Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

রাজাপুরে ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে বাল্য বিয়ে! ঝালকাঠি

রাজাপুরে ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে বাল্য বিয়ে!

প্রেম, ভালোবাসা মাঝে মাঝে সত্যিই অন্ধ করে দেয় মানুষকে। তাইতো প্রেম মানে না কোন বয়স, কোন নিয়ম। সমাজ যতই বাঁকা চোখে তাকাক, যতই কটূ কথা শোনাক না কেন প্রেমের ক্ষেত্রে বয়স কিন্তু কোনও বাধা মানে না। তাইতো রাজাপুরে রবিবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় স্থানীয় চৌকিদারের ঘরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির হোসেনের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হলো বাল্যবিবাহ। 

ঝালকাঠীর রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামে খাইরুল বাশারের সাথে মরিয়মের বাল্য বিয়ে সম্পন্ন হয়। বাল্য বিয়ের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে জনমনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৮ জুন শিশু মরিয়ম প্রেমের জালে ফেঁসে খাইরুল বাশারের বাড়িতে আসে। নানা ঘটনার পর রোববার সন্ধ্যায় এ বাল্য বিয়ে হলো।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামের মৃত আতাহার মৃধার পুত্র খাইরুল বাশারের বাড়িতে প্রেমের টানে পার্শবর্তী মঠবাড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বাদুরতলা গ্রামের জামাল প্যাদার মেয়ে মরিয়ম হাজির হয়। মেয়ের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় ১৯ জুন খাইরুলের পরিবারের লোকজন স্থানীয় বারেক এর ঘরে জিম্মায় রাখে। বারেক পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে অনত্র মরিয়মকে রাখে। প্রেম কাহিনী এলাকা থেকে ছড়িয়ে পরে আরেক এলাকায়। ২১ জুন চারজন চৌকিদার মরিয়মকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় বড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদে।

সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা বৈঠক চলে। কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। বড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহে আলম মন্টু জানালেন, মেয়ের বয়স কম তাই কোন সিদ্ধান্ত দেই নাই। কিন্তু পরে কি হয়েছে সেটা আমার জানা নেই।

চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত না দেয়ায় বড়ইয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বর মনিরের উপস্থিতিতে স্থানীয় চৌকিদার আনোয়ারের ঘরে খাইরুল বাশারের সাথে শিশু মরিয়মের বিয়ে হয়। বিয়ে পড়ান স্থানীয় মৌলভী হযরত আলী। বিয়ের পরে মরিয়মকে খাইরুল বাশারের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। 

স্থানীয় সচেতন লোকজন বিষয়টি ঝালকাঠী জেলা ও  রাজাপুর উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনির মেম্বর ও আনোয়ার চৌকিদারকে বাল্য বিয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা ইউএনওকে বলে বিয়ে হয়নি এমন অসত্য মিথ্যা তথ্য দেয় ফলে ইউএনও কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ব্যাপারটি জানাজানি হলে বেড়িয়ে আসে আসল সত্য ঘটনা। 

স্থানীয় লোকজন বলেন, এটি সম্পূর্ণরুপে আইন বর্হিভূত। এই বাল্য বিবাহ  রেজিষ্ট্রেশনের জন্য কোন কাজী রাজি হয়নি। অসত্য তথ্য দিয়ে ইউএনওর সাথে মেম্বর ও চৌকিদার চিট করেছে। 

খাইরুল বাশারের চাচাচ ভাই লোকমান মৃধা জানান, মরিয়মের বয়স ১৮ বছরের নিচে তাই আমরা নিষেধ করেছি বিয়ে না করার জন্য। মেয়েকে তার পরিবারে ফেরৎ দেয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলাম কিন্তু আমি সক্ষম হইনি। তারা আইন মানেনা। আমার কি করার আছে।

এ ব্যাপারে আনোয়ার চৌকিদার সাংবাদিকদের বলেন মেয়ে আমাদের ঘরে ছিল। নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে বিয়ে হয়েছে। আর বিয়ের সময় স্থানীয় মেম্বর মনির উপস্থিত ছিলো। 

মনির মেম্বর বিয়ের ব্যাপারে সাংবাদিকদের বলেন, আনোয়ার চৌকিদার এফিডেভিটে সহায়তা করেছে। বিয়ের সময় আমিসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলো।