ফরিদপুরে আলোচিত দুই ভাইয়ের সম্পত্তি জব্দ শুরু করেছে সিআইডি ফরিদপুর / 
ফরিদপুর শহর আওয়ামীলীগের সদ্য বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ছোট ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের সব ব্যাংক হিসাব সহ স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি জব্দ শুরু করেছে সিআইডি। এ ঘটনায় ফরিদপুরের সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজমান আতংক অনেকটা দূর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিআইডি সূত্রে জানাগেছে, ফরিদপুর শহর আওয়ামীলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে গচ্ছিত টাকসহ বিষয়াদি সম্পত্তি জব্দের কাজ শুরু করেছেন তারা। সিআইডি সূত্রে আরো জানাগেছে, গ্রেফতারকৃত বরকত-রুবেলে দেশের সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন ব্যাংকে একাধিক একাউন্টে শতশত কোটি টাকা মজুদ রয়েছে। বরকতের ক্ষেত্রে বরকত, বরকত চৌধুরী, বরকত ইবনে সালাম, চৌধুরী ইবনে সালাম বরকত, মের্সাস বরকত এন্টার প্রাইজ, বরকত ডেইরী ফার্ম ইত্যাদি, রুবেলেরও একই ধরনের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট রয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ফরিদপুরে এসে গ্রেফতারকৃত দুই ভায়ের আরো তদন্তের জন্য আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন। রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে ঢাকা নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
তারা আরো জানান, তাদের আয়ের উৎসে যারা সহযোগীতা করেছে তাদের কেউই ছাড় পাবে না। সকলকেই পর্যায়ক্রমে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া তারা ইতিমধ্যে বরকত-রুবেলের বাড়ি, পরিবহন, পেট্টল পাম্প, ভাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জব্দ করেছে। ব্যাংক এ্যাকাউন্টসহ বাকি যে সব সম্পত্তি রয়েছে সেগুলো জব্দের কাজ চলছে।
সিআইডির ঢাকা মেট্টো পশ্চিম বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক এসএম মিরাজ আল মামুন জানান, আওয়ামীলীগের বিতর্কিত এই দুই ভাই দলে অনুপ্রবেশ করে টেন্ডারবাজী সহ নানা অপকর্ম করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করে। এ ব্যাপারে ঢাকার কাফরুল থানায় গত ২৬ জুন ওই দুই ভায়ের নামে দুই হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে কামিয়ে বিশাল ভূসম্পত্তির পাশাপাশি বিদেশে টাকা পাচার করেছে মর্মে মানি লন্ডারিং এর মামলা দায়ের করা হয়। গত ২৮ জুন তিনি অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ফরিদপুরে অনুসন্ধান এসে বিষয়টির সত্যতা পান।
এদিকে গত ২৭ মে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড, সুবল সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনায় বরকত-রুবেলের বদরপুরস্থ বাড়ি থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৭জুন রাতে। এসময় তাদের কাছে থাকা অস্ত্র ও গুলি, বিদেশী মদ, ইয়াবা, ১২’শ বস্তা সরকারী চাল, বিদেশী টাকা জব্দ করা হয়। পরবর্তিতে একে একে অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদকের মামলায় ৭ দফায় ২৩ দিনের রিমান্ড শেষে বর্তমানে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয় তাদের দুই ভাইকে।
এদিকে সিআইডির কর্মকান্ডে জেলার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এতদিনে মানুষের মধ্যে যে উৎকন্ঠা আর ধুয়াশা ছিল তা সিআইডির কর্মকান্ডের মাধ্যমে পরিস্কার হয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের দুই ভাইয়ের ভীতিতে থাকা জেলার মানুষ আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।