পীরগঞ্জের কাজী নজরুল ইসলাম সড়কটির বেহাল দশা ঠাকুরগাঁও / 
মোঃ আনোয়ার হোসেন, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পৌরশহরের অন্যতম ব্যস্ততম কাজী নজরুল ইসলাম পাকা সড়ক (টিএন্ডটি সড়ক)। এরই মধ্যে সড়কটির কার্পেটিং উঠে খাল খন্দে ভরে গিয়ে কাঁদা পানিতে বেহাল হয়ে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ফলে ওই সড়ক দিয়ে মানুষ চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে ধরণা দিয়ে প্রতিকার না পেয়ে গত বছর ঐ সড়কে ধানের চারা রোপন করে এর প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা।
তার পরেও কাজ হয়নি। দেখার যেন কেউ নেই! তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন, সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। সেজন্য তারা উন্নয়ন কাজ করতে পারছেন না আর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছেন, সড়কটি তারা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
কাজেই সড়কটির মেরামত কিংবা পুনঃসংস্কারের দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের। পৌরসভা এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের একে অপরের উপর দায় চাপানোর ফলে কয়েক বছর ধরে কোন পক্ষই সড়কটি সংস্কার করছে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমান সময়ে সড়কের পশ্চিম পার্শ্ব দিয়ে ড্রেন নির্মান করা হচ্ছে।
ড্রেনের মাটি খুঁড়ে সড়কের পার্শে¦ রাখায় বর্ষার পানি বের হতে পারছে না। এতে সড়কটিতে জলাবদ্ধতা স্থায়ী রুপ নিয়েছে। শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক এটি। এ সড়কে দোকান পাট ও জন বসতি ছাড়াও পশু হাসপাতাল, পল্লী বিদ্যুত অফিস, ব্র্যাক অফিস, মহিলা কলেজ, আরএম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেন্টমেথিউজ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ অবস্থিত।
এ ছাড়াও দৌলতপুর, জাবরহাট, বৈরচুনা এবং সেনগাঁও ইউনিয়ন বাসীর উপজেলা সদরে প্রবেশের একমাত্র সড়ক এটি। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। অথচ শহরের বটতলা থেকে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার করা হয়নি দীর্ঘদিন। কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে।
বর্ষায় পানি জমে গর্তগুলো বড় বড় আকার ধারণ করছে। এলাকাবাসীর দাবীর মুখে গত বছর সড়কের কার্পেটিং তুলে মাটি মিশ্রিত খোয়া ফেলে পৌর কর্তৃপক্ষ। এর কয়েকদিন পরেই বৃষ্টির পানিতে মাটি কাঁদায় পরিণত হয়। এতে দুর্ভোগ কমার বদলে আরো বেড়ে যায়।
গত বছর ধানের চারা রোপন করে এর প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। তার পরেও কাজ হচ্ছে না। দেলোয়ার হোসেন দুলালসহ স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে সড়কটি সংস্কার করার দাবি জানালে কর্তপক্ষ বলছেন, সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। তারাই এটা ঠিক করবে আর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছেন, তারা সড়কটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করেছেন।
এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। এ বিষয়ে পৌরসভার উপ-সহকারি প্রকৌশলী শাহজাহান বলেন, সড়কটি পৌরসভার মধ্যে হলেও এটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। কাজেই সেখানে আমাদের কাজ করা সুযোগ নেই।
উপজেলা প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন বলেন, গত বছরেই তারা সড়কটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করেছেন। কাজেই তারাই সংস্কার করবেন। যেহেতু পৌরসভা সড়কের উভয় ধারের দোকানপাট এবং বাসাবাড়ির কর আদায় করেন, সেহেতু তাদের উচিত সড়কটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা। অপরদিকে রাস্তা সংস্কারের দাবীতে ৪ জুন শনিবার সকালে বটতলায় ঘন্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ওই এলাকার সর্বস্তরের জনতা।