২০১৯) মালিরপাথর এলাকায় দু’দফা ভাঙ্গনে মারাত্বক হুমকির মুখে পড়ে এ বাঁধটি।

এলাকাবাসীরা আরো অভিযোগ করে জানান, বছরের পর বছর ধরে বাধেঁর বিভিন্ন স্থানে ফাটল, বাধেঁর স্লাব ও ব্লক সেটিং খুলে খানাখন্দকের সৃষ্টি হওয়া এবং বাধেঁর লিকেজ দিয়ে পানি ঢুকে বাধঁটিকে ঝুকিপূর্ন হয়ে উঠে।

এছাড়া বাঁধের একাধিক স্থানে ক্ষমতাসিন দলের স্থানীয় বালুদস্যুরা আনলোড ড্রেজারের পাইপ স্থাপন করে জমি ভরাট ও বালুর স্তুুপ তৈরী করে বালু ব্যবসা করায় বাঁধটি আরও ঝুঁকিপূর্ন করে তুলে।

২০১৬ সালের জুলাই মাসে মালিরপাথর এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধে আকস্মিক ভাঙ্গনে ব্লকসহ বাধেঁর বিরাট অংশ ধলেশ্বরী নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ওই সময় কোন রকমে মেরামত করলেও স্থায়ীভাবে কোন ব্যবস্থা নেয়নি মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে মালিরপাথর, মুক্তারপুরের বাঘবাড়ী, মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাট এলাকাসহ একাধিক স্থানে বাধেঁ ফাটলসহ বছরের পর বছর ধরে সেটিং বিনষ্ট হয়ে বাধেঁর ব্লক গুলো এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে। কোথাও খুলে যাওয়া ব্লকও নেই। 

অন্যদিকে গত বছরের (২০১৯) ২৬ জুলাই শহরের মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটের অদূরে হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার লোকজন বাঁধ কেটে নালা তৈরী করায় আকস্মিক ভাঙ্গন দেখা দেয়।

একাধিক শহরবাসীরা জানান, দীর্ঘ বছর ধরে সংষ্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল সৃষ্টিসহ খুলে গেছে বাধেঁর ব্লক গুলো।

এ শহর রক্ষা বাধেঁর উপর নয়াগাওঁ চানঁতারা মসজিদ এলাকা, বাগবাড়ী, মুক্তারপুর সেতুর পিলার ঘেষেঁ এবং মালিরপাথর এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে আনলোড ড্রেজারের পাইপ বসিয়ে জমি ভরাট ও বালুর স্তুুপ তৈরীর পর ব্যবসা করায় শহর রক্ষা বাধঁটিকে আরও ঝুকিপূর্ন করে তুলে। এ অবস্থায় নদী তীরবর্তী এলাকাবাসাীর মধ্যে ভাঙ্গনের আশঙ্কা দিয়েছে। ফলে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে তীরবর্তী হাজার হাজার পরিবার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড মুন্সীগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহি প্রকৌশলী টি এম রাশিদুল কবীর জানান, করোনা ভাইরাসের কারনে শহর রক্ষা বাঁধটি সংস্কার কাজ পিছিয়ে যায়। বর্তমানে প্রায় ৯ হাজার ব্লক তৈরি করা হয়েছে। ধলেশ্বরীর পানি কমলে সংস্কারের কাজ শুরু করবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।