Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে ‘মাছ’ স্বাস্থ্যসেবা

করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে ‘মাছ’

শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে শুধু করোনাই নয়, সহজে যেকোন ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। তাই করোনা প্রতিরোধে খেতে হবে এমন কিছু খাবার যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। যেহেতু এই ভাইরাসের এখনও কোনো টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি, তা প্রতিরোধে এখন আপনার আমার একটু সচেতনতাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।

আমাদের শরীর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতি মুহূর্তেই লড়াই করতে থাকে। তবে শরীর যদি ভেতর থেকে শক্তি না পায়, তখন সে লড়াই চালিয়ে যেতে পারে না। আর প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলেই তখন ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের আক্রমণ সহজ হয়ে যায়।

মাছের তেলে আছে পলি আনস্যাচুরেটেড এসেনশিয়াল ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। প্রচলিত কথায় ওমেগা থ্রি’জ৷ তিন ধরনের ওমেগা থ্রি হয়, এএলএ (আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড), ডিএইচএ (ডোকোসাহেক্সেনোয়িক অ্যাসিড) ও ইপিএ (ইকোস্যাপেনটেনিনোইক অ্যাসিড)। সামুদ্রিক মাছে, পুকুর ও নদীর কিছু তৈলাক্ত মাছে ডিএইচএ এবং ইপিএ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। ফলে নিয়মিত খেলে হার্টও ভালো থাকে। মাছে ভালো জাতের প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে থাকে। ফলে এমন ধরনের খেলে পেট দীর্ঘ সময় ভরা থাকে। এটি রক্তে চর্বির মাত্রা কমিয়ে ইসকিমিক হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতেও সে কাজ করে। ওমেগা থ্রি-র প্রভাবে মন ভালো থাকে। মানসিক চাপ-উদ্বেগ কম হয়। এমনকি, ডিপ্রেশনের রোগী যদি ওষুধের সঙ্গে পর্যাপ্ত মাছ খান, রোগ সারে দ্রুত। আর স্ট্রেস-টেনশন-ডিপ্রেসন কম থাকলে হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।

তৈলাক্ত মাছ, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছকে বলে ব্রেন ফুড। সপ্তাহে মাত্র এক দিন খেলেই স্মৃতিশক্তি, নতুন কিছু শেখা ও চিন্তা-ভাবনার দক্ষতা বাড়ে। বিভিন্ন স্টাডি থেকে জানা গেছে, যারা নিয়মিত বেক্ড‌ বা ব্রয়েল্ড মাছ খান, তাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে, ফলে বয়সের সঙ্গে অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

সংক্রমণ প্রতিরোধে আরো কিছু খাবার : দুধ বা দুধজাতীয় খাবার যেমন-টকদই ও ছানা সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, লাল চাল, লাল আটা, মিষ্টি আলু, মুরগি ও ডিম, প্রচুর রঙিন শাকসবজি খাওয়া দরকার। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল বা টক জাতীয় ফল। যেমন- লেবু, কমলা, আমলকী, মালটা, পেয়ারা, আনারস, বেদানা ইত্যাদি। মৌসুমি সবজি, মাশরুম এবং আদাসহ চিকেন ক্লিয়ার স্যুপ, আদা, ব্ল্যাক ও জিঞ্জার-টি। আমাদের প্রতিদিনের ডায়েটে এন্টি-ভাইরাল খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত করা খুবই জরুরি।

যেসব খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে : ঘরে বসে বাইরের অর্ডারি ফুড একদম বাদ দিতে হবে। অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করা জরুরি। বাইরের হোটেল বা রাস্তার খাবার, ধূম ও মদপান বাদ দিতে হবে।

খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার দিকে। প্রতিদিনের খাবারে যদি আমরা ৬০%-৬৫% অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারগুলো (ওপরে উল্লেখিত) রাখি তবেই আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমরা সক্ষম হবো। তাই অসুস্থ হওয়ার আগে প্রতিরোধ খুবই জরুরি।

লেখক : মোঃ ইব্রাহীম খলিল বাবু, 
সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ফিশ ফার্মার্স এসোসিয়েশন।

এই বিভাগের অন্যান্য খবর