Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

ফরিদপুরের আওয়ামীলীগে চাঙ্গাভাব ফরিদপুর

ফরিদপুরের আওয়ামীলীগে চাঙ্গাভাব

ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের দলের দূর্দিনের পরীক্ষিত নেতারা আবারো দলকে গোছানোর কাজে হাত দিয়েছেন। দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিগত দশ বছর এই সব নেতারা দল থেকে বিভিন্ন কারনে সড়ে গিয়ে ছিলেন অভিমানে। ঝিমিয়ে পড়া ফরিদপুর আওয়ামীলীগকে দলের হাইকমান্ড গোছানোর কাজে হাত দিলে তারা আবার ফিরে এসে কাজ শুরু করেছেন। করোনা পরিস্থিতির কারনে বড় ধরনের সভা সমাবেশ না করতে পারলেও তারা এরই ভিতর নিজেরা ছোট ছোট করে বসে তাদের নীতি নির্ধারন ঠিক করেছেন।   

আওয়ামীলীগের একটি সূত্র জানায়, জেলার নেতারা ও কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ দল আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও নির্যাতন, হামলা-মামলার স্বীকার হয়েছেন অনেকে। অনেক নেতাকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে অবরুদ্ধ করে রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা হয়। অপেক্ষায় ছিলেন একদিন সময় আসবে। সেই পরিবেশ তৈরি হওয়ায় এখন আবার সেই সকল দূদিনের আওয়ামীলীগ নেতারা রাজনীতিতে চাঙ্গা হয়েছেন। তারা এখন দলকে অনুপ্রবেশ মুক্ত করে সামনের দিকে টেনে নিয়ে যেতে চান। বিগত দশ বছরে যে ভুল সেই ভুল তারা না করে দলকে সব কিছুর উর্দ্ধে নিয়ে কাজ করতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। 

এবিষয়ে ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, আমাদের দলের আশা ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল দলের সভানেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন দলকে অনুপ্রবেশ মুক্ত করে দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা হবে। সেই লক্ষে আমরা কাজ করছি। এরই মাঝে জেলার নেতারা বসে করনীয় নির্ধারনে কাজ শুরু করেছি ছোট্ট ছোট্ট পরিসরে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারনে কোন বড় ধরনের লোক সমাগম আমরা করতে পারছি না। তবে সামনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে সে ধরনের সম্ভবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।   

জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নির্বাহী সদস্য বিপুল ঘোষ বলেন, আজ আমাদের প্রানের নেত্রী মানবতার জননী দল থেকে লুটেরা হাইব্রীড অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছেন জেলায়। আমরা এই দিনটির জন্যই এতো দিন অপেক্ষায় ছিলাম। আমি এর জন্য আমাদের প্রানের নেত্রী মানবতার জননী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে তেমনি ফরিদপুর আবার জেগে উঠবে মূল আওয়ামীলীদের গতি ধারায়। আর এই ক্ষেত্রে আমরা সকলে এক যোগে কাজ করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আর এই দায়িত্ব পালনে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সেই লক্ষে আমরা কাজ শুরু করেছি। তিনি আরো জানান করোনা পরিস্থিতির কারনে এই মহূর্তে বড় ধরনের লোক সমাগম আমরা করতে পারছি না তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে সে ধরনের সম্ভবনা রয়েছে। 

ফরিদপুরের আওয়ামীলীগকে পূন:র্গঠন করে চাঙ্গা করার জন্য এবং অনুপ্রবেশকারীদের দল থেকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করায় মাঠ পর্যায়ের দলের নেতারা দলের সভানেত্রীর প্রতি কৃতঙ্গতা জানিয়েছেন। একই সাথে সুবিধাভোগীরা যাতে দলে আর কোনোদিনও প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যাপারে দলের হাইকমান্ড সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছে ফরিদপুরের ত্যাগী ও পরিক্ষিত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা।

উল্লেখ্য, গত ১৬ই মে রাতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আ্যড. সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও মারপিটের ঘটনা ঘটায় হেলমেট ও হাতুরি বাহিনি সহ হাইব্রিড নেতারা। বিষয়টি নজরে আসে আওয়ামীলীগের হাইকমান্ডের। এসময় দলের হাইকমান্ড নির্দেশ দেন আ্যড. সুবল চন্দ্র সাহাকে মামলা করার জন্য। তিনি বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় অঙ্গাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঢাকা থেকে নির্দেশ প্রদান করা হয় দ্রুত এমন ঘটনার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে। এরপর গত ৭ জুন রাতে আটক করা হয় এ ঘটনায় জরিত থাকা নয় জনকে। এরপর একে একে গ্রেফতার করা হয় আরো বেশ কয়েকজনকে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন পুলিশ প্রশাসন। এদিকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে শহর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকসহ আরো একজনকে। বাকি অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে দলীয় সূত্রে জানাগেছে।