Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা মোকাবেলায় সবাই একযোগে মাঠে নেমেছে : কুজেন্দ্র লাল এমপি খাগড়াছড়ি

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা মোকাবেলায় সবাই একযোগে মাঠে নেমেছে : কুজেন্দ্র লাল এমপি

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা মোকাবেলায় সবাই একযোগ মাঠে নেমেছে। চীন থেকে শুরু হওয়া করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে কর্মহীন গৃহবন্দি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ইউএনডিপির দাতা সংস্থা পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের এসআইডি-সিএইচটি-ইউএনডিপি প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায় ২৩হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তায় এমন মন্তব্য করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। করোনা ভাইরাসকে মোকাবেলা করেই বাঁচতে হবে বলেও মন্তব্য করেনন তিনি। 

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে গোমতি ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ইউএনডিপির দাতা সংস্থা ডানিডা ও ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের এসআইডি-সিএইচটি-ইউএনডিপি প্রকল্পের আওতায় পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলাধীন গোমতি ইউনিয়নের কর্মহীন ২হাজার ৫শ ৯৯পরিবারের মাঝে সলিডারিটি প্যাকেজ বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

গোমতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ফারুক হোসেন লিটন’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাটিরাঙা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রফিকুল ইসলাম, মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য নির্মলেন্দু চৌধুরী ও মংসেপ্রু চৌধুরী অপু। এসআইডি-সিএইচটি-ইউএনডিপির জেলা প্রতিনিধি উশিংমং চৌধুরী সরিডারিটি প্যাক বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথি এসআইডি-সিএইচটিডিএফ কোবিড-১৯ মহামারী বিবেচনা করে খাগড়াছড়ি জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ২৩হাজার দুর্বল পরিবারকে খাদ্য ও বীজ সহায়তা করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জনগণকে স্বাস্থ্য বিধি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবং করোনার ভাইরাসের মুখোমুখি হওয়ার জন্য মুখোশ ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, অধিক খাদ্য, ফসল এবং শাকসব্জী উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রতি ইঞ্চি পতিত জমিতে চাষাবাদ করার আহবান জানান।

সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক ব্যবহারের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়ে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামুলক করে সরকার আইন করেছে। মাস্ক ব্যবহার করে করোনা প্রতিরোধ করতে হবে। করোনা একজন থেকে বহুজনে ছড়ায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, আসুন আমরা সবাই মাস্ক ব্যবহার করে নিজে বাঁচি আর অন্যকেও বাঁচাই। মাস্কের পাশাপাশি বারবার সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ারও আহবান জানান তিনি।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে মাটিরাঙা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম হুমায়ুন মোরশেদ খান, মাটিরাঙা পৌরসভার মেয়র মো: শামছুল হক, মাটিরাঙা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সুবাস চাকমা, মাটিরাঙা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা, বড়নাল ইউপি চেয়ারম্যান মো: আলী আকবর, বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: নজরুল ইসলাম ও গোমতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ২৫৯৯পরিবারের মাঝে সংহতি প্যাকেজ বিতরণ করেছেন অতিথিরা।

এদিকে ৯টি উপজেলাতে মহামারী করোনা ভাইরাসে কারণে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের পাশে খাদ্য ও বীজ সহায়তা দিচ্ছে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি)। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক ম›ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন স্ট্রেনদেনিং ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট ইন চিটাগং হিল ট্রাক্টস (এসআইডি-সিএইচটি) প্রকল্পের আওতায় ইউএনডিপি দাতা সংস্থা ডানিডা ও ইউএসএআইডি এর আর্থিক সহযোগিতায় এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

এসআইডি-সিএইচটি ইউএনডিপি খাগড়াছড়ি জেলা ম্যানেজার প্রিয়তর চাকমা জানান পর্যায়ক্রমে তারা দিঘীনালা উপজেলায়-৩০২৪পরিবার, মাটিরাঙ্গায়-২৫৯৯পরিবার, লক্ষ্মছড়ি উপজেলায়-১৭৬১পরিবার, রামগড় উপজেলায়-১৫৯৬পরিবার, গুইমারা উপজেলায়-২৬৩৬পরিবার, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায়-৩৪৫২পরিবার, মহালছড়ি উপজেলায়-৩৪০৫পরিবার, পানছড়ি উপজেলায়-২৯৬২পরিবার এবং মানিকছড়ি উপজেলায়-১৫৬৫ ঝুঁকিপূর্ন পরিবারকে আগামী ১৮ই আগষ্ট ২০২০ইং তারিখের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

তিনি আরো জানান, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোর জন্য ১০প্রকারের বিভিন্ন দ্রব্যাদি বিতরণ করা হয় এবং বিতরণকৃত প্রতিটি প্যাকের মধ্যে রয়েছে: চাল-১৫কেজি, ডাল-২কেজি, লবণ-১কেজি, সয়াবিন তেল-১লিটার, পিয়াজ-১কেজি, আলু-৫কেজি, সাবান-২টি, সবজি বীজ-৭প্যাকেট (করলা বীজ – ১০গ্রাম, ঢ়েড়স বীজ ১০গ্রাম, মিষ্টি কুমড়া বীজ ১০গ্রাম, শসা বীজ ১০গ্রাম, লাউ বীজ ১০গ্রাম, পুঁইশাক বীজ ১০গ্রাম, চালকুমড়া বীজ ১০গ্রাম করে), মাস্ক-৪পিস ও সচেতনতাবৃদ্ধির লক্ষ্যে করোনা বিষয়ক ১টি ও বন্যপ্রাণী ও বন সংরক্ষণ বিষয়ক ১টি করে পোস্টার দেওয়া হচ্ছে।

করোনা ভাইরাসজনিত মহামারীর কারণে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ এখন আর্থিক সংকটে পড়েছেন। বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য অঞ্চলের মানুষদের বাঁচানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) সরকার জনগণকে কোবিড-১৯-এর মুখোমুখি হতে সহায়তা করে যাচ্ছে।