Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

ঝালকাঠির মসজিদে মসজিদে সাবান-গামছা দিল ‘স্বপ্নপূরণ সমাজ কল্যাণ সংস্থা’ ঝালকাঠি

ঝালকাঠির মসজিদে মসজিদে সাবান-গামছা দিল ‘স্বপ্নপূরণ সমাজ কল্যাণ সংস্থা’

ঝালকাঠি শহর ও শহরতলী এলাকায় করোনা দুর্যোগে কর্মহীন দুঃস্থ পরিবারের কাছে ৫টাকায় চাল, ডাল, আলু, তেলসহ ৮ ধরনের খাদ্যপণ্য বিক্রয়ের পরে এবার মসজিদে মসজিদে সাবান ও গামছা দেয়া হয়েছে। শুধু মসজিদেই না পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ব্যক্তি উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত শতাধিক বেসিনেও সাবান এবং  গামছা দেয়া হয়েছে। ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি (বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন) স্বপ্নপূরণ সমাজ কল্যাণ সংস্থার (এসএসএস) নিজস্ব অর্থায়নে এসব কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। এছাড়াও জনসচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্য সতর্কতামূলক মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও বিনামূল্যে মাস্ক প্রদান করেছে সংস্থার কর্মকর্তাগণ।  

জানাগেছে, বৈশ্বিক মহামারী কোভিড১৯ সারা বিশ্বে যখন আতংকের নাম, ঠিক তখন বাংলাদেশের  সাধারণ মানুষ এর  জীবনযাত্রা অত্যন্ত দূর্বিষহ, সাধারণ মানুষ জানে না এই কোভিড১৯ কি? কিভাবে এর থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে? ঠিক সেই সময়ে এগিয়ে আসে দেশের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্চাসেবী সংগঠন। বাংলাদেশ সরকার কে নানা ভাবে সহোযোগিতা করে যাচ্ছে তারা। গণসচেতনতা থেকে শুরু করে খাদ্য সহায়তা, প্রত্যেক কাজে অংশ গ্রহন করছে এসব সংগঠন। সন্তান যখন করোনা আক্রান্ত মৃত বাবা লাশ ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেই সময়ে কোন কোন সংগঠন কাধে তুলে নিচ্ছে সেই পিতার লাশ, এভাবেই জীবনের ঝুকি নিয়ে স্বেচ্চাসেবকগণ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। 

বাংলাদেশের দক্ষিণের একটি ছোট জেলা শহর ঝালকাঠি। এ জেলায় ৪টি উপজেলা ও ২টি পৌরসভা রয়েছে। ঝালকাঠির সদর উপজেলায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও মানবিক কর্মীরা নিরলস ভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে জনসাধারণকে। এর মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্নপূরণ সমাজকল্যাণ সংস্থা (এসএসএস) অন্যতম। 

সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এইচএম রিয়াজ খান অশ্রু জানান,  বাংলাদেশ প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হবার পর সংগঠনের নির্বাহী কমিটির একটি সভায় ১৯শে মার্চ থেকে এ দুর্যোগকালিন সময়ে গণসচেতনতা মূলক কাজের সিদ্বান্ত গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, বিনামূল্যে মাস্ক প্রদানসহ অঘোষিত লকডাউন এ কর্মহীন ও দুঃস্থ ৫১০টি পরিবারে মধ্যে ৫টাকার বিনিময়ে চাল, ডাল. আলু, তেল, পিয়াজসহ ৮ধরনের খাদ্য পণ্য দিয়ে সহায়তা প্রদান করে। এ কার্যক্রম ঝালকাঠির সর্বমহলে প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত শহরের মসজিদগুলোর ওজুখানায় এবং পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ব্যক্তি উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত শতাধিক বেসিনেও সাবান এবং  গামছা দেয়া হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। জনকল্যাণমূলক কাজকে আরো গতিশীল করতে এলাকার স্বহৃদয়বান ব্যক্তি এ মহতি কাজে সহায়তা প্রদান করে আসছেন। 

রিয়াজ খান অশ্রু আরো জানান, স্বপ্নপূরণ সমাজকল্যাণ সংস্থা (এসএসএস)  মানবতার সেবার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই থেকেই স্থানীয় পিছিয়ে পরা মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করছি। সাধ্যমত দরিদ্র এবং অসহায় মানুষে শিক্ষা, চিকিৎসার জন্য সহায়তা প্রদান, প্রতি বছর শীত মৌসূমে দুঃস্থ শীতার্তদের শীতবস্ত্র, প্রত্যেক ঈদে এতিম অসহায় শিক্ষার্থীদের ঈদ বস্ত্র প্রদান করা হচ্ছে। করোনা দুর্যোগে ইতিমধ্যে প্রায় ৫হাজার জনসচেতনতা মূলক লিফলেট, ২হাজার ৫শ সাবান, ১হাজার ৬শ মাস্ক এবং ৫১০টি পরিবারে ৪লক্ষ ২৯হাজার ৯৬০টাকা র খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। 

এসব মহতি কাজের অংশিদার ডাঃ সুপ্তা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান, আমিনুল ইসলাম তালুকদার লিটন, ঝালকাঠির সন্তান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শরিয়তপুর) তানবীর শাওন, স্বাস্থ্যকর্মকর্তা আবু সোহেলসহ অনেক ভাল মনের মানুষদের প্রতি শ্রদ্বা ও ভালবাসা জ্ঞাপন করে মানবিক কাজে সহযোগিতাকারীদের শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের কর্মকর্তাবৃন্দ। সংগঠন এর কর্মীরা শহরের বিভিন্ন মসজিদে ওযু খানায় সাবান বিতরন করায় ব্যস্ত সময় পার করছে বলে জানিয়েছেন সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক সুমন সমাদ্দার।